নিজস্ব প্রতিনিধি: বিশ্ব জুড়ে ফুটবল খেলাই যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সেটা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। তবু বিশ্বের ফুটবল নিয়ামক সংস্থা ফিফা চাইছে ফুটবল আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠুক। আর সেই লক্ষ্যে তিন বছর পরে অর্থাৎ ২০২৫ সাল থেকে ফিফা বিশ্ব ক্লাবকাপ টুর্নামেন্ট আরও বড় আকারে করতে চায়। এমনটাই ঘোষণা করেছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ানি ইনফ্যান্টিনো। তবে ফিফা প্রেসিডেন্ট যে ঘোষণা করেছেন সেটা নতুন কিছু নয়। কারণ ক্লাব বিশ্বকাপ দীর্ঘদিন ধরেই হয়ে আসছে। কিন্তু সেখানে বেশি ক্লাব অংশগ্রহণ করে না বলেই সেটি সেভাবে আলোচিত হয় না। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ অনেক বেশি জনপ্রিয়। আগামী বছর মরক্কোয় বিশ্ব ক্লাব কাপ হবে। তবে সেখানে খুব বেশি ক্লাব অংশগ্রহণ করবে না। তাই ফিফা প্রেসিডেন্ট চাইছেন আগামী দিনে বিশ্ব ক্লাব কাপের পরিচিতি বহু গুণে বাড়ুক। ফুটবল নিয়ে আরও বেশি চর্চা হোক বিশ্বজুড়ে। তাই তিন বছর বাদে ৩২টি ক্লাবকে নিয়ে বিশ্ব ক্লাবকাপ করার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। তবে বিভিন্ন দেশের কোন কোন ক্লাব তাতে অংশ নেবে, সেখানে খেলার যোগ্যতার মাপকাঠি কি, ইত্যাদি সম্পর্কে ফিফা প্রেসিডেন্ট কিছু বলেননি।
কিন্তু ফিফা এই কাজ কতটা সফল ভাবে করতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ বিশ্ব ক্লাব কাপ হলে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জনপ্রিয়তা স্বাভাবিকভাবেই কমে যাবে। তাই ইউরোপকে চটিয়ে এই মেগা টুর্নামেন্ট ফিফা কতটা সফল ভাবে করতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। আসলে এই মুহূর্তে ইউরোপের দেশগুলির লিগের সঙ্গে অন্য ক্লাব টুর্নামেন্টের তুলনাই হয় না। স্প্যানিশ লিগ, জার্মানির বুন্দেশলিগা, ফরাসি লিগ, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, ইতালির সেরি-১ প্রভৃতিতে যে মানের ফুটবল হয় তা কোথাও দেখা যায় না। বিভিন্ন মহাদেশের নামী ফুটবলারদের সিংহভাগ এই সমস্ত লিগে খেলে থাকেন। তাই প্রতি তিন বছর অন্তর বিশ্ব ক্লাব কাপ করার যে প্রস্তাব সামনে এনেছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট, তাতে ইউরোপের সমর্থন থাকবে কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বর্তমানে ক্লাব বিশ্বকাপে খেলে সাতটি ক্লাব। দশ দিনেই শেষ হয়ে যায় সেই টুর্নামেন্ট। তাই এই টুর্নামেন্টকে আরও বড় চেহারা দিতে চায় ফিফা। যদিও নিন্দুকদের দাবি এভাবে ফিফা আরও বেশি টাকা রোজগার করতে চাইছে।
এখন প্রশ্ন এই টুর্নামেন্ট যদি হয় তাতে কি ভারতের মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল খেলতে পারবে? কারণ এই দুটি ক্লাবই শতাব্দীপ্রাচীন। তাদের কোটি কোটি সমর্থক রয়েছেন। কিন্তু এটাও ঠিক যে ফিফার বিশ্ব ক্রমপর্যায়ের তালিকায় ভারত বর্তমানে ১০৬ নম্বর স্থানে রয়েছে। এশিয়ার মধ্যেও তাদের স্থান প্রথম কুড়ির মধ্যে নেই। তবে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল কীভাবে খেলতে পারে বিশ্ব ক্লাব কাপে? সেক্ষেত্রে একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা রয়েছে। ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা বা এশিয়ার বেশ কিছু নামী ক্লাব যদি তাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করে, সেক্ষেত্রে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের জন্য দরজা খুলে গেলেও যেতে পারে। যদিও এ বিষয়ে ফিফা কিছুই জানায়নি। পরের বিশ্বকাপ ২০২৬ সালে। তার আগের বছর ৩২টি দেশের ক্লাবকে নিয়ে বিশ্ব ক্লাব কাপ করার কথা বলেছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট ইনফ্যান্টিনো। কিন্তু সেই সময় বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জনের জন্য প্রত্যেকটি দেশ ব্যস্ত থাকবে কোয়ালিফাইং রাউন্ডে খেলার জন্য। তাই তখন ক্লাব কাপ কতটা সফলভাবে করা সম্ভব হবে সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তাই ফিফা প্রেসিডেন্ট যে ঘোষণা করেছেন তা আগামী দিনে কতটা বাস্তবায়িত হয় সেদিকেই চোখ থাকবে ফুটবলপ্রেমীদের।