ওয়াশিংটন: সংক্রমণ বাড়ছে করোনার সেই সঙ্গে বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা এই মারণ ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরি করতে একসঙ্গে কাজ করছেন। এই মুহূর্তে এই মারণ ভাইরাসের একটি নিরাপদ প্রতিষেধক প্রয়োজন যা কিনা এই রোগ ছড়ানোর পাশাপাশি মৃত্যুও রুখতে সক্ষম। এরই মধ্যে একটি ভীষণই উৎসাহব্যঞ্জক খবর এসেছে সূত্র মারফত যে অক্সফোর্ড বা অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড প্রতিষেধকের প্রাথমিক রিপোর্ট খুব শীঘ্রই প্রকাশিত হবে। ২৭ জুলাই মার্কিন বায়োটেক সংস্থা মোডেরনা তাদের প্রতিষেধকের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরুর আগেই এই খবর এল। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দুর্গাপুজোর সময় অক্টোবরে মাঝামাঝি সময়ে বাজারে আসতে পারে অক্সফোর্ড তৈরি করোনা টিকা৷ ত্রিস্তরীয় সুরক্ষা দিতে সক্ষম এই করোনা প্রতিষেধক, প্রাথমিক রিপোর্টে এমনই দাবি গবেষকদের৷
মোডেরনার প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালেই দেখা যায় এই প্রতিষেধক mRNA-1273 নিরাপদ এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে দ্রুত ও শক্তিশালী প্রতিরোধ তৈরি করে। অক্সফোর্ডের কোভিড প্রতিষেধক ChAdOx1 nCoV-19 বিশ্ববিদ্যালের অক্সফোর্ড জেনার ইনস্টিটিউটে তৈরি হযেছে এবং এটির লাই,সেন্স দেওয়া হয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে। তৃতীয় পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়ালে থাকা এই প্রতিষেধক কোভিড ১৯ ঠেকাতে পারে কিনা সেই পরীক্ষা চলছে ব্যাপক বিস্তৃতিতে। তবে প্রতিষেধকের নির্মাতাদের রিপোর্ট দিতে হবে এই প্রতিষেধক নিরাপদ কিনা কিংবা এটি মারণ ভাইরাসের প্রতিরোধে সক্ষম কিনা।
জুলাইয়ের শেষেই মেডিক্যাল জার্নাল ল্যান্সেটে প্রতিষেধকের নির্মাতাদের প্রথম পর্যায়ের গবেষণার তথ্য প্রকাশের কথা ছিল। কিন্তু তারা দেখেন যে এটি এর মধ্যে যা প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে তা যথেষ্ট উৎসাহদায়ক। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন কবে তারা এই প্রথমিক পর্যায়ের রিপোর্ট প্রকাশ করবেন তা বলতে পারছেন না। তিনি আরও জানান, বিজ্ঞান সংক্রান্ত এক জার্নালে এই তথ্য প্রকাশের নির্ধারিত দিনক্ষণের জন্যই অপেক্ষা করছে টিম। ChAdOx1 nCoV-19 প্রতিষেধক তৈরি হয়েছে সাধারণ একটি দুর্বল সর্দির ভাইরাস বা অ্যাডিনোভাইরাস থেকে।
অক্সফোর্ড ভ্যাক্সিন গ্রুপ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এই পরীক্ষামূলক প্রতিষেধক SARS-COV-2-র স্পাইক প্রোটিনটি ব্যাখ্যা করে তার ভিত্তিতেই তৈরি। প্রতিষেধকটিতে SARS-COV-2 –র সার্ফেসে থাকা স্পাইক গ্লাইকোপ্রেটিনের মত জেনেটিক মেটেরিয়াল ব্যবহার করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন ChAdOx1 nCoV-19 মানুষের শরীরকে স্পাইক গ্লাইকোপ্রোটিন চেনাতে পারবে এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিরোঝ তৈরিতে সক্ষম হবে। WHO-র প্রধান বৈজ্ঞানিক ডক্টর সৌম্যা স্বামীনাথন জানান অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই প্রতিষেধক উন্নত প্রযুক্তির ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত বিশ্বের মধ্যে সর্বাধুনিক। সাম্প্রতিকে গোটা বিশ্বে ১০০টি প্রতিষেধকের ওপর কাজ চলছে তার মধ্যে ২১টির ক্লিনিকাল ইভ্যালুয়েশন চলছে।