সম্পত্তির খতিয়ানে চোখ কপালে ওঠে! জানেন কুস্তির রিংয়ে ‘নাটক’ করে কত উপার্জন করেন রক, ভিন্সরা?

সম্পত্তির খতিয়ানে চোখ কপালে ওঠে! জানেন কুস্তির রিংয়ে ‘নাটক’ করে কত উপার্জন করেন রক, ভিন্সরা?

নয়াদিল্লি: কুস্তির এই রিংয়ে গায়ে কাঁটা জাগানো ফাইট দেখে অনেকেই বিস্মিত হন। বাস্তবের প্রেক্ষাপট হলেও ওয়ার্ল্ড রেসলিং এন্টারটেনমেন্ট বা ডব্লিউডব্লিউই কিন্তু আদ্যন্ত নাটকে  মোড়া৷ যার চিত্রনাট্য লেখা থাকে কুশীলবরা রিং-এ নামার আগেই৷ আর চিত্রনাট্যের চাহিদা মেনেই প্রতিপক্ষকে মাত দেন তারকা কুস্তিগীররা। কখনও তাঁরা একের অপরের দিকে তেড়ে যান, কখনও ঝগড়া করেন, কখনও আবার প্রতিদ্বন্দ্বীকে তুলে আছাড়া দেন৷ পেশাদার কুস্তির রিং-এ বিনোদনের মশলা ভরপুর। এ হেন ডব্লিউডব্লিউই-এর তারকা কুস্তিগিরদের আয় কত জানানেন? দেখে নিন আয়ের নিরিখে প্রথম দশজনকে৷ 

আরও পড়ুন- ISL চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান, ৫০ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী

হাল্ক হোগান- বিশ্বজুড়ে টেলিভিশনের পর্দায় কুস্তিগিরদের কেরামতি দেখতে নাকি ভিড় জমান প্রায় ১০০ কোটি দর্শক৷ তাঁদের মধ্যে অনেকেরই পছন্দ হাল্ক হোগান। অনেকেই বলেন, একদা তিনিই নাকি ছিলেন ডব্লিউডব্লিউই কুস্তিগিরদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত মুখ৷ আশির দশকে রিং-এ দাপিয়ে বেড়ানো এই কুস্তিগিরের আসল নাম টেরি জিন বেলেয়া। কুস্তির পাশাপাশি অভিনয় জগতেও তাঁর ব্যাপ্তি৷ ‘রকি’ সিরিজের তৃতীয় কিস্তি-সহ ১৬টি হলিউডি ছবিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সংবাদমাধ্যমের দাবি, কুস্তির রিং থেকে আড়াই কোটি ডলার উপার্জন করেছেন হোগান। তিনি রয়েছেন ধনী কুস্তিগিরদের তালিকার দশ নম্বরে।

স্টেসি কিবলার- কুস্তির জগতে স্টেসি কিবলারও একটি অতি পরিচিত নাম। নৃত্যশিল্পী হিসাবে পেশাদার জীবন শুরু করা স্টেসির পরিচিতি আসে রিং থেকেই৷ হলিউডের অভিনেতা জর্জ ক্লুনির সঙ্গে সংক্ষিপ্ত প্রেমপর্বের জেরে ২০১১ সালে তাঁকে নিয়ে কম চর্চা হয়নি৷ জানা যায়, স্বামী জেরেড পবরের সঙ্গে তাঁর মিলিত আয় আড়াই কোটি ডলার। তাঁর একার আয় অবশ্য জানা যায়নি।

কার্ট অ্যাঙ্গল- ডব্লিউডব্লিউই-র জগতে কার্ট অ্যাঙ্গলই প্রথম, যিনি অলিম্পিক্স এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনার পদক জিতেছেন। ১৯৯৬ সালে ঘাড়ে গুরুতর চোট নিয়েও আটলান্টা অলিম্পক্সে আমেরিকার হয়ে ফ্রিস্টাইল কুস্তিতে সোনা জিতেছিলেন এই কুস্তিগির। ২০১৯ সালে তিনি কুস্তির সঙ্গ ছাড়েন৷ অভিনয় জগতে যোগ রয়েছে তাঁর৷ জানা যায়, বার্ষিক ৬ লক্ষ ডলার ঘরে নিয়ে যেতেন কার্ট। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৫ কোটি টাকা।

