কলকাতা: এক সময় তাঁর পেশা ছিল সাংবাদিকতা৷ কিন্তু তাঁকে টানত মহাকাশ৷ অনন্তের টানে তাই সাংবাদিকতা ছেড়ে দিল্লি ও চেন্নাইয়ের বাড়ি বেচে দিয়ে পাড়ি দেন মার্কিন মুলুকে৷ সেখানে গিয়ে কিনে ফেলেন দু’দুটি টেলিস্কোপ৷ শুরু হয় তাঁর অনুসন্ধান৷ আর টেলিস্কোপে চোখ রেখেই প্রাক্তন সাংবাদিক খুঁজে বার করে ফেললেন পৃথিবীর পঞ্চম চাঁদ৷ প্রায় পৃথিবীর কক্ষ পথ ধরেই এই আধা চাঁদ একা একা সূর্যের চারপাশে প্রদক্ষিণ করে চলেছে৷
আরও পড়ুন- ‘পাগলের প্রলাপ বকছেন, ব্যবস্থা নেওয়া হবে’, তৃণমূলের নিশানায় শঙ্কর আঢ্য
এই আধা চাঁদের উৎপত্তি হয়েছে চাঁদ থেকেই৷ এবং প্রায় পৃথিবীর কক্ষপথ ঘেঁষেই সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে সে৷ সে কারণেই এতদিন হদিশ মেলেনি এই চাঁদের৷ যা ধরা দিল বিষ্ণু রেড্ডির চোখে৷ এই চাঁদের শরীর গড়ে উঠেছে সিলিকেট ধাতুতে৷ এই ধাতু পৃথিবীতেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে৷ আর রয়েছে চাঁদে৷ এই সিলিকেট পৃথিবীর আশেপাশে থাকা অন্য কোনও গ্রহাণু বা মহাজাগতিক বস্তুতে থাকা কিন্তু সম্ভব নয়৷ ফলে এটি যে চাঁদেরই অংশ তা বুঝতে আর কোনও অসুবিধাই রইল না৷ কোনও এক কালে কোনও গ্রহাণু বা উল্কার ধাক্কায় চাঁদের শরীর থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল এটি৷ যেভাবে পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কয়েকশো কোটি বছর আগে জন্ম হয়েছিল চাঁদের৷
দিল্লির একটি সংবাদমাধ্যমের নিউজ রুম ছেড়ে মহাকাশ গবেষণায় মন দিয়েছিলেন আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিষ্ণু রেড্ডি৷ তিনিই হদিশ দিলেন পৃথিবীর পঞ্চম চাঁদের৷ নীল গ্রহের পঞ্চম আধা চাঁদ৷ জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিভাষায় এটি পরিচিত ‘কোয়াসি স্যাটেলাইট’ নামে। ২০১৬ সালে প্রথম দেখা যায় এটিকে৷ কিন্তু সেই সময় ভাবা হয়েছিল এটা কোনও নিয়ার আর্থ অবজেক্ট৷ বা কোনও ছোট গ্রহাণুর অংশ৷ সেই সময় এটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘২০১৬-এইচও-তিন’। কিন্তু সেই ধারনা যে ভুল, তা বুঝিয়ে দিলেন বিষ্ণু৷ বিষ্ণু ও তাঁর সহযোগীদের গবেষণাপত্রটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘কমিউনিকেশন্স আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট-এ প্রকাশিত হয়েছে৷
ইতিমধ্যেই পৃথিবীর আরও চারটি আধা চাঁদ আবিষ্কৃত হয়েছে। এটি পঞ্চম৷ এদের উৎপত্ত চাঁদ থেকেই। ‘পঞ্চম’-টিকে নিয়ে সংশয় ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের। বিষ্ণু ও তাঁর সহযোগীদের গবেষণা সেই সংশয় দূর করে দিল৷