মোনালিসার চোখের রহস্যভেদ বিজ্ঞানীদের

আনুমানিক ১৫০৩ থেকে ১৫০৬ সালের মধ্যে লিওনার্দো দা ভিঞ্চি তাঁর সব থেকে আলোচিত ছবি ‘মোনা লিসা’ এঁকেছিলেন। তার পর থেকে আজ পর্যন্ত এই ছবিকে ঘিরে ক্রমাগত পাক খেয়েছে বিভিন্ন প্রকারের রহস্য। সব থেকে বেশি আলোচিত হয়েছে মোনালিসার হাসি ও তার চাহনি। ৫০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে শিল্পরসিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করেছেন, মোনালিসার

মোনালিসার চোখের রহস্যভেদ বিজ্ঞানীদের

আনুমানিক ১৫০৩ থেকে ১৫০৬ সালের মধ্যে লিওনার্দো দা ভিঞ্চি তাঁর সব থেকে আলোচিত ছবি ‘মোনা লিসা’ এঁকেছিলেন। তার পর থেকে আজ পর্যন্ত এই ছবিকে ঘিরে ক্রমাগত পাক খেয়েছে বিভিন্ন প্রকারের রহস্য। সব থেকে বেশি আলোচিত হয়েছে মোনালিসার হাসি ও তার চাহনি। ৫০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে শিল্পরসিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করেছেন, মোনালিসার দৃষ্টি তার দর্শকদের অনুসরণ করে। অর্থাৎ, যে দিক থেকেই মোনালিসাকে দেখা যাক না কেন, সেই মহিলার চোখ সেই দিকেই ঘুরে যায় বলে মনে হয়।

কিন্তু মোনালিসার এই ‘গুণ’-কে সম্প্রতি একেবারেই নাকচ করে দিয়েছে এক গবেষণা। জার্মানির বিয়েলেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ গারনট হর্ৎসম্যান বিস্তারিত আলোচনা-সহ দেখিয়েছেন, মোনালিসার চোখ মোটেই তার দর্শককে অনুসরণ করে না। প্রকৃত পক্ষে মোনালিসার চোখ দর্শকের ডান দিকে ১৫.৪ ডিগ্রিতে কৌণিক ভাবে অবস্থান করে। হর্ৎসম্যানের বক্তব্য— এই বিশেষ কৌণিকতার জন্যই দর্শক বিভ্রান্ত হন।

এই বিভ্রান্তিকেই ‘মোনা লিসা এফেক্ট’ নাম দিয়ে এতকাল বর্ণনা করে আসা হয়েছে। হর্ৎসম্যানের মতে, এই ‘এফেক্ট’ কিন্তু ‘সত্যি’। এই পোর্ট্রেটের দিকে সোজা বা ডান দিক ঘেঁষে তাকালে এই ‘এফেক্ট’ তৈরি হয়। কিন্তু দর্শকের দৃষ্টির ৫ ডিগ্রির মধ্যেই তা আবদ্ধ থাকে। ফলে যে কোনও অ্যাঙ্গল থেকে দেখলেই মোনালিসার দৃষ্টি তাঁর দিকে ঘুরে যায় না।

হর্ৎসম্যান জানিয়েছেন, দীর্ঘক্ষণ মোনালিসার দিকে তাকিয়ে থাকলে এই ‘এফেক্ট’ আর থাকে না। মোনালিসার চোখ ডান দিকে তাকিয়ে রয়েছে বলেই মনে হয়। দীর্ঘ দিন ধরে মোনালিসার চোখ ও দর্শকের চোখের স্টাডি থেকেই এই সিদ্ধান্তে এসেছেন হর্ৎসম্যান ও তাঁর সহযোগীরা। তাঁদের বক্তব্যের মূল কথা হল— মোনালিসার চোখ নিয়ে এতকাল চলে আসা এই ধারণা কিংবদন্তি মাত্র। ওপেন অ্যাকসেস জার্নাল ‘আই-পারসেপশন’-এ তাঁদের এই গবেষণা নিবন্ধ আকারে প্রকাশিত হয়েছে গত ৭ জানুয়ারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *