রুক্ষ মঙ্গলে ছিল হাজার ফুট পর্যন্ত গভীর সমুদ্র! নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্য

রুক্ষ মঙ্গলে ছিল হাজার ফুট পর্যন্ত গভীর সমুদ্র! নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্য

কলকাতা: মহাকাশের মহাকর্ষণ৷ আগ্রহের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে অবশ্যই রয়েছে লাল গ্রহ৷ মঙ্গলের কথা বলতে গেলেই সবার আগে চোখে ভেসে ওঠে এর লাল রং আর রুক্ষ মাটি৷ সৌরজগতের মঙ্গল খ্যাত তার মরিচা পড়া লোহার কাঠামোর জন্য৷ আমেরিকান স্পেস এজেন্সি জানাচ্ছে, অত্যন্ত শীতল মঙ্গলের গড় তাপমাত্রা মাইনাস ৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইট৷  যা হিমাঙ্কের তাপমাত্রার চেয়ে অনেকটাই কম। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল খুব পাতলা৷ প্রবল শৈত্যের কারণে এখন বরফ ছাড়া জলের আর কোনও অস্তিত্ব নেই। তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় উঠে এসেছে সম্পর্ণ ভিন্ন এক তথ্য৷ জানা গিয়েছে, ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে এই মঙ্গল গ্রহেই ৩০০ মিটার (প্রায় ১,০০০ ফুট) পর্যন্ত গভীর সমুদ্র ছিল। সেখানে টলটল করত জল৷ 

আরও পড়ুন- এবার চাঁদে থাকবে মানুষ! কতদিনের অপেক্ষা? সময় জানিয়ে দিলেন নাসার বিজ্ঞানী

চলতি মাসের ১৭ তারিখ কোপেনহাগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করা হয়েছে৷ যেখানে বলা হয়েছে, মঙ্গলে ছিল সমুদ্রের উপস্থিতি৷ সেন্টার ফর স্টার অ্যান্ড প্ল্যানেট ফরমেশনের প্রফেসর মার্টিন বিজারো একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, “সেই সময় মঙ্গল গ্রহে বরফে ভরপুর গ্রহাণুর বর্ষণ হয়েছিল। এই ঘটনাটি গ্রহের বিবর্তনের প্রথম ১০০ মিলিয়ন বছরের মধ্যে ঘটেছিল। আর একটি আকর্ষণীয় বিষয় হল, এই গ্রহাণুগুলি জৈব অণুও বহন করে যা জীবনের জন্য জৈবিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” তবে বরফের গ্রহাণুগুলি শুধুমাত্র মঙ্গলেই জল পরিবহণ করেছিল তেমনটা নয়, অ্যামিনো অ্যাসিডের মতো বায়োলজিক্যাল উপাদানগুলিও বহন করেছিল।

সর্বশেষ গবেষণার দেখা গিয়েছে, লাল গ্রহে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রাচীন মহাসাগরগুলি কমপক্ষে ৩০০ মিটার গভীর ছিল। মার্টিন বিজারোর কথায়, মঙ্গলের মহাসাগরগুলি এক কিলোমিটার পর্যন্ত গভীরতায় পৌঁছেছিল। তিনি এও বলেন, সেই সময় পৃথিবীর বুকেও হয়তো এত জল ছিল না।

তিনি আরও বলেন, “এই ঘটনা মঙ্গলের জন্মের প্রথম ১০০ মিলিয়ন বছরের মধ্যেই ঘটেছিল। তার পরেই পৃথিবীতে একটা সম্ভাব্য বিপর্যয় নেমে এসেছিল।’’ বিজ্ঞানীরা মনে করেন, পৃথিবী এবং মঙ্গল-আকৃতির কোনও গ্রহের মধ্যে একটি সংঘর্ষ হয়েছিল। সেই শক্তিশালী সংঘর্ষের ফলেই আর্থ-মুন সিস্টেম গঠিত হয় এবং একই সঙ্গে পৃথিবীর সমস্ত সম্ভাব্য জীবনকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়।”

নতুন এই গবেষণার পর বিজ্ঞানীদের হাতে আরও দৃঢ় প্রমাণ চলে এল যে, পৃথিবীর অনেক আগে মঙ্গল গ্রহে প্রাণের উদ্ভবের জন্য সঠিক অবস্থা ছিল।