ব্রুক লেসনার- ডব্লিউডব্লিউই-র মঞ্চে উল্লেখযোগ্য নাম ব্রুক লেসনার। কুস্তির পাশাপাশি মার্শাল আর্টের মঞ্চেও উঠেছেন তিনি৷ রাগবি খেলোয়াড় হিসাবেও কিছুটা নামডাক ছিল। তবে কুস্তির রিংয়েই তিনি সবচেয়ে সফল৷ ৮ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন৷ ব্রুকই একমাত্র কুস্তিগির যিনি আল্টিমেট ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশিপ (ইউএফসি), নিউ জাপান প্রো-রেসলিং (এনজেপিডব্লিই) এবং ন্যাশনাল কলেজিয়েট অ্যাথলেটিক্স অ্যাসোসিয়েশন (এনসিএএ)-র মতো  সমস্ত প্রথম সারির খেতাব জিতেছেন। তাঁর বার্ষিক আয় ২.৮ কোটি ডলার।

স্টিভ অস্টিন- ১৯৯৫ সালে পেশাদার কুস্তিতে পা রাখা স্টিভ অস্টিন ছিলেন রিং-এর তারকা৷ আন্ডারটেকার, দ্য রক এবং শন মাইকেলসের সঙ্গে কেরিয়ারের বহু স্মরণীয় ম্যাচ খেলেছেন৷ এক সময় তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ৩ কোটি ডলার। 

জন সেনা- শুধু কুস্তির রিং নয়, জন সেনার অ্যাকশন দেখা গিয়েছে হলিউডি ছবিতেও। ২০০৬ সালে জনপ্রিয়তার শিখর ছোঁয়া ‘দ্য মেরিন’-এর নেপথ্যে ছিল ভাবলেশহীন ভাবে জনের খলনায়কদের সিধা করা দক্ষতা। মারপিটের দৃশ্যে অভিনয়ের পাশাপাশি জন ব়্যাপেও বেশ পটু৷ তবে শুধু মাত্র কুস্তির রিং থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৬ কোটি ডলার৷ যা ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৪৯৫ কোটি টাকা।

স্টেফানি ম্যাকমেহন- পেশা হিসাবে বাবার দেখানো পথই অনুসরণ করেন স্টেফানি ম্যাকমেহন৷ মাত্র ২০ বছর বয়সে হয় অভিষেক৷ ২০১৮ সালে রিংকে বিদায় জানালেও ডব্লিউডব্লিউই-র ব্যবসায়িক ক্ষেত্র থেকে নিজেকে সরাননি। এই মুহূর্তে তিনি নাকি ডব্লিউডব্লিউই-র ২.৪৭ শতাংশে শেয়ারের মালকিন। এক সময় শেয়ারের মুনাফা থেকে স্টেফানি ২২.৫ কোটি ডলার মুনাফা করেছিলেন। ডব্লিউডব্লিউএফ-এর খেতাবজয়ী স্টেফানির বার্ষিক আয় ছিল প্রায় ১৫ কোটি ডলার। 

পল মাইকেল লেভেস্ক- পল মাইকেল লেভেস্ক৷ এই নামটা অনেকেরই অজানা৷ কারণ কুস্তির রিং-এ তিনি পরিচিত ট্রিপল এইচ নামেই৷ তিনি হলিউডেরও অতিপরিচিত মুখ৷ ডব্লিউডব্লিউই-র অন্যতম সেরাদের দলে তাঁকে সহজেই রাখা যায়। রিং থেকে ট্রিপল এইচের বার্ষিক আয় নাকি ১৫ কোটি ডলার। যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১২৩৮ কোটি টাকা।

‘দ্য রক’- দিন কয়েক আগেই গোলাপি স্যুটে অস্কারের মঞ্চে দেখা গিয়েছিল তাঁকে৷ ডব্লিউডব্লিউই-র ধনী কুস্তিগিরদের ধনীদের ‘দ্য রক’ আছেন  দু’নম্বরে৷ দশ বারের বিশ্বখেতাবজয়ীর ঝুলিতে রয়েছে ৫টি টিম চ্যাম্পিয়নশিপের খেতাব। রিং থেকে তাঁর বার্ষিক আয় নাকি ৪০ কোটি ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৩৩০২ কোটি টাকা।

ভিন্স ম্যাকমেহন- তবে ‘দ্য রক’কে পিছনে ফেলে আয়ের নিরিখে শীর্ষে উঠে এসেছেন ভিন্স ম্যাকমেহন। ডব্লিউডব্লিউই-র সিইও তথা চেয়ারম্যান ভিন্স ১৯৬৯ সালে এই পেশায় আসেন৷ ডব্লিউডব্লিউই থেকে তাঁর বার্ষিক আয় নাকি ১০০ কোটি ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮২৫৫ কোটি টাকা।