শিশুপালনে বিপ্লব! এতকাল ধরে বয়ে আসা কহাবৎ, দীর্ঘকালের লিঙ্গভিত্তিক বিতর্ক, সব কিছুরই সমাধান এ বার। শুনতে কিম্ভুত লাগলেও সত্যি। বাবারাও পারবেন সন্তানকে স্তন্যদান করতে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘মিরর’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, শিশুপালনে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের ইতি ঘটতে চলেছে এ বার। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর আবিষ্কার এমনই এক ‘কিট’, যা পুরুষদেরও স্তন্যদান করার সুযোগ দিচ্ছে। মারি-ক্লেয়ার স্প্রিংহ্যাম লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সেন্ট মার্টিন’স-এর শিক্ষার্থী। তিনি জানিয়েছেন তিনি একটি ‘চেস্টফিডিং কিট’ তৈরি সম্পূর্ণ করার পথে। স্প্রিংহ্যাম জানিয়েছেন, এই কিট ব্যবহার করলে স্ত্রী-হরমোন প্রোজেস্টিন ক্রিয়া করতে শুরু করবে পুরুষ-শরীরে। এই হরমোনই দুগ্ধ-উৎপাদক গ্রন্থিগুলিকে সক্রিয় করে তোলে।
এর পরবর্তী স্তরে ডোম্পেরিডোন জাতীয় ওযুধ খেতে হবে পুরুষদের। এই ওযুধ সাধারণত সদ্য-সন্তানবতী মহিলাদের দেওয়া হয়, যাতে তাঁরা সন্তানকে স্তন্যদান করতে কোনও রকম শারীরিক বাধার সম্মুখীন না হন। এই ওষুধ প্রোল্যাকটিন হরমোন উৎপাদনের সহায়ক। এই হরমোনই স্ত্রী-দেহকে স্তন্যদুগ্ধ তৈরির উপযুক্ত করে তোলে।
স্প্রিংহ্যামের মতে, এই পদ্ধতির একটি মাত্র পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এতে পুরুষদেরও স্তন দেখা দেবে। যত দিন তাঁরা এই ‘কিট’ ব্যবহার করবেন, ততদিন এই ‘স্তন’ বজায় থাকবে। স্প্রিংহ্যামের তৈরি ‘কিট’-এ একটি পাম্প ও একটি কম্প্রেশন ভেস্টও থাকবে। এই ভেস্টটি মহিলাদের পরিধেয় ‘মেটারনিটি ব্রা’-এর সমতুল। স্প্রিংহ্যাম আশা করছেন, আগামী ৫ বছরের মধ্যে তাঁর এই কিট বাজারে ছাড়ার উপযোগী হয়ে যাবে।
কিন্তু পুরুষ শরীরে স্ত্রী হরমোন কোনও বিপরীত প্রভাব রাখবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। এই কাণ্ডে শিশুর কোনও ক্ষতি হবে কি না, সেটাও নিশ্চিত নয়। এই সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া না-গেলেও স্প্রিংহ্যামের এই ‘কিট’ ‘মিনিং-সেন্টার্ড ডিজাইন অ্যাওয়ার্ডস’-এর একটি পুরস্কার জিতে নিয়েছে।