কীভাবে ফিরে এলেন বিশ্বকাপে অনিশ্চিত হয়ে যাওয়া নেইমার? কোন চিকিৎসায় সুস্থ হলেন তিনি?

কীভাবে ফিরে এলেন বিশ্বকাপে অনিশ্চিত হয়ে যাওয়া নেইমার? কোন চিকিৎসায় সুস্থ হলেন তিনি?

দোহা: দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেই দুরন্ত নেইমার দ্য জুনিয়র। তিনি পেনাল্টিতে কেবল গোল করলেনই  না, বরং সতীর্থদের দিয়ে গোলও করালেন। মাঝমাঠ থেকে ফরোয়ার্ড সামলানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ব্রাজিলের নেইমার। প্রি কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে তারই ঝলক দেখা গেল৷ আর নেইমারকে মাঠে পেয়ে রীতিমতো স্বস্তিতে ফিরল ব্রাজিল টিম থেকে সমর্থক, ভক্তরা।

প্রথম ম্যাচে গুরুতর চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে গিয়েছিলেন নেইমার। তিনি কী আদৌ বিশ্বকাপের পরের খেলাগুলোয় দলের হয়ে নামতে পারবেন? সেই আশঙ্কাও মনের মধ্যে সিঁদুরে মেঘ ডেকে এনেছিল। সার্বিয়ার সঙ্গে চোট পেয়ে খুঁড়িয়ে মাঠের বাইরে এসেছিলেন তিনি। জুতো খুলতেই দেখা গিয়েছিল ডান গোড়ালি মারাত্মকভাবে ফুলে গিয়েছে। সেই ছবি দেখে ব্রাজিল সমর্থক ও নেইমার ভক্তরা যারপরনাই ভীত হয়ে উঠেছিল।

জানা গিয়েছিল, পায়ের লিগামেন্টের জালে গুরুতর চোট পেয়েছেন নেইমার। দ্রুত তার চিকিৎসা শুরু হয়ে যায়। কিন্তু আট দিনের মাথাতেই কী করে নেইমার মাঠে ফিরতে পারলেন? একসময় শোনা গিয়েছিল আর হয়তো এই বিশ্বকাপে মাঠে নামতে পারবেন না এই ব্রাজিল তারকা। কোচ তিতে থেকে দলের ফিজিও পর্যন্ত প্রবল দুশ্চিন্তায় ছিলেন নেইমারকে নিয়ে। যাদুমন্ত্রের কোন চিকিৎসায় নেইমার এত দ্রুত সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরলেন?

কী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন নেইমার?  কোন পন্থায় হল নেইমারের চিকিৎসা?  ব্রাজিল দলের তরফের কিছুই এই ব্যাপারে বলা হয়নি। কিন্তু নেইমার নিজেই এই বিষয়ে জানিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। কমপ্রেশন বুট ব্যবহার করেই সাফল্য পেয়েছেন নেইমার৷ কিন্তু এই কমপ্রেশন বুট কী?  নাসার প্রযুক্তিতে এই জুতো বানানো হয়েছে। মহাকাশচারীদের কখনও চোট লাগলে ব্যথা কমানোর জন্য এই জুতো ব্যবহার করা হয়। এই জুতো পরলে শরীরের যেখানে চোট রয়েছে, সেখানে রক্ত সঞ্চালন শুরু হয়ে যায়। ক্ষত, আঘাতও দ্রুত সারতে শুরু করে।

নেইমার সেই জুতো আনিয়ে পায়ে পরেন। আর তারপর থেকেই শুরু হয় সুস্থ হওয়া। এই জুতোর ভিডিও নেইমার নিজের ইনস্টাগ্রামেও পোস্ট করেছিলেন। একসময় নেইমারের হাঁটার মতো অবস্থাও ছিল না। টানা পাঁচ দিন নেইমার এই জুতো পরেছিলেন। এছাড়াও গোড়ালির ব্যথা ও ফোলা কমাতে ওয়াটার থেরাপিও শুরু হয়। সুইমিং পুলে জলের ভিতর নেইমারকে হাঁটানো হয়। জলের নীচে পায়ে ব্যথা অনুভব হলেই উঠে পড়তেন নেইমার৷ মিনিট ২০ এভাবে প্রথম দিন জলের মধ্যে হেঁটেছিলেন নেইমার।

এছাড়াও ওষুধপত্র ছাড়াও পায়ের সম্পূর্ণ বিশ্রাম ছিল সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এক কয়েক দিন নেইমারের পা ঝুলিয়ে রাখা সম্পূর্ণ নিষেধ ছিল। সাতদিনের মাথায় নেইমার মাঠে বল নিয়ে অনুশীলন শুরু করেছিলেন। আর কোরিয়ার ম্যাচে তিনি এবার পুরনো মেজাজে। নতুন লুকে চলে এসেছেন নেইমার। মাথার চুলে বাহারি সোনালি রঙ হয়েছে। এক একটি গোল হওয়ার পরেই শুরু করেছেন সাম্বা নাচ। আর এই নেইমারকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন ব্রাজিল সমর্থকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 3 =