লন্ডন: একদিকে যখন মারাকানায় ২৮ বছর পর কোপা আমেরিকা জিতে ইতিহাস গড়ল লিও মেসির আর্জেন্টিনা তখন ওয়েম্বলিতে ব্রিটিশ সমর্থকদের ইতিহাসের সাক্ষী করে রাখতে পারলেন না হ্যারি কেনরা। ইংল্যান্ডের ঘরের মাঠে তাদের হারিয়ে ইউরো কাপ নিয়ে দেশে ফিরল ইতালিয়ানরা। ২০১৮ বিশ্বকাপে যে দল যোগ্যতাও অর্জন করতে পারেনি সেই দলটাই তারপরের ইউরো কাপ জিতে নিল। টানটান উত্তেজক ফাইনাল ম্যাচে টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে জিতে জয় ছিনিয়ে নিল আজুরিরা। রানারআপ হয়েই খু্শি থাকতে হল ব্রিটিশ প্রশিক্ষক গ্যারেথ সাউথগেটকে।
ঐতিহাসিক ওয়েম্বলিতে হাজার হাজার সমর্থকের সামনে রবিবার ৫৫ বছর পর প্রথমবার বড় কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলতে নেমেছিল ইংল্যান্ড। শেষবার ১৯৬৬ সালে এই ওয়েম্বলিতেই বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিল ববি মুরের ইংল্যান্ড। সেদিন পশ্চিম জার্মানিকে ৪-২ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিল তারা। কিন্তু এদিন প্রথমবার ইউরোর ফাইনালে খেলে ইতালিকে হারাতে পারল না হ্যারি কেনের দল। তবে ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই চোখের পলক ফেলার আগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের তারকা লুক শ’এর দুরন্ত গোলে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। এরপর ম্যাচের বেশিরভাগ সময়টাই পিছন থেকে খেলায় ফেরার লড়াই ছিল ইতালিয়ানদের। প্রথমার্ধে ইতালি আক্রমণের পর আক্রমণ তুলে শত চেষ্টার পরও গোলের ব্যবধানে কমাতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আবার গোলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে আজুরিরা। ইতালিয়ান আক্রমণের ঝড় কখনও ব্রিটিশ রক্ষণে কখনও গোলরক্ষক জর্ডন পিকফোর্ডের দস্তানায় গিয়ে আটকে যায়। শেষে ম্যাচের ৬৭ মিনিটে পাওয়া কর্নার থেকে বাড়ানো বল তিনকাঠির সামনে পেয়ে জটলার মধ্যে থেকে গোলে ঢুকিয়ে দেন আজুরিদের রক্ষণের স্তম্ভ লিওনার্দো বোনুচ্চি। তার গোলে ইতালি ম্যাচে ফেরার পর খেলা অনেক খুলে যায়। দুই দলই রক্ষণের পাশাপাশি আক্রমণেও নজর কাড়ে। ইতালির আক্রমণ বিভাগ গোলের কয়েকটি সুন্দর সুযোগ নষ্ট করে। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও খেলার মীমাংসা না হওয়ায় টাইব্রেকারে চলে যায় ম্যাচ। টাইব্রেকারেও দুই দল পরস্পরকে সমানে সমানে টক্কর দেয়। কখনও ইংল্যান্ড এগিয়ে যায় তো কখনও ইতালি এগিয়ে যায়। তবে শেষ পর্যন্ত দুটি পেনাল্টি বাঁচিয়ে দিয়ে ইতালিকে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা এনে দেন গোলরক্ষক ডোন্নারুম্মা। ইংরেজদের মাটিতেই ইংরেজদের হারিয়ে ইউরোপের সেরা দল হিসেবে নির্বাচিত হল ইতালি।