অনেকটা পৃথিবীর মতোই। কিন্তু চেহারায় ঢের বড়। সূর্যের পরিবার থেকে বহু দূরে অবস্থিত এই গ্রহকে তাই বলা হচ্ছে ‘সুপার আর্থ’। এর নাম দেওয়া হয়েছে জিজে ৬৯৯বি।
বিশ্ববিখ্যাত ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণাপত্র। তাতে জানানো হয়েছে, কী ভাবে এই গ্রহটির সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। জানা গিয়েছে, বার্নার্ড নামের এক নক্ষত্রের চারপাশে পাক খাচ্ছে এই গ্রহ। পৃথিবীর সবথেকে কাছের নক্ষত্রদের তালিকায় এটি দু’নম্বরে। আমাদের থেকে ছয় আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত বার্নার্ড সূর্যের থেকেও অনেক প্রাচীন। যদিও আকারে সূর্যের থেকে ছোট। এই নক্ষত্রটি ‘লাল বামন’ দশায় রয়েছে। খুব ছোট আকার হওয়ার কারণে এদের আয়ু সূর্যের মতো নক্ষত্রদের থেকে বেশি হয়।
গবেষণাপত্রটির প্রধান লেখক স্প্যানিশ ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের গবেষক ইগনাসি রিবাস জানিয়েছেন, ‘‘খুব সাবধানে পর্যবেক্ষণ করে আমরা ৯৯ শতাংশ নিশ্চিত ওই স্থানে একটি গ্রহ রয়েছে।’’ তবে এখনও যে অনেক পর্যবেক্ষণ বাকি রয়েছে তাও জানিয়ে দেন তিনি। বার্নার্ডের চালচলন ভাল করে নিরীক্ষণ করে বিজ্ঞানী বুঝতে পারেন, ওই অঞ্চলে কিছু একটা রয়েছে যা প্রায় ২৩০ দিনের ব্যবধানে নক্ষত্রটিকে প্রদক্ষিণ করছে। পরে দেখা যায়, তাঁদের অনুমান নির্ভুল। ‘সুপার আর্থ’ ২৩৩ দিনে প্রদক্ষিণ করে বার্নার্ডকে। ১৯৯৭ থেকে গবেষণা শুরু করে ২০১৫ সালে তাঁরা এর অস্তিত্ব সম্পর্কে প্রথম ধারণা পান। অবশেষে মিলল প্রমাণ।
আয়তনে পৃথিবীর ৩.২ গুণ এই গ্রহের গড় তাপমাত্রা মাইনাস ১৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা থেকে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত, ওই গ্রহে স্বাভাবিক অবস্থায় জলের কোনও অস্তিত্ব নেই। ফলে প্রাণও হয়তো নেই। আপাতত গ্রহটির অস্তিত্ব সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবেন গবেষকরা। পৃথিবীতে বসে নজরে রাখবেন বহু দূরে অবস্থিত এক মহাপৃথিবীর দিকে।