এক চিলতে মাটির ঘর থেকে স্বপ্ন জয়, বাংলার অচিন্ত্যর হাত ধরে কমনওয়েলথ গেমসে সোনা

এক চিলতে মাটির ঘর থেকে স্বপ্ন জয়, বাংলার অচিন্ত্যর হাত ধরে কমনওয়েলথ গেমসে সোনা

কলকাতা: বাঙালি ছেলের হাত ধরে অবশেষে কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জয় ভারতের৷ ভোরোত্তোলনে সোনা জিতলেন বাংলার অচিন্ত্য শিউলি৷  এবারের কমনওয়েলথে তিনিই প্রথম বাঙালি প্রতিযোগী যিনি সোনা জিতলেন৷ সেই সঙ্গে গেমস রেকর্ডও গড়লেন অচিন্ত্য৷

আরও পড়ুন- বাবা পান বিক্রেতা, ভারোত্তোলনে রুপো জিতলেন ভারতের সঙ্কেত, চোটে অধরা সোনা

ভারোত্তোলনের ৭৩ কিলো বিভাগে স্ন্যাচিংয়ে খুব সহজেই রেকর্ড গড়েন অচিন্ত্য। প্রথম চেষ্টায় তিনি তোলেন ১৩৭ কিলো। পরের বার ১৪০ কিলো এবং শেষ বার ১৪৩ কিলো। সেই সঙ্গেই গড়েন গেমস রেকর্ড৷ অন্যদিকে, মালয়েশিয়ার মুহম্মদ এরি শেষ চেষ্টায় ১৩৮ কিলো তোলেন। 

ক্লিন এবং জার্ক বিভাগে প্রথম চেষ্টাতেই অচিন্ত্য তুলে নেন ১৬৬ কিলো। দ্বিতীয়বার বার ১৭০ কিলো তুলতে গিয়ে ব্যর্থ হলেও তৃতীয় চেষ্টায় সেই ওজন তুলে দেন তিনি। মোট ৩১৩ কিলো তুলে গেমস রেকর্ড গড়েন বঙ্গতনয়। 

পদক জয়ের পর অচিন্ত্য বলেন, ‘‘আমার লড়াইটা ছিল নিজের সঙ্গে। এখানে সোনা জিততে আসিনি। নিজেকে টপকানোর চেষ্টা করেছিলাম। সেটা পারিনি বলে খারাপ লাগছে। আজকের এই পদক আমার দাদা এবং কোচকে উৎসর্গ করছি। বাবা মারা যাওয়ার পর দাদাই আমার জন্য সব কিছু করেছে। দাদা নিজেও একসময় ভারোত্তোলন করত। কিন্তু, আমাকে তৈরি করার জন্য ছেড়ে দিয়েছে।’’

হাওড়ার দেউলপুরে টিনের ছাদওয়ালা মাটির একফালি বাড়িই অচিন্ত্যের ঠিকানা। বাবা নেই৷ মা জরির কাজ করে সংসার চালান৷ সাপ্তাহিক রোজগার খুব বেশি হলে পাঁচশো টাকা। তা-ও নিয়মিত কাজ নয়। দাদা অলক শিউলি দমকল দফতরের অস্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজ করেন। কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপের দু’টি বিভাগে জোড়া স্বর্পদক, যুব এশিয়ান চ্যাম্পিনশিপে রুপো, বাংলার হয়ে জেতা তিনটি সোনা-সহ আটটি পদকের জায়গা ঘরের কোণের পেরেকে। পদক সাজিয়ে রাখার মতো আলমারিটুকুও নেই৷ অভাবকে হারিয়ে অচিন্ত্য এগিয়ে চলেছে শুধুমাত্র মনের জেদে।