Aajbikel

বিরাট কোহলির আচরণ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন! কেন এত ঔদ্ধত্য? শচীনের স্থান আদোও পাবেন কি?

 | 
বিরাট
কলকাতা: বিরাট কোহলির আচরণ নিয়ে বহুদিন ধরেই উঠছে প্রশ্ন! বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানের এত ঔদ্ধত্য থাকবে কেন? শচীনের স্থান নিতে গেলে দ্রুত বদলাতে হবে বিরাটকে! পাকিস্তান ম্যাচে সেদিন ভারতের হার একপ্রকার সুনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ক্রিজে তখন বিরাট কোহলি আরও 'বিরাট' হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। এরপরই পাক বোলার রাউফের দুটি অসামান্য ডেলিভারিকে বিরাট যেভাবে ফেলে দেন মাঠের বাইরে, তাতেই ঘুরে যায় খেলা। ওই দুটি অবিশ্বাস্য ছক্কা হারিয়ে দেয় পাকিস্তানকে। যে বিষয়টি আজ লোকগাথায় পরিণত হয়েছে।  

বিরাটের এই অসাধারণ পারফরম্যান্স শুধু সেই ম্যাচ বলে নয়, সব বলতে গেলে তালিকা এতটাই যে দীর্ঘ হবে সেটা জানে ভারত তথা গোটা বিশ্ব। টেস্ট, ওয়ান ডে, টি-২০ থেকে আইপিএল, বিরাট শাসনে বোলাররা কীভাবে যে কুপোকাত হচ্ছেন তা প্রতিনিয়ত দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ ক্রিকেটার বিরাট কোহলির প্রতিভা, হার না মানা মনোভাব, দুরন্ত আগ্রাসন, রান তাড়া করার ক্ষমতা, আর দুর্দান্ত ব্যাটিং স্টাইল তাঁকে বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটার করে তুলেছে। ক্রিকেটার বিরাটের সঙ্গে তাঁর সমসাময়িকদের সঙ্গে অনেকটাই তফাৎ রয়েছে। কিন্তু খেলার বাইরে একজন ক্রীড়াবিদের আরও কিছু থাকা দরকার যার অনেকটাই 'মিসিং' রয়েছে বিরাটের মধ্যে। আর সেই কারণেই বারবার তাঁকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হচ্ছে।


সুনীল গাভাসকার অবসর নেওয়ার পর দু'দশকের বেশি সময় ধরে ভারতকে ভরসা দিয়েছেন শচীন তেন্ডুলকার। আর শচীনের পর ভারতকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন বিরাট। কিন্তু মাঠের বাইরে শচীনের ব্যবহার, সিনিয়র ক্রিকেটারদের যথাযথ সম্মান প্রদান, জুনিয়র ক্রিকেটারদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া, এমনকী ভারতের যে কোনও ক্রীড়াবিদ দেশের হয়ে  আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভাল পারফরম্যান্স করলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেন না শচীন। ক্রিকেট জীবনের পাশাপাশি অবসরের পরেও এক মুহূর্তের জন্য শচীনকে কোনও দিন অহঙ্কারি মনে হয়নি। তাই অবসরের দশ বছর পরেও  ক্রিকেট তথা সার্বিক খেলাধুলোর জগতে আজও শচীন সমান প্রাসঙ্গিক ও অন্যতম দেশনায়কের সম্মান পাচ্ছেন।  


একই ভাবে প্রাসঙ্গিক রয়েছেন সুনীল গাভাসকার, কপিল দেবরা। কোনও অভিনেতা বা ক্রীড়াবিদের জনপ্রিয়তা বা গুরুত্ব কতটা রয়েছে সেটা তখনই বোঝা যায় যখন তাঁদের স্বর্ণযুগ‌ বা  অবসরের বহু বছর পরেও তাঁরা সমান প্রাসঙ্গিক থাকেন। উদাহরণ হিসেবে বলতে হবে অমিতাভ বচ্চনের কথা। এত বছর পরেও ভারতীয় সিনেমা জগতে সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক তিনি। কিন্তু অমিতাভের সঙ্গে চুটিয়ে কাজ করে যাওয়া বহু অভিনেতা-অভিনেত্রীর আজ  কোনও খোঁজই পাওয়া যায় না। তাঁরা যেন কালের নিয়মেই হারিয়ে গিয়েছেন।


ভারতীয় ক্রীড়া জগতে একই কথা প্রযোজ্য। সেই জায়গা থেকে বিরাট কোহলি যেভাবে কখনও প্রাক্তন ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীর বা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন, মাঠে সেঞ্চুরি করে অত্যন্ত উগ্রভাবে সেলিব্রেশন করছেন, বিভিন্ন বিষয়ে অন্যান্যদের  কটাক্ষ করছেন, সেটা কিন্তু তাঁকে সারা জীবন ধরে দেশনায়কের সম্মান পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও দূরে ঠেলে দিচ্ছে। বিরাটের ঔদ্ধত্য আজ ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম আলোচিত বিষয়। ৩৬ বছর হয়ে গিয়েছে ক্রিকেট মাঠকে বিদায় জানিয়েছেন গাভাসকার। কিন্তু এখনও ক্রিকেটের যে কোনও টেকনিক্যাল বিষয়ে শেষ কথা কার্যত তিনিই বলে থাকেন।


শুধু বড় ক্রিকেটার হলেই হবে না, তার সঙ্গে প্রয়োজন আরও কিছু 'এক্স ফ্যাক্টর'। যা একজন ক্রীড়াবিদ বা যে কোনও পেশার সফল মানুষকে আরও উচ্চতায় তুলে দেয়। যা হারাতে বসেছেন বিরাট। আগামী দিনেও বিরাটের ব্যাট থেকে প্রচুর রান এবং সেঞ্চুরি আসবে। ভেঙে দিতে পারেন শচীনের একশো সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড। কিন্তু সব দিক বিচার করে দেশের অন্যতম সেরা 'আইকন' বিরাট হয়ে উঠতে পারেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Around The Web

Trending News

You May like