ওয়াশিংটন: সৌর মণ্ডলের একমাত্র নক্ষত্র সূর্যকে নিয়ে সদা তৎপর বিজ্ঞানীরা৷ সূর্যের গতিবিধির উপর সদাই নজর থাকে তাঁদের৷ বলা চলে সূর্য তাঁদের গবেষণার অন্যতম আকর্ষক চরিত্র৷ সম্প্রতি আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে ধরা পড়ল এক চমকে দেওয়া ছবি৷ গত সপ্তাহে এই মহাজাগতিক দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন নাসার বিজ্ঞানীরা। সেই বিরল ঘটনার কয়েক সেকেন্ডের একটি ভিডিয়ো পরে টুইটারে প্রকাশ করেন মহাকাশ আবহাওয়াবিদ ট্যামিথা স্কোভ।
আরও পড়ুন- ভূমিকম্পে গৃহহীনদের পাশে কাতার, ‘আশ্রয়’ দিতে বিশ্বকাপে ব্যবহৃত চলমান কেবিন যাচ্ছে তুরস্কে
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র বলছে, সদ্যই সূর্যের উত্তর প্রান্ত থেকে একটা বড় অংশ খসে পড়েছে। খুব সাধারণ ভাষায় বর্ণনা করতে গেলে বলতে হয়, সূর্যের উত্তর দিকের একটি জায়গা থেকে একটি বড় মাপের চাঁই খসে গিয়েছে। এটি মূলত, সূর্যের পৃষ্ঠদেশ থেকেই খসে পড়েছে৷ গোটা সৌর জগত যাঁকে কেন্দ্র করে ঘুরে চলেছে, সেই প্রকাণ্ড দানবীয় এই নক্ষত্র থেকে এভাবে একটি বিশাল অংশ খসে পড়া তাজ্জব করেছে বিজ্ঞানীদের। এই ঘটনার ফলে আগামীর সংকেত কী হতে পারে, তা অনুধাবনেই ব্যস্ত মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।
সাধারণত দেখা গিয়েছে, সূর্য থেকে বিচ্যুত রশ্মির বিকিরণের ফলে অনেক সময়েই পৃথিবীর যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রভাবিত হয়ে থাকে। সাম্প্রতিক এই মহাজাগতিক ঘটনায় পৃথিবীর উপরে কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
Talk about Polar Vortex! Material from a northern prominence just broke away from the main filament & is now circulating in a massive polar vortex around the north pole of our Star. Implications for understanding the Sun’s atmospheric dynamics above 55° here cannot be overstated! pic.twitter.com/1SKhunaXvP
— Dr. Tamitha Skov (@TamithaSkov) February 2, 2023
সূর্যের একটি খসে পড়া ঘটনা প্রসঙ্গে টুইটার বার্তায় ট্যামিথা লিখেছেন, ‘‘একেই বলে ‘পোলার ভর্টেক্স’! সূর্যের উত্তর মেরুর প্রধান ফিলামেন্ট থেকে একটা বড়সড় অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে এবং ওই জায়গায় একটি ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’’
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মনে করেন, পৃথিবীর দুই মেরুপ্রান্তেই একটি বিশাল জায়গা জুড়ে নিম্নচাপ রয়েছে। সাধারণ ভাষায়, ঠান্ডা হাওয়া ঘড়ির উল্টো দিকে ঘূর্ণনের ফলে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাকে ‘পোলার ভর্টেক্স’ বলা হয়। সাধারণত গ্রীষ্মকালে এটি দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে শীত এলেই এর শক্তি বৃদ্ধি পায়।
নাসা জানাচ্ছে, যে অংশটি সূর্য থেকে খসে পড়েছে সেটি আকারে বিশাল। এর আয়তনও নেহাত কম নয়। এমন ধরনের ঘটনা সূর্যকে কেন্দ্র করে এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে৷ তবে সদ্য ঘটে যাওয়া এই কাণ্ডে অনেকটাই বিস্মিত বিজ্ঞানীরা। জানা গিয়েছে, ৬০ ডিগ্রি অক্ষাংশে সূর্যের এই অংশটি ঘুরে চলছে। ওই এলাকার মধ্যে বায়ুর গতিবেগ ৯৬ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। এই অংশটি খসে পড়ার পর থেকেই তা নিজের গতিতে ঘুরতে শুরু করেছে। এই ঘটনায় বেশ খানিকটা অবাকই হয়েছে বিজ্ঞানী মহল। আপাতত ঘটনার নানান বিবরণের খোঁজ শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>