শুধু দক্ষিণ আফ্রিকা কেন, ক্রিকেট পরিসংখ্যান বলছে ভারতকেও 'চোকার্স' বলা যেতেই পারে!

নিজস্ব প্রতিনিধি: বিশ্ব ক্রিকেটে 'চোকার্স' শব্দ আর দক্ষিণ আফ্রিকা, এ যেন 'মেড ফর ইচ আদার' হয়ে উঠেছে। যে দল অসম্ভব ভাল খেলে, প্রচুর দক্ষ খেলোয়াড় রয়েছে যেখানে, যারা চ্যাম্পিয়ন হবে সকলেই ধরে নেন, অথচ সেমিফাইনাল বা ফাইনালে তারা যখন হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয়, তখনই সেই দল সম্পর্কে 'চোকার্স' শব্দ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এত দিন মূলত দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে নিয়েই এভাবে কটাক্ষ করা হতো। তবে অতীতের পরিসংখ্যান বলছে ভারতের ক্ষেত্রেও কথাটা সমানভাবে প্রযোজ্য। আর সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপ ফাইনালে সেটা আরও একবার যেন প্রমাণ হয়ে গেল।
প্রথমেই ৫০ ওভার বিশ্বকাপের দিকে তাকানো যাক। ২০১৫ সালে সিডনি, ২০১৯ সালে ম্যাঞ্চেস্টারের পর এবার আমেদাবাদ। আর ২০০৩ সালের জোহানেসবার্গের ফাইনাল এখনও সবাইকে তাড়া করে বেড়ায়। এর পাশাপাশি টি-২০ বিশ্বকাপ ধরলে ২০১৬ সালে মুম্বই, ২০২২ সালে অ্যাডিলেড। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ধরলে ২০২১ সালে সাউদাম্পটন ও চলতি বছরের ওভাল। প্রত্যেকবারই মনে করা হয়েছিল ভারত চ্যাম্পিয়ন হবে। অথচ কখনও সেমিফাইনাল বা ফাইনালে পৌঁছেও মুখ থুবড়ে পড়েছে ভারত। তাই শুধু দক্ষিণ আফ্রিকাকে 'চোকার্স' বললে নিশ্চয়ই ভুল হবে। ভারতের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপে একের পর এক ম্যাচে ভারত যে দাপট নিয়ে খেলেছে তার তুলনা মেলা ভার। ব্যাপারটা যেন এমন হয়ে গিয়েছিল যে ফাইনাল ম্যাচটায় শুধুমাত্র জিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রফিটা হাতে নেবে 'মেন ইন ব্লু'। আর সেই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই কাল হল। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিনটি বিভাগেই টেক্কা দিয়ে অস্ট্রেলিয়া হেলায় হারিয়ে দিয়েছে ভারতকে। এই নিয়ে ছয়বার বিশ্বকাপ ট্রফি নিজেদের ঘরে নিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। এই পরিস্থিতিতে আরও অন্তত চার বছর অপেক্ষা করতে হবে ভারতকে।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে তবে কী স্নায়ুর চাপ সেমিফাইনাল বা ফাইনালে গিয়ে সামলাতে পারছেন না ভারতীয় ক্রিকেটাররা? তাই বারবার ট্রফির কাছাকাছি গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে? আসল দিনটিতে ব্যাটিং বা বোলিং কোনওটাই ক্লিক করছে না স্নায়ুচাপ নেওয়া যাচ্ছে না বলেই? এই চর্চা ফের শুরু হয়েছে রবিবার রাত থেকেই। আমেদাবাদে ভারতের পরাজয়ে হতাশ গোটা দেশ। এভাবে যে স্বপ্নভঙ্গ হবে সেটা কেউ ভাবতেও পারেননি। কোথায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত থেকে ট্রফি তুলে নেবেন রোহিত শর্মা, সেখানে মোদি ট্রফি তুলে দিলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কের হাতে। যা কিনা দুঃস্বপ্নের মতো তাড়া করে বেড়াচ্ছে ১৪০ কোটি দেশবাসীকে। চার বছর পর বিশ্বকাপে ভারতের এই দলের অনেক ক্রিকেটার থাকবেন না। নিশ্চিত ভাবে বদলে যাবে অধিনায়কের নাম। সেক্ষেত্রে নতুন অধিনায়কের হাত ধরে ভারত আবার বিশ্বকাপ নিয়ে আসতে পারে কিনা সেদিকেই চোখ থাকবে কোটি কোটি ক্রীড়াপ্রেমীর।