মার্তিনেজের দস্তানার উপরে ভর করেই টাইব্রেকারে কলম্বিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনা

মার্তিনেজের দস্তানার উপরে ভর করেই টাইব্রেকারে কলম্বিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনা

ব্রাজিল: আবার সেই কোপার নকআউট পর্বে টাইব্রেকারের মুখোমুখি আর্জেন্টিনা। ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে কোপার ফাইনালে এই টাইব্রেকারেই হারতে হয়েছিল লিওনেল মেসিদের। বিশেষ করে কোপার টাইব্রেকারে তাদের রেকর্ড খুব একটা ভালো নয়। তাই কোপা আমেরিকা ২০২১-এর সেমিফাইনালে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচটা শেষমেশ টাইব্রেকারে যেতেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল বিশ্ব জুড়ে কোটি কোটি আর্জেন্টিনীয় সমর্থকদের। ইতিহাস ফিরবে কী আবার? প্রশ্ন ছিল একটাই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হল না। টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে কলম্বিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে পথে পা বাড়াল লিও মেসির আর্জেন্টিনা, যেখানে তারা মুখোমুখি হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের সঙ্গে।

ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার ভোর সাড়ে ছ’টায় কোপা আমেরিকার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ব্রাসিলিয়ায় কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল আর্জেন্টিনা। একদম প্রথম থেকেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে আক্রমণে উঠেছিলেন মেসিরা। ম্যাচের বয়স যখন মাত্র ৭ মিনিট তখনই কলম্বিয়ার ডি-বক্সের মধ্যে মেসির বাড়িয়ে দেওয়া পাস এক শটেই গোলের দিয়ে ঠেলে দেন লাউতারো মার্তিনেজ। এক গোলে এগিয়ে গিয়ে রক্ষণে মনোনিবেশ করে আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধে গোলের রাস্তা খুলতে পারেনি কলম্বিয়া। তবে প্রচুর সুযোগ তৈরি করেছে তারা। দ্বিতীয়ার্ধের খেলার ৬১ মিনিটে বাঁদিক থেকে বল নিয়ে আর্জেন্টিনার পেনাল্টি বক্সে ঢুকে ভারসাম্য না রাখতে পেরে পড়ে যাওয়ার ঠিক আগে দুর্ভেদ্য কোণ থেকে আর্জেন্টিনার জালে বল জড়িয়ে ম্যাচে সমতা ফেরান কলম্বিয়ার লুকাস ডিয়াজ।

এরপর আর্জেন্টিনার হয়ে পরিবর্ত হিসেবে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া মাঠে নামলে আক্রমণে জোর পায় তারা। মেসির শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে চলে আসে। ৭২ মিনিটে ডি মারিয়ার আক্রমণ রুখতে এগিয়ে আসেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ওসপিনা। কিন্তু ডি মারিয়া তাকে পিছনে ফেলে দেন। কলম্বিয়ার একেবারে অরক্ষিত গোলে বল না পাঠিয়ে তিনি বল বাড়িয়ে দেন লাউতারো মার্তিনেজের কাছে। তিনি যতক্ষণে তা তিনকাঠিতে রাখতেন ততক্ষণে কলম্বিয়ার ডিফেন্ডাররা চলে এসে তার শট আটকে দেন। শেষ মুহূর্তে পরপর দুটি ফ্রি-কিক নিজের পছন্দসই এলাকায় পেয়েও গোল করতে পারেননি মেসি।

নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলায় গোলের মীমাংসা না হওয়ায় খেলা সরাসরি চলে যায় টাইব্রেকারে। যেখানে কলম্বিয়ার হয়ে প্রথম পেনাল্টিতেই গোল করেন জুয়ান কুয়াদ্রাদো। এরপর একরাশ চাপ মাথায় নিয়ে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম শট নিতে আসেন লিওনেল মেসি। তিনি আসেন এবং কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ওসপিনাকে পরাস্ত করে জালে বল জড়িয়ে চলে যান। এরপরে কলম্বিয়ার স্যাঞ্চেজের শট বাঁচিয়ে দেন ম্যাচের নায়ক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। কলম্বিয়ার মিনা ও কর্দোনার শটও আটকে দেন মার্তিনেজ। আর্জেন্টিনার পারাদেস ও লাউতারো মার্তিনেজের গোলে এগিয়ে গিয়ে জয় ছিনিয়ে নেয় নীল-সাদাজার্সিধারীরা। টাইব্রেকারে তিনটি শট বাঁচিয়ে দিয়ে ম্যাচের নায়ক নির্বাচিত হন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। তার দস্তানার উপরে ভর করেই ফাইনালে পা রাখল লিও মেসিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 13 =