সেন্ট পিটার্সবার্গ: ইউরো কাপে শেষ হল রূপকথার সুইস লড়াই। কোয়ার্টার ফাইনালে এসে স্প্যানিশদের কাছে টাইব্রেকারে হেরে থামল শাকিরিদের ঐতিহাসিক যাত্রা। তবে নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলায় শক্তিশালী স্পেনকে ১-১ গোলে রুখে দিয়ে বিশ্ব জুড়ে ফুটবলপ্রেমীদের প্রশংসা কুড়িয়েছে সুইস দল। এলভেডি-আকাঞ্জিদের এত সাহসী, আত্মবিশ্বাসী লড়াই ফুটবল ইতিহাস চিরকাল মনে রাখবে।
এদিন ইউরো কাপ ২০২০-এর প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের একদম প্রথমেই ৮ মিনিটের মাথায় সুইস ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ডেনিস জাকারিয়ার আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় লা রোখারা। এরপর আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ায় স্পেন। একের পর এক সুযোগ তৈরি হলেও সেই সুযোগ থেকে গোলের রাস্তা খুঁজে নিতে ব্যর্থ হন আলভারো মোরাতারা। প্রথমার্ধের শেষে ওই জাকারিয়ার আত্মঘাতী গোলই দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে রাখে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আক্রমণ বাড়ায় সুইৎজারল্যান্ড। গোটা দলকে ধীরে ধীরে তুলে আনেন অধিনায়ক শাকিরি। ৬৮ মিনিটের মাথায় তিনিই জোরালো শটে স্পেনের তিনকাঠিতে হানা দিয়ে জাল কাঁপিয়ে দেন। এরপর সুইৎজারল্যান্ড খেলার গতি কিছুটা কমিয়ে দিতে চাইলেও স্প্যানিশরা গোলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে। ৭৭ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হয় সুইস ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার রেমো ফ্রিউলারকে। এরপর নির্ধারিত ৯০ মিনিটের বাকি অংশ ও অতিরিক্ত সময় ১০ জনে খেলেও প্রশংসনীয় লড়াই করে সুইৎজারল্যান্ড।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটে খেলা ১-১ ড্র থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। যেখানে প্রথমার্ধের ১৫ মিনিট সুইস ডি-বক্সে আক্রমণের ঝড় তুলে দেয়। একটি গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে লা রোখারা। কিন্তু প্রথমার্ধে তো বটেই, এমনকি দ্বিতীয়ার্ধেও কোনো গোল পায়নি স্পেন। সুইস রক্ষণে স্তম্ভের মতো লড়াই করছিলেন ম্যানুয়েল আকাঞ্জি ও নিকো এলভেডি। সবশেষে গোলের মুখে দাঁড়িয়ে এদিন কার্যত জীবনের সেরা লড়াইটা লড়লেন সুইস গোলরক্ষক ইয়ান সোমের। মোটামুটি তার জন্যই টাইব্রেকার পর্যন্ত পৌঁছেছে খেলা। তার দুরন্ত ভঙ্গিতে বাঁচিয়ে দেওয়া গোলগুলো যোগ করলে হয়তো স্পেন হাফ ডজন গোলে জিততে পারত। ইয়ান সোমেরের বন্দনায় আজ সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা।
এরপর খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে প্রথম শটটিই গোলপোস্টে মারেন স্প্যানিশ অধিনায়ক সের্জিও বুস্কেতস। অন্যদিকে, তিনকাঠির বাইরে শট মারেন সুইৎজারল্যান্ডের রুবেন ভার্গাস। আবার ফ্যাবিয়েন স্কার ও ম্যানুয়েল আকাঞ্জির শট বাঁচিয়ে দেন লা রোখার গোলরক্ষক উনাই সিমন। আর তাতেই ৩-১ গোলে জিতে সরাসরি ইউরো কাপের সেমিফাইনালের দিকে পা বাড়াল স্পেন। পাশাপাশি, শেষ হয়ে গেল ঐতিহাসিক সুইস লড়াই। প্রথমে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স এবং তারপরই স্পেনের বিরুদ্ধে এই লড়াই, দেশ-বিদেশের ফুটবলপ্রেমীরা দীর্ঘদিন মনে রাখবেন।