বয়স শুধুই সংখ্যা, ৬৭ বছর বয়সে মাধ্যমিক পাশ করে তাক লাগালেন বৃদ্ধ

বয়স শুধুই সংখ্যা, ৬৭ বছর বয়সে মাধ্যমিক পাশ করে তাক লাগালেন বৃদ্ধ

93d1a51e8b377bd196ae203d359d16a4

 ঢাকা: শেখার কোনও বয়স নেই৷ জানার কোনও সীমা নেই৷ ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে কোনও বয়সেই যে পড়াশোনা করা যায়, তা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন আবুল কালাম আজাদ। ৬৭ বছর বয়সে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে পাশ করলেন বাংলাদেশের শেরপুরের বাসিন্দা আবুল। তবে, আরও একটি নাম রয়েছে তাঁর৷ তিনি পরিচিত ‘কবি কালাম’ নামে।

আরও পড়ুন- ৩৮ বছর পর জেগে উঠল বিশ্বের বৃহত্তম জীবন্ত আগ্নেয়গিরি! বাড়ছে আতঙ্ক

পরীক্ষায় পাশ করার পর সে দেশের প্রথমসারির সংবাদ মাধ্যম ‘প্রথম আলো’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আবুল জানান, ২০২২ সালে চন্দ্রাবাজ রশিদা বেগম হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি৷ সোমবার দুপুরে ফলাফল প্রকাশিত হয়৷ আবুল জানতে পারেন, ভাল নম্বর পেয়েই তিনি পাশ করেছেন৷ ‘প্রথম আলো’-র প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, ১৯৫৫ সালে বাংলাদেশের লঙ্গরপাড়া গ্রামে জন্ম আবুল কালাম আজাদের। দশম শ্রেণি পর্যন্ত গ্রামের স্কুলেই পড়াশোনা তাঁর। কিন্তু, সেই সময় আচমকাই একদিন তাঁদের বাড়িতে আগুন লেগে যায়৷ এর পর রাজধানী ঢাকায় চলে আসে আবুলের গোটা পরিবার। সেখানে আসার পর ডকইয়ার্ডে চাকরিও পেয়ে যান তিনি।

ঢাকায় আসার ২২ বছর পর বিয়ে করেন আবুল। এর পর কর্মসূত্রে পাড়ি দেন সৌদি আরব। ২০১৩ সালে দেশে ফিরে আসেন৷ এবার আর ঢাকায় নয়, ওঠেন গ্রামের বাড়িতে৷ ভালো চাকরি করেছেন, সারা জীবন অর্থ রোজগার করেছেন৷ কিন্তু, দশম শ্রেণির পর আর পড়াশোনা করতে না পারার আফসোসটা রয়েই গিয়েছিল মনে৷ তাই নতুন করে শুরু করলেন লড়াই৷ 

এই বয়সে এসে আবার নতুন করে পড়াশোনা শুরু করাটা সহজ ছিল না৷ এ নিয়ে অনেক ভাবনা-চিন্তাও করেছিলেন৷ শেষ পর্যন্ত মনস্থির করেই ফলেন৷ ২০২০ সাল থেকে শুরু করেন মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি৷ ২০২২ সালে পরীক্ষায় বসেন, ভালো নম্বর পেয়ে পাশও করেন তিনি।

আবুলের কথায়, ‘‘পড়ালেখার প্রতি আমার ভীষণ দুর্বলতা। সব সময় সংবাদপত্র ও বই পড়ি। গান লিখি। কবিতা লিখি। কয়েকটি উপন্যাস এবং ছোট গল্প লিখেছি। এ সবের পাণ্ডুলিপি যত্নের সঙ্গে সংরক্ষণ করছি।’’ নারীদের পড়াশোনার উপরেও ভীষণ গুরুত্ব দেন তিনি। আবুল মনে করেন, পড়াশোনা করার ইচ্ছাশক্তিটাই আসল কথা। এখানে বয়স কোনও বাধা নয়। ইচ্ছা থাকলেই সব কিছু সম্ভব। জয় করা যায় গোটা জগত।