Aajbikel

চন্দ্রজয়ের পর এবার মিশন সূর্য! মঙ্গল, শুক্রকেও হাতে পাওয়ার প্রস্তুতি শুরু ইসরোর

 | 
আদিত্য এল ১

কলকাতা:  চাঁদের দেশে পাড়ি দিয়ে সফল ভারত৷ ১৪০ কোটি দেশবাসীর স্বপ্ন পূরণ করে বুধের সন্ধ্যায় চাঁদের মাটিতে পা রেখেছে ভারতের তৈরি তৃতীয় চন্দ্রযান৷ চন্দ্রজয়ের পর থেকেই আবেগে ভাসছে গোটা দেশ৷ চলছে ইতিহাস সৃষ্টির উদযাপন৷ এদিকে, লক্ষ্যে পৌঁছেই কাজ শুরু করে দিয়েছে চন্দ্রযান৷ আপাতত ১৪ দিন চন্দ্রপৃষ্ঠে ঘুরে ফিরে কাজ চালাবে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ এবং রোভার ‘প্রজ্ঞান’।


এখন দেশবাসীর মনে উঁকি দিচ্ছে আরও একটা প্রশ্ন৷ চন্দ্রাভিযান তো সফল৷ এর পরের মিশন কী? তাহলে বলে রাখি, চন্দ্রজয়েই কিন্তু থমকে যাবে না ইসরোর ইতিহাস গড়ার যাত্রা। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার হাতে রয়েছে একাধিক পরিকল্পনা। মহাকাশে আধিপত্য বিস্তারের লড়াইতে কোমর বেঁধেই নামছে ইসরো৷ চলছে জোর কদমে প্রস্তুতি৷ তাদের পরবর্তী লক্ষ্যে সূর্য৷ সৌর জগতের অধিপতির খোঁজখবর নিতে আসরে নামবে আদিত্য-এল-১ (Aditya L-1)৷ বৃহস্পতিবার ইসরোর আমদাবাদের স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের ডিরেক্টর নীলেশ এম দেশাই জানান, এই মিশনের যাবতীয় কাজ ও প্রস্তুতি শেষলগ্নে পৌঁছেছ। অপেক্ষা শুধু উড়ানের।


ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমানাথ জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই আদিত্য-এল-১ উপগ্রহটি উৎক্ষেপণ করা হবে। শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়া স্পেশ সেন্টার থেকে পিএসএলভি রকেটে চেপে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দেবে এই উপগ্রহ। স্বাধীনতা দিবসের একদিন আগে ১৪ অগাস্ট ইসরোর তরফে জানানো হয়েছিল, আদিত্য-এল-১ ভারতের প্রথম সৌর মিশন হতে চলেছে। এদিন এস সোমনাথ জানান, সূর্যের বায়ুমণ্ডল সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করাই হবে এই উপগ্রহের কাজ৷ প্রায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করে গন্তব্যে পৌঁছবে সে। লক্ষে পৌঁছতে সময় লাগবে প্রায় ১২০ দিন। জানা গিয়েছে, এই মহাকাশযানটিকে সূর্য ও পৃথিবীর মধ্যে একটি ‘হ্যালো’ কক্ষপথের এল-১ পয়েন্টে স্থাপন করা হবে।


এই উপগ্রহের নাম আদিত্য-এল-১ কেন? আসলে সূর্যের অপর নাম আদিত্য। সেই মতোই এই কৃত্রিম উপগ্রহটির নামকরণ করা হয়েছে। আদিত্য-এল-১ অভিযানের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৩৭৮.৫৩ কোটি টাকা। এই অভিযান সফল হলে সৌরঝড়ের আগাম পূর্বাভাস দিতে সক্ষম হবে ইসরো। পাশাপাশি সূর্যের আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল হতে পারবে৷ 

এতো গেল মিশন সূর্যের কথা৷ আদিত্য-এল-১-এর পাশাপাশি আরও এক স্বপ্নের মহাকাশ অভিযান নিয়ে তৎপর হয়ে উঠেছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা৷ ইসরোর ইতিহাসে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে ২০২৪ সালের এই মহাকাশ অভিযান৷ যার নাম ‘গগনযান’। কারণ. এটিই হতে চলেছে মহাকাশের গভীরে ভারতের প্রথম মানব অভিযান। যদিও মহাকাশে মানবযাত্রার আগে পরীক্ষামূলক ভাবে দু’টি মানবহীন যানও মহাকাশে পাঠানো হবে৷ গগনযান সম্পূর্ণ ভারতের নিজস্ব অভিযান। এর জন্য
বরাদ্দ হয়েছে ৯,০২৩ কোটি টাকা। এই অভিযান সফল হলে, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং শিল্পে ভারতের অগ্রগতি মাইলফলক ছোবে৷


এর পাশাপাশি আরও কতগুলি মিশন রয়েছে ইসরোর হাতে৷ ২০২৪ সালে আমেরিকার সঙ্গে জোট বেঁধে রাডার নিসার (নাসা-ইসরো অ্যাপারচার র্যা ডার) পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রের পরিবর্তনগুলি বোঝার জন্য পৃথিবী কক্ষপথে পাঠানো হবে এই রাডারকে৷ এছাড়াও মঙ্গলগ্রহেও মহাকাশযান পাঠানোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। এই অভিযানের নাম হবে মঙ্গলযান-২। অভিযান হবে শুক্রেও৷ আপাতত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে ইসরোর শুক্রযান-১-এর প্রস্তুতি। এই মিশনের জন্য খরচ হবে ৫০০ থেকে ১০০০ কোটি টাকা।
 

Around The Web

Trending News

You May like