আকাশ জুড়ে রং-এর খেলা! রামধনু, না অন্যকিছু? প্রকৃতির রহস্যে হতবাক মানুষ

আকাশ জুড়ে রং-এর খেলা! রামধনু, না অন্যকিছু? প্রকৃতির রহস্যে হতবাক মানুষ

কলকাতা:  ঠিক যেন হাতে আঁকা ছবি৷ যেন পরম যত্নে রং-তুলিতে দিয়ে প্রকৃতির ক্যানভাস সাজিয়েছেন শিল্পী৷ এঁকেছেন সাত রং-এর আল্পনা৷ দেখতে রামধনুর মতো হলেও, আদতে তা রামধনু নয়৷ তাহলে আকাশে এই অদ্ভূত রং কীসের? প্রকৃতির এই বিস্ময় দেখে হতবাক চিনের হাইকো শহরের মানুষ৷ এই বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকতে ঘর ছেড়ে রাস্তায় ভিড় জমান তাঁরা৷ বেশ কয়েকজন আবার এই অদ্ভূত দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে নেন৷ তার মধ্যে বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো সোশ্যল মিডিয়ায় ভাইরাল৷ কিন্তু প্রশ্ন হল, এই রং যদি রামধনুর না হয়, তাহলে কীসের? কোনও মহাজাগতিক ঘটনা নয় তো? 

আরও পড়ুন- তাপমাত্রা মাইনাস ৮০! চার মাস পর সূর্যোদয় দেখলেন আন্টার্কটিকার বিজ্ঞানীরা

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ২১ অগাস্ট চিনের আকাশে যে বর্ণিল মেঘ দেখা গিয়েছিল, তা অত্যন্ত বিরল৷ তবে এটা কোনও মহাজাগতিক ঘটনা নয়৷ এটি হল পাইলিয়াস মেঘ৷ একে ‘ক্ল্যাপ ক্লাউড’ বা ‘স্কার্ফ ক্লাউড’ও বলা হয়ে থাকে।   

দ্য ওয়েদার নেটওয়ার্ক সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পাইলিয়াস মেঘ তৈরি হয় কিউমুলাস (কিউমুলোনিম্বাস মেঘ) থেকে। এই কিউমুলাস ক্লাউড থাকে অনেকটা উঁচুতে৷ এই মেঘের উপরের স্তরে বারবার শীতল বাতাসের ধাক্কা দিতে থাকলে, ওই অংশের মেঘে জমে থাকা জলীয় বাষ্প শীতল হয়ে ঘনীভূত হয়ে যায়। সেখান থেকেই জন্ম নেয় পাইলিয়াস মেঘ৷ এই ধরনের মেঘ সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় না। বলা যায়, খুবই বিরল ধরনের মেঘ এটি।

 

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সূর্যের আলো যখন কোণাকুনি ভাবে পাইলিয়াস মেঘের উপর পড়ে, তখন মেঘের ফোঁটা এবং বরফের স্ফটিকগুলির মধ্যে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটে। যার জন্যেই এই রামধনু রঙের সৃষ্টি হয়। তবে আকাশে পাইলিয়াস মেঘের স্থায়িত্ব খুবই কম সময়ের জন্য৷ উপরের মেঘ শীতল হয়ে এই রঙের জন্ম হয়। কিন্তু সেই শীতলতা দ্রুত নীচের স্তরগুলিতে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে সেই রং ক্রমশ হারিয়ে যায়। আর দেখা যায় না আকাশের বুকে ‘শিল্পীর হাতে আঁকা’ সেই রামধনু রং।