কাবুল: গত বছর ৩০ আগস্টের আগেই গোটা আফগানিস্তানের দখল নেয় তালিবানরা। তালিবানের সামনে আফগানিস্তানের সামরিক বাহিনী তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু চরম প্রতিকূলতার মধ্যে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিল আফগানিস্তানের পাহাড় ঘেরা ছোট্ট প্রদেশ পঞ্জশির। চোখে চোখ রেখে যুদ্ধের ঘোষণা করেছিল। যদিও তালিবানের বিরুদ্ধে সেভাবে লড়াই করতে পারেনি। কিছুদিন চুপ থাকার পর আবার পঞ্জশির লড়াইয়ে ফিরেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তালিবানের সঙ্গে পঞ্জশির উপত্যকার যোদ্ধারা নতুন করে লড়াই শুরু করেছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আফগানিস্তান লিবারেশন ফ্রন্ট বা এএলএফ ও ন্যাশনাল রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট অফ আফগানিস্তান পঞ্জশিরে যৌথভাবে তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছে। মোকাবিলা করতে গিয়ে তালিবান হিমশিম খাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। দুই পক্ষের লড়াই শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত ২১ জন তালিবানি জঙ্গি নিহত হয়েছে। ইতিমধ্যে এএলএফের তরফে বেশ কিছু ভিডিও প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানেই দাবি করা হয়েছে এনআরএফএ-এর সঙ্গে তারা যৌথ অভিযান শুরু করেছে। তাতে বেশ কয়েকজন তালিবানের মৃত্যু হয়েছে। ওই ভিডিওতে এএলএফের কমান্ডারের গলার আওয়াজ শোনা গিয়েছে।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাবাহিনীর অপাসরণের সিদ্ধান্তের পর থেকেই একের পর এক প্রদেশ তালিবান দখলে নেয়। বিনা রক্তক্ষয়ে তালিবান কাবুল দখল করে গত বছরের ১৫ আগস্ট। মার্কিন সেনবাহিনীর অপসারণের পর আমেরিকা একটি রিপোর্ট পেশ করে। সেই রিপোর্টে জানানো হয়, সামরিক বাহিনী তালিবানের কাছে আত্মসমর্পন করলেও অনেক আফগান সেনা তা মেনে নিতে পারেনি। এমনকী আফগানিস্তানের অনেক প্রশিক্ষিত গেরিলা সংঠন রয়েছে, যাঁরাও তালিব শাসন মেনে নিতে পারেনি। সকলে একজোট হয়ে তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এবার সেই সংগঠনগুলো একত্রিত হয়ে এবার তালিবানের বিরুদ্ধে যু্দ্ধ শুরু করেছে।
পঞ্জশির প্রথম থেকেই স্বাধীনচেতা। আফগানিস্তান যখন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন দখল করেছিল, তখন পঞ্জশির স্বাধীন ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নের পর তালিবান যখন আফগানিস্তানের ক্ষমতায় এসেছিল, পঞ্জশিরকে সেই সময় তারাও মাথা নোয়াতে পারেনি। আফগানিস্তানে গণতন্ত্রের সময় পঞ্জশির যুক্ত হয়েছিল দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে।