কলকাতা: নিঃশব্দে কাজ চলছে। বিনিয়োগকারী শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে মূল চুক্তি বা ‘ফাইনাল ডেফিনিটিভ এগ্রিমেন্ট’ টু-শব্দটি করতে চাইছেন না ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। এদিকে, লাল হলুদ সমর্থকদের হৃদস্পন্দন বাড়ছে। ইতিউতি জোর আলোচনা চলছে, এই সপ্তাহেই কী আসছে প্রত্যাশিত ক্ষণ?
আই এস এল শেষ হওয়ার পর থেকে যেন শান্তি নেই লাল-হলুদ শিবিরে। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে যে প্রাথমিক চুক্তি বা ‘এগ্রিড টার্মসিটে’ সই করেছিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাব, সেই চুক্তিকে সামনে রেখে ফাইনাল ডেফিনিটিভ এগ্রিমেন্টে সই চায় বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু, দুই চুক্তিতে ব্যাপক গরমিলের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে ক্লাব। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, মূল ওই চুক্তি সই না হলে আর কোনও বিনিয়োগ হবে না। বিনিয়োগ না হলে দল গঠনও সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে ইস্টবেঙ্গল পাল্টা জবাব দেয়, ফুটবল রাইট বা ফুটবল স্বত্ব হাতে রয়েছে বিনিয়োগকারীর। সুতরাং, দল তৈরি করা উচিত।
তবে জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে মেঘ কেটে রোদ ওঠে। আশার আলো দেখা যায়। যে দুই পক্ষ পরস্পরকে দোষারোপ ব্যস্ত ছিল, তারা ভার্চুয়াল মাধ্যমে (ভিডিও কনফারেন্স) মিলিত হয়। চুক্তি নিজে আলোচনা শুরু হয়। মাঝে থাকেন মধ্যস্থতাকারীরা। এখানে বলে রাখা ভাল, মধ্যস্থতাকারী হিসাবে এক বরিষ্ঠ সাংবাদিক তথা সম্পাদক এবং এক কর্পোরেট কর্তা উপস্থিত থেকেছেন। ইস্টবেঙ্গলে এই বিনিয়োগকারীরা যখন এসেছিলেন, তখনও ছিলেন এই মধ্যস্ততাকারীরা।
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সভাপতি ডা. প্রণব দাশগুপ্তকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আজ বিকেলকে মঙ্গলবার দুপুরে তিনি বলেন, ” ওটা নিয়ে … কোনও মন্তব্য করতে পারব না। আমরা ওটা নিয়ে কাজ করে চলেছি। কিন্তু কোনও মন্তব্য করতে পারব না।” বলে রাখা ভাল, সমর্থক এবং কিছু ফ্যান গোষ্ঠী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চাইছিল। সরাসরি না হলেও মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে বিবদমান দুপক্ষের উদ্দেশ্যেই বার্তা যায়। এর পর কয়েক দফা আলোচনা চলে। যা খবর, নবান্নের নির্দেশেই তৈরি হচ্ছে নতুন চুক্তিপত্র। প্রবল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে যে, সামনে সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে সই করতে পারেন লাল-হলুদ কর্তারা।
কিন্তু কী ভাবে সুষ্ঠ সম্পন্ন হবে সমগ্র এই পদ্ধতি? শোনা যাচ্ছে, বিনিয়োগকারীর তরফে আইনজীবীরা নতুন করে চুক্তিপত্র তৈরি করছেন। তারপর তাঁরা সেই চুক্তিপত্র পাঠাবেন শ্রী সিমেন্টের কলকাতা দফতরে। শ্রী সিমেন্টের কর্তারা সেই চুক্তিপত্র এফ এস ডি এল এবং ইস্টবেঙ্গলে পাঠিয়ে দেবে। আই এস এল কর্তৃপক্ষও সেই প্রস্তাবিত চুক্তিপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খ খতিয়ে দেখবে। আই এস এলের তরফে অনুমোদিত চুক্তিপত্রেই সই করবে ইস্টবেঙ্গল। তবে, সই এর আগে ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠক ডেকে চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে সই করার ব্যাপারে আলোচনা হবে এবং সদস্যদের অনুমোদন চাওয়া হবে। মনে করা হচ্ছে আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা।