শরীরী চ্যালেঞ্জে বাজিমাত ৭৩-এর প্রৌঢ়ের, ‘লাফদড়ি দাদু’-কে কুর্নিশ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর

শরীরী চ্যালেঞ্জে বাজিমাত ৭৩-এর প্রৌঢ়ের, ‘লাফদড়ি দাদু’-কে কুর্নিশ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর

লন্ডন: বয়স তো শুধুমাত্র একটি সংখ্যা৷ হার না মানা মনোভাব আর অদম্য ইচ্ছাশক্তি দিয়ে জয় করা যায় সবকিছুই৷ ৭৩ বছর বয়সে পৌঁছে সেই কেরামতিটিই দেখালেন ব্রিটিশ শিখ রাজিন্দর সিং৷ 

চারিদিকে হু হু করে বাড়ছিল কোভিড সংক্রমণ৷ রোগীদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল হাসপাতালগুলিকে৷ এই অবস্থায় চুপ থাকতে পারেননি ৭৩ বছরের এই প্রৌঢ়৷ নিয়ে নেন একটি চ্যালেঞ্জ৷ লকডাউন চলার মাঝেই ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস)-এর জন্য অর্থ জোগাড় করতে শুরু করেন লাফদড়ি বা স্কিপিং চ্যালেঞ্জ৷ তাঁর এই উদ্যোগ তাঁকে এনে দেয় অনন্য সম্মান৷ ‘স্কিপিং শিখ’ চ্যালেঞ্জের জন্য ‘পয়েন্টস অফ লাইট’ সম্মানে সম্মানিত করা হয় তাঁকে৷  

সাধারণত, সমাজের স্বার্থে অসামান্য অবদানের জন্য ব্যক্তি বিশেষকে ‘পয়েন্টস অফ লাইট’ সম্মান দেওয়া হয়৷ এই সম্মানের মধ্যে দিয়েই তাঁদের অনুপ্রেরণামূলক স্বেচ্ছাসেবী কাজকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়ে থাকে৷ এই সম্মান জানান খোদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী৷ তিন মাসে আগে এনএইচএস-এর জন্য তহবিল গড়তে লন্ডনের কাছে হার্লিংটনে নিজের বাড়িতেই স্কিপিং চ্যালেঞ্জ শুরু করেছিলেন রাজিন্দর সিং৷ এখনও পর্যন্ত ১৩ হাজার পাউন্ড সংগ্রহ করতে পেরেছেন তিনি৷ 

সম্প্রতি হেথ্রো বিমানবন্দরের গাড়ি চালক সিংকে চিঠি পাঠিয়ে তাঁর এই উদ্যমকে সাধুবাদ জানান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বোরিস জনসন৷ ওই চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘অনলাইনে স্কিপিং শিখ ফিটনেস ভিডিয়ো দেখার পর বিশ্বের হাজার হাজার শিখ অণুপ্রাণিত হয়েছে৷ তাঁরাও আপনার সঙ্গে প্রতিদিনের অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন৷ মন্দিরগুলি যখন বন্ধ, তখন এই অনন্য উপায়ে সমগ্র শিখ সম্প্রদায়কে একত্রিত করে তুলতে পেরেছেন আপনি৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের এনএইচএসকে সমর্থন করার জন্য আপনি যে কাজ করেছেন, তার জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই৷ আপনি সারা দেশের মানুষকে লাফদড়ি হাতে তুলে নেওয়ার উৎসাহিত জুগিয়েছেন৷ এই চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে তাঁদের মনোবাল বাড়িয়ে তুলেছেন৷’’

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্যাপ্টেন টম মোরের থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন সিং৷ ১০০ বছর বয়সে নিজের বাগানে হেঁটে এনএইচএস-এর জন্য ৩০ মিলিয়ন পাউন্ড সংগ্রহ করেছিলেন মোরে৷  সিং জানান, ‘‘গত মার্চ মাসে লকডাউনে ঘরবন্দি থাকার সময়ই স্কিপিং চ্যালেঞ্জ নেওয়ার চিন্তাটা তাঁর মাথায় আসে৷’’ তিনি বলেন,‘‘আমি টম মোরের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছি৷ এছাড়াও আমাকে উৎসাহ জুগিয়েছে আমার মেয়ে মিনরীত কৌর৷ আমি বরাবরই স্কিপিং করতে ভালোবাসি৷ আমার মেয়েই আমাকে স্কিপিং শিখ চ্যালেঞ্জ শুরু করার পরামর্শ দেয়৷’’ এনএইচএস-এর জন্য ১৩,৪৫০ ডলার সংগ্রহ করতে পেরে দারুণ খুশি ৭৩ বছরের রাজিন্দর সিং৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 + nineteen =