ওয়াশিংটন: মানবজাতি হাজার হাজার বছর ধরে এক প্রশ্ন বয়ে চলেছে—”এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা?” সেই চিরন্তন প্রশ্নের উত্তর আজ যেন আরও খানিকটা স্পষ্ট, আরও খানিকটা বাস্তব।
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ Strongest Evidence Of Life
নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মহাকাশ দূরবীক্ষণ যন্ত্র, এক মহাজাগতিক সঙ্কেত পাঠিয়েছে আমাদের কাছে। পৃথিবী থেকে প্রায় ১২৪ আলোকবর্ষ দূরে একটি গ্রহ—K2-18 b—এর বায়ুমণ্ডলে এমন দুটি গ্যাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে, যেগুলি পৃথিবীতে কেবল প্রাণের মাধ্যমেই সৃষ্টি হয়।
এই গ্যাস দুটির নাম—ডাইমিথাইল সালফাইড (DMS) এবং ডাইমিথাইল ডিসালফাইড (DMDS)। আমাদের নিজের গ্রহে এগুলো উৎপন্ন হয় সমুদ্রের অতল গহ্বরে বসবাসকারী ছোট্ট, অথচ জীবনের ভিত্তি গড়া জীবাণুদের হাত ধরে। সেই গন্ধ যেন আজ ছড়িয়ে পড়েছে এক দূরবর্তী জগতে, বহির্বিশ্বের কোনও এক প্রাণপ্রবাহ থেকে।
জীবনের গন্ধ ভেসে এলো মহাকাশ থেকে Strongest Evidence Of Life
এই আবিষ্কার কোনও অলীক কল্পনা নয়। বিজ্ঞান বলছে, এই গ্যাসগুলির উপস্থিতি যদি সত্য হয়—আর এখন পর্যন্ত ৯৯.৭% নিশ্চিতভাবেই তাই মনে করা হচ্ছে—তবে এই গ্রহে জীবনের সম্ভাবনা প্রবল।
অধ্যাপক নিক্কু মাধুসূদন, যিনি এই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি বলেন, “এই মুহূর্তটি শুধু বিজ্ঞান নয়, আমাদের অস্তিত্বের দৃষ্টিকোণ থেকেও যুগান্তকারী। আমরা দেখাতে পেরেছি, বর্তমান প্রযুক্তি দিয়েই বহির্জগতে প্রাণের চিহ্ন শনাক্ত করা সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন, “এই গ্রহটি হতে পারে একটি ‘হাইসিয়ান ওয়ার্ল্ড’—একটি উষ্ণ, বিশাল জলজগৎ যেখানে প্রাণ বাঁচতে পারে, গড়ে উঠতে পারে, এমনকি বিকশিতও হতে পারে।”
তবুও সাবধানতা জরুরি Strongest Evidence Of Life
এখনও বিজ্ঞানীরা ঘোষণা করছেন না যে সেখানে সত্যিই প্রাণ আছে। তবে এটি এক প্রবল সম্ভাবনার সিগন্যাল—একটি বায়োসিগনেচার, যা হয়তো প্রাণের অস্তিত্বের প্রমাণ হতে পারে, আর হয়তো শুধু এক অজানা রাসায়নিক বিক্রিয়া।
তবে বিজ্ঞান এখানেই থেমে থাকে না। মাধুসূদন বলেন, “আমাদের আরও ২-৩ বার এই পর্যবেক্ষণ পুনরাবৃত্তি করতে হবে। আরও গবেষণা করতে হবে, বিকল্প ব্যাখ্যা খুঁজতে হবে। কেননা সত্যকে পাওয়ার জন্য বিজ্ঞান সবসময় নিজের প্রশ্ন নিজেকেই করে।”
মহাজাগতিক ইতিহাসের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে Strongest Evidence Of Life
সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষ আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবতে শিখেছে। আজ, সেই আকাশে তাকিয়ে আমরা হয়তো প্রথমবারের মতো একটা নরম ফিসফিসানি শুনতে পাচ্ছি—জীবনের ডাক। কল্পনা নয়, কবিতা নয়, বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছে প্রাণের সম্ভাব্য চিহ্ন।
পৃথিবী, যেখানে আমাদের জন্ম, সেই অনন্য গ্রহ হয়তো আর অনন্য নয়। হয়তো অনেক দূরে, কোনও বিশাল সাগরের জলে, কেমন এক মাইক্রোবায়াল প্রাণ আজও বেঁচে আছে, ঠিক আমাদের মতোই অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য লড়ছে।
Science: NASA’s James Webb Space Telescope detects biosignatures on exoplanet K2-18b, sparking hope for extraterrestrial life. Scientists find gases linked to life processes, marking a breakthrough in space exploration and astrobiology. Stay updated on this discovery!