মহিলাদের হাতে অনেক কিছু! নির্বাচনের মোড় ঘোরাতে পারে নারীশক্তি

মহিলাদের হাতে অনেক কিছু! নির্বাচনের মোড় ঘোরাতে পারে নারীশক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদন: এবারের নির্বাচন নারী কেন্দ্রিক। এক নারীকে যেমন হারানোর লড়াই, অন্যদিকে অনেক নারীদের জেতার স্বপ্ন। তবে আকাশে উড়তে থাকা ঘুড়ির লাটাই যেমন কারুর না কারুর হাতে থাকে, ঠিক তেমনই এই বিধানসভা নির্বাচনের লাটাই যাদের হাতে রয়েছে তারা হলেন বাংলার নারী। না, শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং একাধিক মহিলা প্রার্থীদের কথা বলা হচ্ছে না। কথা বলা হচ্ছে বাংলার সাধারণ নারীদের, মহিলা ভোটারদের। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি খুব সহজে ইঙ্গিত দিয়ে দিচ্ছে যে, আগামী ২ মে যে ফলাফল হতে চলেছে তার অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফ্যাক্টর বাংলার নারীরা।

একেবারে সহজ ভাবে দেখতে গেলে বোঝা যাবে, বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করা সমস্ত রাজনৈতিক দল মহিলাদের ওপর অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। বর্তমান রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক প্রকল্প নারীকেন্দ্রিক, পাশে কন্যাশ্রী হোক কিংবা যুবশ্রী। অন্যদিকে বিজেপি এবং সংযুক্ত মোর্চা যে সংকল্প পত্র বা নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে, সেখানেও রাজ্যের মহিলাদের ওপর আলাদা ভাবে আলোকপাত করা হয়েছে। এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাধিক প্রকল্পের ফায়দা বাংলার নারী সমাজ পেয়েছে বলে দাবি করা হয় ঘাসফুল শিবিরের পক্ষ থেকে। ওদিকে নারী সুরক্ষা নিয়ে বর্তমান শাসক দলকে বারংবার তুলোধনা করেছে বিরোধীরা। সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে যে কোনো ইস্যু হোক, প্রাধান্য পাচ্ছে সেই মহিলারাই। অতএব, আগামী দিনে নির্বাচনের ফলাফলের ক্ষেত্রে যে নারীদের ফ্যাক্টর বড়োসড়ো ভাবে কাজ করবে তা আলাদা করে বলার অপেক্ষা থাকছে না। 

আরও পড়ুন- মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশ ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ পাঠ পড়াল, সাক্ষী মোদী

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের একাধিক ভাষণ নিয়ে মা-বোনদের উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন পরামর্শ এবং বার্তা দিয়েছেন। সুতরাং বিজেপিকে এবং অন্য বিরোধীদলের ঠেকাতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে মহিলাদের ওপর প্রচণ্ড ভরসা রাখছেন সেটা স্পষ্ট। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মহিলার সমাজের মানসিকতার একটা পরিবর্তন হচ্ছে বলেও অনুমান করা সম্ভব। নির্বাচন এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত যে শুধুমাত্র পুরুষদের দখলে নয় সেটা বারবার জনসমক্ষে আসছে। এদিকে গোটা ভারতবর্ষের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ এমন একটি রাজ্য, যেখানে শুধুমাত্র একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন। রাজ্যের মহিলাদের কাছে এটাও একটা বিরাট ফ্যাক্টর হবে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের অভিমত। সে ক্ষেত্রে সেই নারী শক্তির কথাই বারবার উঠে আসছে। একই সঙ্গে, নারী বিরোধী বক্তব্য এবং একাধিক ক্ষেত্রে মহিলাদের নিয়ে অসন্মান জনক মন্তব্য রাজনৈতিক দলগুলির বিপক্ষে কাজ করবে সেটাও একেবারে সত্য।

আরও পড়ুন-  শত্রুকে হুঁশিয়ারি, সন্ত্রাসদমনে বাংলাদেশকে ঐক্যের বার্তা নমোর

বিতর্কিত মন্তব্য করার ক্ষেত্রে আগাগোড়া বিজেপি নেতারা অস্বস্তিতে থেকেছেন। যে কোন ইস্যুতে অশ্লীল এবং অসংবেদনশীল মন্তব্য করার জন্য একাধিকবার বিরোধীরা আওয়াজ তুলেছে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে। সমালোচনা হয়েছে গেরুয়া শিবিরের একাধিক নেতার। যদিও শাসকদলের নেতারাও বিতর্কিত মন্তব্য থেকে দূরে থাকতে পারেননি। কিন্তু আসন্ন নির্বাচনের আবহে নারী বিদ্বেষ বিষয়টি কতটা প্রাধান্য পাবে সেটাও সিদ্ধান্ত নেবেন সেই মহিলারাই। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘বারমুডা’ মন্তব্য ঝড় তুলেছে। সুতরাং একটা বিষয় পরিষ্কার, যদি কোনো রাজনৈতিক দল ভেবে থাকে যে শুধুমাত্র একে অপরকে কটুক্তি করে এবং নিজেদের প্রতিশ্রুতির ঢাক পিটিয়ে শুধুমাত্র এই নির্বাচনে জিততে পারবে, তাহলে তারা অবশ্যই ভুল ভাবছে। কারণ মস্ত বড় একটা ফ্যাক্টর বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের কাজ করবে, সেটি নারীশক্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − 9 =