চাঁদের মাটিতে মিলতে পারে অক্সিজেন, জ্বালানি! হতে পারে বসতি, দাবি গবেষকদের

চাঁদের মাটিতে মিলতে পারে অক্সিজেন, জ্বালানি! হতে পারে বসতি, দাবি গবেষকদের

470700e9811ac5d11777dc273aa4c315

কলকাতা: চাঁদ নিয়ে পৃথিবীর মানুষের আগ্রহের অন্ত নেই৷ চাঁদের থাকার স্বপ্নও দেখেন কেউ কেউ৷ অনেকে তো আবার বিশেষ বিশেষ দিনে প্রিয়জনকে চাঁদের জমিও উপহার দিয়েছেন৷ কিন্তু চাঁদের পিঠে বসবাসের পথে সবচেয়ে বড় বাঁধা হল অক্সিজেন৷ মানুষ যে দীর্ঘ সময় চাঁদে থাকতে পারবে, সেই উপায় ছিল না৷ তবে এবার হয়তো সেই সমস্যা লাঘব হতে চলেছে৷ চাঁদের মাটিতেই তৈরি হবে অক্সিজেন৷ মিলতে পারে জ্বালানিও৷ 

আরও পড়ুন- চাঁদে যে জল রয়েছে তা আসলে পৃথিবীর! পরীক্ষা করতে যাচ্ছে নাসা

চাঁদের মাটি নিয়ে গবেষণার পর চিনের নানজিং ইউনিভার্সিটির দুই গবেষকের দাবি, চাঁদের মাটি অক্সিজেন ও জ্বালানি তৈরির জন্য আদর্শ। চাঁদের পিঠেই অক্সিজেন আর জ্বালানি পাওয়া গেলে অক্সিজেনের ভাঁড়ারে টান পড়ার ঝুঁকি থাকবে না। চাঁদের মাটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এমনটাই জানাচ্ছেন দুই চিনা গবেষক।

জুল নামে একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণালব্ধ তথ্যগুলি৷ সেখানে বলা হয়েছে, গবেষণায় দেখা গিয়ছে চাঁদের পাথুরে মাটিতে এখনও অনেক যৌগ সক্রিয় রয়েছে। ওই সক্রিয় যৌগ থেকেই খুব সহজেই কার্বন ডাই অক্সাইড, অক্সিজেন এবং জ্বালানি উৎপাদন করা সম্ভব। এমনকী চাঁদের মাটিতে প্রচুর পরিমাণে হাইড্রোজেন ও মিথেন গ্যাস রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। এর ফলে চাঁদের মাটিতে বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি চালানো সম্ভব হবে বলে দাবি দুই বিজ্ঞানীর। 

চিনের মহাকাশযান চাঙ্গে ফাইভ চাঁদ থেকে যে মাটি নিয়ে এসেছে, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই বিজ্ঞানী আরও জানিয়েছেন, চাঁদের মাটিতে প্রচুর পরিমাণ লৌহ ও টাইটানিয়াম রয়েছে। চাঁদের মাটি থেকে ভবিষ্যতে অক্সিজেন ও জ্বালানি মিললে, অনেক কম খরচে কম ওজনের মহাকাশযান চাঁদে পাঠানো সম্ভব হবে। তখন পৃথিবী থেকে বয়ে নিয়ে যাওয়া অক্সিজেনের পরিমাণও অনেকটাই কমে যাবে৷ সেই সঙ্গে মহাকাশযানের ওজন হালকা হওয়ায় অভিযানের খরচও কম হবে৷ 

আগামী কয়েক বছরের মধ্য চাঁদে একাধিক অভিযানের পরিকল্পনা রয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসার। এখন চিন চাইছে আমেরিকার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চাঁদে মহাকাশযান পাঠাতে। চিনের নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দুই বিজ্ঞানীর গবেষণা চিনকে চন্দ্রাভিযানের লড়াইয়ে অনেকটাই এগিয়ে রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ 

চিনের নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইংফ্যাং ইয়াও এবং তাঁর সহযোগীরা চাঁদ থেকে সংগ্রহ করা মাটির নমুনা পরীক্ষা করে জানিয়েছেন, এই মাটি অত্যন্ত উন্নতমানের অনুঘটক। এর থেকে সহজেই কার্বন ডাই অক্সাইড ও জল উৎপন্ন করা সম্ভব। ফলে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেনও পাওয়া যাবে সহজেই। আর বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে চাঁদের মাটির মধ্যে রয়েছে মিথেন। এই ধরনের যৌগ চাঁদে সভ্যতা গড়ে তোলার জন্য উপযোগী৷ তবে চাঁদের পাথুরে মাটিতে পৃথিবীর মতো শাক-সবজি ফলানো সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন গবেষকরা৷ এর জন্য নির্ভর করতে হবে পৃথিবীর উপরেই৷