বুখারেস্ট: ইউরো কাপ ২০২০-এর সবচেয়ে বড় অঘটনটি ঘটে গেল সোমবার রাতে বুখারেস্টের ন্যাশনাল এরিনায়। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে স্বপ্নের উড়ান মেলে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল সুইৎজারল্যান্ড। এত রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ বোধহয় ইউরো ২০২০-তে এই প্রথম। সৌজন্যে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের তারকাখচিত দল আর সুইৎজারল্যান্ডের হার না মানার মানসিকতা। ২০১৮ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ২০২০ ইউরো কাপে অন্যতম ফেভারিট হিসেবে নেমেও প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালেই শেষ হয়ে গেল ফরাসি দৌড়।
ফ্রান্সের সামনে সুইজারল্যান্ডকে হয়তো অতি বড় ফুটবল বিশেষজ্ঞও এদিন ফেভারিট হিসেবে ধরেননি। কিন্তু সোমবার রাতে বুখারেস্টের ন্যাশনাল এরিনায় যে লড়াইটা দিল সুইসরা আর তার জবাবে ফ্রান্সের খেলা দেখে মনেই হচ্ছিল কোচ দিদিয়ের দেশঁ নিশ্চয়ই সুইৎজারল্যান্ডকে বিপক্ষ শক্তি হিসেবে বড্ড অবহেলা করেছেন। তার ফল হিসেবে ম্যাচের ১৫ মিনিটের মাথায় হ্যারিস সেফেরোভিচের গোলে এগিয়ে যায় সুইৎজারল্যান্ড। গোটা প্রথমার্ধ এই লিড ধরে রেখেছিলেন জার্দান শাকিরিরা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লিড বাড়ানোর সুযোগ পায় সুইৎজারল্যান্ড। কিন্তু ৫৫ মিনিটে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন সুইস লেফট ব্যাক রিকার্ডো রদ্রিগুয়েজ। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র ২ মিনিটের ফরাসি ঝড়ে কার্যত উড়ে যায় সুইৎজারল্যান্ড। ৫৭ এবং ৫৯ মিনিটের মাথায় জোড়া গোল করে চোখের পলকে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা করিম বেঞ্জিমা। দুটি গোলেরই নেপথ্যে ছিল কিলিয়ান এমবাপের বাড়ানো পাস।
ম্যাচের ৭৫ মিনিটে ফরাসি তারকা পল পোগবা বিপক্ষের ডি-বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের শক্তিশালী বাঁকানো শটে ইউরো ২০২০-এর অন্যতম সেরা গোলটি করেন। ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। এরপর ম্যাচের একেবারে শেষ ১০ মিনিটে দুটি গোল করে অবিশ্বাস্যভাবে খেলায় ফিরে আসে সুইৎজারল্যান্ড। ৮১ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে ব্যবধান কমান হ্যারিস সেফেরোভিচ। ৯০ মিনিটে মাথা ঠান্ডা রেখে খেলায় সমতা ফিরিয়ে আনেন মারিও গ্যাভরানোভিচ। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটে খেলা ৩-৩ গোলে ড্র হওয়ায় খেলা চলে যায় অতিরিক্ত সময়ে। কিন্তু সেই ৩০ মিনিটেও কোনো দলই গোল দিতে পারেনি। খেলা এরপর যায় টাইব্রেকারে। সেখানে সুইসরা ৫টির মধ্যে ৫টি সুযোগই কাজে লাগিয়ে তা গোলে পরিণত করতে পেরেছেন। কিন্তু অন্যদিকে পাঁচটির মধ্যে ৪টি শটে গোল পেলেও শেষ শট মিস করেন ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপে। তার নেওয়া শটটি আটকে দেন সুইস গোলরক্ষক ইয়ান সোমের। সঙ্গে সঙ্গে সর্বশক্তিমান ফ্রান্সকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে যায় সুইৎজারল্যান্ড।