নিজস্ব প্রতিনিধি: গত দশ বছরে বিজেপি দেশ জুড়ে নাকি এত উন্নয়ন করেছে যার জেরে তারা চারশো আসন পেরিয়ে যাবে। এই প্রচার নিয়মিত করছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু শুধু এই প্রচার করলে কোনও প্রশ্ন উঠত না। বাস্তবে উন্নয়নের প্রসঙ্গ কম তুলে বিজেপি মূলত বেশি প্রচার করছে হিন্দুত্ব প্রসঙ্গ নিয়ে, এমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের। দলের সর্বস্তরের নেতা-নেত্রী কার্যত সেই ‘লাইনেই’ প্রচার করছেন। আর সেই প্রচারে বারবার উঠে আসছে ‘পিওকে’ অর্থাৎ পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রসঙ্গ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পর এবার এই ইস্যুতে যোগী আদিত্যনাথও রীতিমতো হুঙ্কার দিলেন। তাঁর কথায়,
“নরেন্দ্র মোদিকে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করলেই ছয় মাসের মধ্যেই পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতের সঙ্গে যুক্ত হবে।”
সদ্য মহারাষ্ট্রের পালঘরে দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারে গিয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। সেখানে তিনি বলেছেন,
“যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে পাকিস্তানের পক্ষে অধিকৃত কাশ্মীর দখলে রাখা বেশ কঠিন। আপনারা তৃতীয়বারের জন্য নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রী করলেই দেখবেন ছয় মাসের মধ্যে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতের অংশ হয়ে গিয়েছে। এই কাজের জন্য দুঃসাহসিকতার প্রয়োজন। সেটা একমাত্র নরেন্দ্র মোদির রয়েছে এবং উনি তা করবেন।”
বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে অশান্ত হয়ে উঠেছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে নানা ইস্যুতে আন্দোলন করছেন সেখানকার মানুষ।
এমনকী সেই আন্দোলনে সামিল হয়ে একাধিক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে পাক রেঞ্জার্সের গুলিতে। খাদ্যাভাব, জ্বালানি সমস্যার পাশাপাশি বিদ্যুতের সমস্যায় জেরবার পাকিস্তানের মানুষ। এই ইস্যুতে বহুদিন ধরেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষ। এ প্রসঙ্গে তাঁদের উদ্দেশে যোগীর তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা,
“ভারতে দারিদ্র সীমার নীচে থাকা মানুষকে টেনে তুলেছেন মোদিজি। যে সংখ্যাটা কিনা পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার থেকে বেশি। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষ ভারতের অন্তর্গত হলে তাঁদের না খেয়ে মরতে হবে না। কারণ ভারতে বিনামূল্যে রেশন পাওয়া যায়।”
এতেই স্পষ্ট বিজেপি এভাবেই প্রচার করে যাবে। অর্থাৎ যেভাবেই হোক হিন্দুত্ব ইস্যু বিজেপি নেতৃত্ব যে প্রত্যেকটি জনসভায় তুলে ধরবেন, সেটা নিয়ে আর কারও মনে সন্দেহের অবকাশ নেই। তাই যোগী আদিত্যনাথ যে সুরে প্রচার করছেন তা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আরও উচ্চগ্রামে উঠবে বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। বিরোধীরা তার পাল্টা কোন ইস্যু সামনে আনে সেটাই দেখার।