মুম্বই: ২০১৪ সাল৷ ওই বছরই দশ বছরের ইউপিএ শাসন পেরিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী৷ আর ওই বছরই শেষবার আইপিএল জিতেছিল শাহরুখ খানের কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)৷ তার পরের সাত বছর অনেক ঘটনার সাক্ষী থেকেছে ভারতীয় রাজনীতি৷ প্রধানমন্ত্রীর নাম একই রয়েছে ঠিকই, তবে ঘটে গিয়েছে অনেক পটপরিবর্তন৷ তবে কেকেআরের আইপিএল রেখচিত্রে কোনও বদল নেই৷ ২০১৫-র আইপিএল থেকে সেই যে ব্যর্থতার শুরু, সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলিতেছে৷ মাঝে দু’-একবার এলিমিনেটরের শিকে ছিঁড়লেও, সাফল্যের মুকুট সেই অধরাই৷ প্রতিবারই অনেক অঙ্ক কষে দল হয় বটে, তবে খেতাব জয়ের রাস্তার খোঁজ আর মেলে না৷
২০২১-এর আইপিএল এখনও বিশেষ এগোয়নি৷ তবে সকালের সূর্য যদি বলে দিনটা কেমন যাবে, তা হলে এবারের মেগা শোতেও কেকেআরের বিজয়ীর হাসি হাসা খুবই কঠিন৷ শেষ চারের পা রাখাটাও এখনই এভারেস্টে চড়ার মতো মনে হচ্ছে৷ যদি কোনও মিরাকল ঘটে তা হলে অন্য কথা৷ এবারের আইপিএল যুদ্ধে কেকেআর এখনও পর্যন্ত খেলেছে পাঁচটা ম্যাচ৷ তার মধ্যে প্রথম ম্যাচে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে জয়ের পর শুধুই হারের কাহিনি৷ শনিবারের সন্ধ্যায় লিগের লাস্ট বয় রাজস্থান রয়্যালসও সহজ জয় হাসিল করে কলকাতাকে পাঠিয়ে দিল শেষ স্থানে৷
এবার নতুন কিছু নয়৷ গত কয়েক বছর ধরে আইপিএলে কলকাতার যে পারফরম্যান্স গ্রাফ, তাতে এই ছবিটাই বারবার ফুটে ওঠে৷ শুরুর দিকের সময়টা বাদ দিলে তারকা প্রথাকে অনেক আগেই বিসর্জন দিয়েছে কলকাতা৷ বরং, অনেক মাথা খাটিয়ে খেলোয়াড় বাছাই করে টিম গেমে ভরসা করার কথা বলে তারা৷ কিন্তু তাদের সেই ফর্মুলায় সাফল্যের দেখা নেই অনেক বছরই৷ আসলে প্রতিবার কেকেআরের দলটাই থাকে নড়বড়ে৷ দলে না রয়েছে কোনও প্রথমসারির ভারতীয় তারকা, না রয়েছে মারকাটারি বিদেশির সমাহার৷ সুনীল নারাইনকে কলকাতা কেন এখনও ধরে রেখেছে সেটাই যেমন সবচেয়ে বড় রহস্য, তেমনই প্রশ্ন রয়েছে অতিরিক্ত আন্দ্রে রাসেল নির্ভরতা নিয়েও৷
রাসেল একদিকে যেমন এবার এখনও পর্যন্ত অতীতের ছায়া, তেমনই তাঁকে ব্যবহার করার ব্যাপারে কেকেআরের ভাবনাও বেশ গোলমেলে৷ চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর রাসেলের ঝড় ম্যাচে অন্য রং এনে দিয়েছিল বটে, তবে কেকেআর ম্যানেজমেন্ট সম্ভবত এটা বুঝছেন না যে, প্রতিদিন শেষলগ্নে ব্যাট হাতে ক্রিজে এসে সুনামি বইয়ে দেওয়ার জন্য রাসেলের পকেটে কোনও জাদুদণ্ড নেই৷ ফলে রাসেল বিস্ফোরণ দেখা গেলেও, সেটা হচ্ছে ব্যতিক্রম, নিয়ম নয়৷ আর বাকি যাঁরা রয়েছেন, সেই বিদেশি শাকিব-মর্গ্যানই হোন বা দেশি রানা-কার্তিক, তাঁরা বড় জোর সহশিল্পী হতে পারেন, কিন্তু একার কাঁধে ম্যাচ জেতানো তাঁদের পক্ষে নেহাতই ‘ওয়ান্স ইন আ ব্লু মুন’৷ অতএব? বারবারই কেকেহার৷