Aajbikel

গভীর খরস্রোতা নদী বইত মঙ্গলে, ছবি পাঠাল নাসা-র যান

 | 
মঙ্গল

 কলকাতা: কোনও এক সময় লালগ্রহের বুক চিড়ে বইত স্রোতস্বিনী নদী। কুলকুল শব্দে ভরে উঠল আকাশ বাতাস। সম্ভবত হ্রদও ছিল মঙ্গল গ্রহে। লাল গ্রহ থেকে আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র যান (রোভার) ‘পার্সিভিয়ারেন্স’ ফের বেশ কিছু ছবি পাঠিয়েছে। আর তাতেই মিলেছে উচ্ছল নদীর চিহ্ন। প্রাথমিক ভাবে বিজ্ঞানীদের অনুমান, মঙ্গলেও বইত নদী। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, মঙ্গলে নদীর যে গভীরতা এবং স্রোত সম্পর্কে প্রথমে যে ধারণা করা হয়েছিল, দুই-ই তার চেয়ে বেশি বলে বিজ্ঞানীদের অনুমান। 


গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চের মধ্যে মঙ্গলের যে অংশে নিজের মাস্টক্যাম-জেড ক্যামেরার সাহায্যে ‘পার্সিভিয়ারেন্স’ এই ছবিটি তুলেছে, বিজ্ঞানীরা তাকে বলেন, ‘স্ক্রিঙ্কল হ্যাভ্‌ন’। অনুমান, মঙ্গলের বুকে এই অংশে এক খরস্রোতা ও গভীর নদী ছিল৷ সে কারণেই এই পাথরগুলি এভাবে স্তরে স্তরে বিন্যস্ত। মঙ্গলে জল রয়েছে, সেই সন্ধান আগে মিললেও, এই প্রথম পার্সিভিয়ারেন্স’-এর পাঠানো ছবিতে গভীর স্রোতস্বিনীর  প্রমাণ মিলল। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মঙ্গলের মাটিতে অবতরণ করে নাসার এই মহাকাশযান৷ তারপর থেকে সেখানকার জেজেরো গহ্বর অঞ্চলে অনুসন্ধান চালাচ্ছে সে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, মঙ্গলের উপর দিয়ে বয়ে চলা বিভিন্ন জলধারা এসে মিলিত হত এই জেজেরো গহ্বরেই। এই  গর্ত আসলে নদীর বদ্বীপের একটি অংশ। নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানী অ্যামি উইলিয়ামস এবং তাঁর দলের সদস্যরা মঙ্গলের ওই নদীখাত ও পৃথিবীর নদী বদ্বীপের মধ্যে সদৃশ্য খুঁজে পেয়েছেন।

 
কোটি কোটি বছরে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল অত্যন্ত পাতলা হয়ে গেলেও জলের ভাণ্ডারকে খোয়াতে দেয়নি লাল গ্রহ৷ গোপনে বাঁচিয়ে রেখেছে এবং তাও প্রায় ৩০০ কোটি বছর ধরে। এমনটাই দাবি নাসার। ৬ ফুট লম্বা ও ৪ ফুট চওড়া হিমবাহের ফসিল জানান দিচ্ছে, লাল গ্রহের সারফেসের নীচে এখনও লুকিয়ে রয়েছে জলের ভান্ডার৷ নাসার বিজ্ঞানীদের দাবি, ৪০০ কোটি বছর আগে যে পরিমাণ জলের ধারা বইত মঙ্গলে, তার ৩০ থেকে ৯৯ শতাংশ জল এখনও রয়ে গিয়েছে। তার কিছুটা মঙ্গলপৃষ্ঠের নীচে অত্যন্ত ঠাণ্ডায় জমে বরফ হয়ে রয়েছে, বাকিটা রয়েছে পিঠের উপর ছড়ানো বিভিন্ন খনিজের অন্দরে।


এত দিন জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটা বড় অংশের ধারণা ছিল, জন্মের ৩০০ কোটি বছর পর থেকে ধীরে ধীরে মঙ্গলের জলের ভাণ্ডার উবে গিয়েছে পুরোপুরি। কিন্তু তেমনটা নয়। বরং নিজের জলের ভাণ্ডার এখনও ধরে রাখতে পেরেছে মঙ্গল,  তেমনটাই দাবি নাসার বিজ্ঞানীদের।

Around The Web

Trending News

You May like