কলকাতা: ভূমিকম্পে যে কোনও সময় মুহূর্তে তছনছ হয়ে যেতে পারে কলকাতা সহ বিস্তীর্ণ এলাকা৷ আইআইটি খড়্গপুরের এক গবেষকদলের সমীক্ষায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য৷ তবে, শুধু কলকাতা নয়, দেশের মোট ছয়টি ভূমিকম্পপ্রবণ শহরের জন্যও একটি মানচিত্র তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক মন্ত্রক৷ কলকাতার পার্কস্ট্রিট, সল্টলেক, নিউটাউন, রাজারহাট, দমদমের মত এলাকায় এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে বলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন৷
সম্প্রতি কলকাতায় ইন্সটিট্যুট অফ টাউন প্ল্যানার্স অফ ইন্ডিয়ার (আইটিপিআই) একটি আলোচনাচক্রে উঠে এসেছিল কলকাতার এই ভূতাত্বিক আশঙ্কার কথা৷আইটিপিআই-এর পূর্বাঞ্চলীয় চেয়ারম্যান তথা নগর পরিকল্পনাবিদ দীপঙ্কর সিংহ বুধবার বলেন, ‘‘কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলের ভূগর্ভের প্রায় ২৫ কিলোমিটার নিচ দিয়ে ইওসিম হিঞ্জ নামে কব্জার আকারের একটা স্তর আছে। ভূগর্ভের বিভিন্ন সংঘাতজনিত শক্তি জমছে সেখানে। এই সঞ্চয়ের পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে ভূকম্পের একটা আশঙ্কা তৈরি হবে।” ‘সিসমোলজিক্যাল মাইক্রোজোনেশন ম্যাপ’ তৈরি করেছে আইআইটি খড়্গপুর। এর মাধ্যমে কলকাতায় ভূমিকম্পের তীব্রতা অনুধাবন করা যাবে৷ ভূমিকম্পের এই কম্পনের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৬.১ থেকে ৬.৮ –এর মধ্যে হতে পারে৷ আগামী অর্ধশতাব্দীতে এই কম্পনের মাত্রা আরও কিছুটা বাড়তে পারে৷
পাশাপাশি এই বিপদ এড়াতে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে তার দিক নির্দেশ পাওয়া যাবে৷ কলকাতা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ভূমিকম্পের ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় চলে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে৷ একইসঙ্গে সবমিলিয়ে ৫০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির কথাও বলা হয়েছে৷ দীপঙ্করবাবু বলেন, “ভারত ও ইওরোপীয় দুই অঞ্চলের পার্বত্য এলাকার মাঝে রয়েছে ভূকম্পপ্রবণ একটা বড় অংশ৷ ওখানে বড় প্রতিক্রিয়া হলে তার প্রভাব এসে পড়তে পারে কলকাতা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত৷ অনেক সময় দূরত্বের জন্য এই প্রভাবের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে৷ এর পাশাপাশি, কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় মাটির প্রকৃতি এবং জলস্তর এমন অবস্থায় আছে যে ভূকম্পে সব মিশে কাদার বিশাল আধার তৈরি হওয়ার আশঙ্কা আছে৷ সেক্ষেত্রে বাড়িঘর ধ্বসে পড়তে পারে৷ সল্টলেক, রাজারহাট এবং বাইপাস-সংলগ্ন বেশ কিছু অঞ্চল এদিক থেকে বিপজ্জনক৷“ ২০১৫ সালে নেপালের ভূমিকম্পের পরে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, এই ভূমিকম্প কিছুই নয়, এখনও আসা বাকি রয়েছে প্রবল ভূমিকম্প৷ সেই ভূমিকম্পের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘দ্যা গ্রেট হিমালয়ান আর্থকোয়েক৷’