প্যারিস: ক্লে কোর্টে তাকে হারানোর স্পর্ধা খুব একটা দেখা যায় না। বিপক্ষ বরাবর কুঁকড়ে থাকে। তিনি হলেন ‘কিং অফ ক্লে’। আরও একবার ফরাসি ওপেনের ফাইনালে রাফায়েল নাদাল। জীবনের ১৪ তম ফরাসি ওপেন জেতার জন্য মাঠে নামছেন রাফা।
প্রতিপক্ষ নিতান্তই আনকোরা। যুযুধান দু’পক্ষ বলতে যা বোঝায়, এ ক্ষেত্রে তেমন হচ্ছে না। তাহলে কি একপেশে ফাইনাল দেখা যাবে ফরাসি ওপেন পুরুষদের টেনিস ফাইনালে? সমালোচকরা বলছেন, বিপক্ষ ক্যাস্পার রুড বিনা যুদ্ধে রাফালকে জমি ছেড়ে দেবেন না। রাফালের আক্রমণ প্রতিহত করতে পারলে, সেটি হবে যথেষ্ট কৃতিত্বের। এবারেও ফরাসি ওপেনে রাফায়েল নাদাল আন্ডারডগ হিসেবেই থাকছেন। একদিকে রাফা কিংবদন্তি। অন্যদিকে ক্যাস্পার তারুণ্যের প্রতিভা।
নাদালের অন্যতম প্রতিপক্ষ ছিলেন নোভাক জকোভিচ। কোয়ার্টার ফাইনালে নাদালের কাছে তিনি হেরে ফরাসি ওপেন থেকে বিদায় নিয়েছেন। কাজেই পথের কাঁটা নাদালের সামনে আর ছিল না কার্যত না খেলেই সেমিফাইনালে জয় পেয়েছিলেন নাদাল। বিপক্ষ জেরেভ গোঁড়ালির চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যান। যদিও সেই জয় কখনও চাননি রাফা। ১৩ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন নাদাল। এবার জিতলে ১৪ বার ফরাসি ওপেন জেতার খেতাব থাকবে তার কাছে। শুধু তাই নয়, এবার ফরাসি ওপেন জিতলে ২২ তম গ্র্যান্ড স্লাম পাবেন নাদাল। কাজেই ফাইনালে তিনি আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠবেন। একথা বলাই যায়।
ফাইনালে বরাবর নাদাল অন্য ধরনের খেলা প্রদর্শন করেন। যে কোনও প্রতিপক্ষের কাছে তিনি হয়ে ওঠেন ভয়ঙ্কর, বিধ্বংসী। রজার ফেডেরার হোক বা জকোভিচ দুজনেই রাফাকে কখনও একচুল জমিও ছেড়ে দেননি। তারা দুজনেই বলেছেন, ফাইনালে রাফা অন্য মানুষ হয়ে যান। টেনিস র্যাকেট হাতে নিলে ফাইনালে রাফাকে সামলানো মুশকিল। কাজেই অনেকটা পিছিয়ে থাকা ক্যাস্পার রুড কিছুটা হলেও চাপেই থাকবেন। এ কথা বলা যায়। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রুড এখন অবধি মাত্র আটটি খেতাব জিতেছেন। অন্যদিকে নাদালের ক্যারিয়ারে ৯১ টি খেতাব রয়েছে। ফাইনাল নিয়ে নাদাল একটাও কথা বলতে চাইছেন না। লড়াই হবে মাঠের মধ্যে। তখন তিনি তার রূপ দেখাবেন।
ক্যাস্পার রুড বলেছেন, ফাইনালে রাখালের মুখোমুখি হওয়া সত্যিই এক বড় চ্যালেঞ্জ। ১৩ বার তিনি ফরাসি ওপেন জিতেছেন। কাজেই কাজটি যথেষ্ট কঠিন। যারা রাফার বিরুদ্ধে ফাইনালে খেলেছেন, তারা বরাবর চেষ্টা করেছেন। সেই একই চেষ্টা তাকে করতে হবে। ক্যাস্পার কোর্টে রাফার সঙ্গে খেলা উপভোগ করতে চান। ফরাসি ওপেনে মাত্র দুজন রাফাকে হারিয়েছিলেন। তারা হলেন নোভাক জকোভিচ ও রবিন সডারলিং। রবিনের কাছ রাফার হার এক মহীরুহ পতন ছিল সেই সময়। এমনই মনে করা হয়েছিল। টেনিস দুনিয়া বিস্মিত হয়েছিল সেই ঘটনায়।
৩৬ বছরের নাদাল এখনও সমানভাবে তারুণ্যে ভরপুর। হাঁটুর চোট সারিয়ে তিনি এখন তার পুরনো ছন্দে রয়েছেন। এর আগে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছেন তিনি। এরপর রয়েছে উইম্বলডন। কাজেই ফরাসি ওপেন জিতলে তার আত্মবিশ্বাস একলাফে অনেকটাই বেড়ে যাবে। একথা বলাই যায়। নাদালকে কতটা বিধ্বংসী দেখায়! এখন সেটি দেখার অপেক্ষা। রবিবার নাদাল আরও একবার ক্লে কোর্টে নামছেন জেতার জন্য।