Lok Sabha
নিজস্ব প্রতিনিধি: বিজেপি এমন একটি সংগঠিত দল যারা শুধু বর্তমান সময়ের ভিত্তিতে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনীতি করে না। বর্তমান সময়ের পাশাপাশি ভবিষ্যতের কথা ভেবেও তারা প্রত্যেকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। আর সেই সূত্রেই নতুন সংসদ ভবনে লোকসভার অধিবেশন কক্ষে ৮৮৮ ও রাজ্যসভায় ৩৮৪ জন সাংসদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অর্থাৎ দুই কক্ষ মিলিয়ে মোট ১২৭২ জন বসতে পারবেন। বর্তমানে রাজ্যসভায় ২৪৫ ও লোকসভায় ৫৪৩ জন সদস্য রয়েছেন।
সেই জায়গা থেকে আগামী দিনে দুটি কক্ষেই সদস্য সংখ্যা অনেকটাই বাড়তে চলেছে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্রে খবর। তবে সেটা হবে ২০২৭ সালের পরে। কারণ সেই বছরে শুরু হবে জনগণনা। এরপর জনসংখ্যার ভিত্তিতে বিভিন্ন রাজ্যে লোকসভা আসনের সংখ্যা অনেকটাই বাড়ানো হতে পারে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। লোকসভা আসনের পাশাপাশি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিধানসভা কেন্দ্রের সংখ্যাও। এছাড়া লোকসভার পাশাপাশি বাড়ানো হতে পারে রাজ্যসভার আসন সংখ্যাও। তাই নতুন সংসদ ভবনে এখন থেকেই আগামী দিনের কথা ভেবে অতিরিক্ত জায়গা রেখে দেওয়া হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহল নিশ্চিত। অর্থাৎ অনেক বেশি সংখ্যক সাংসদ দুই কক্ষে বসতে পারবেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে যে বিতর্ক দেখা দেবে তা পরিষ্কার। মূলত দক্ষিণ ভারতের পাঁচটি রাজ্য থেকে এই ব্যাপারে প্রবল আপত্তি উঠে আসবে। তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা ও কেরল আসন বৃদ্ধির ঘটনায় নিশ্চিতভাবে প্রবল বিরোধিতার পথে হাঁটবে। কিন্তু কেন? ঘটনা হল, শিক্ষা-স্বাস্থ্যের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষিণের রাজ্যগুলি পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর পূর্ব বা উত্তর ভারতের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা এই পাঁচটি রাজ্যে মোটের উপর জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে।
তাই জনসংখ্যার ভিত্তিতে লোকসভায় আসন সংখ্যা বাড়লে দক্ষিণের পাঁচটি রাজ্য থেকে সেই সংখ্যা খুব একটা বাড়বে না। সেক্ষেত্রে দক্ষিণের পাঁচটি রাজ্যে কোনও রাজনৈতিক দল অপেক্ষাকৃত খারাপ ফল করেও যদি পূর্ব, পশ্চিম বা উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে ভাল ফল করে, তাহলে অনায়াসে তারা ম্যাজিক সংখ্যা অর্জন করে দিল্লিতে সরকার গড়তে পারবে। তাই পূর্ব বা উত্তর ভারতের রাজ্যগুলির রাজনৈ
রাজ্যগুলির কথা মাথায় রেখে বিশেষ বিশেষ প্রকল্পের কথা ভাববে কেন্দ্র, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তাই জনসংখ্যার ভিত্তিতে লোকসভায় আসন বাড়লে দক্ষিণের রাজ্যগুলি প্রবল বিরোধিতা করবে, এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়। দক্ষিণ ভারতের বক্তব্য, তাদের রাজ্যগুলিতে জনসচেতনতার মাত্রা অন্য রাজ্যের থেকে অনেকটাই বেশি। তাই সেখানে জনসংখ্যা উত্তর, পশ্চিম বা পূর্ব ভারতের তুলনায় সেভাবে বাড়েনি। সার্বিক শিক্ষার নিরিখেও এই পাঁচটি রাজ্য অন্যদের থেকে এগিয়ে। অন্যদিকে উত্তর, উত্তর-পূর্ব বা পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলি বিজেপির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত।
তাই সেই রাজ্যগুলিতে আসন সংখ্যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে বলে রাজনীতির কারবারিদের একাংশের ধারণা। আর এই সমস্ত বিষয়কে মাথায় রেখেই নতুন সংসদ ভবনের দুটি কক্ষেই বাড়তি আসন এখন থেকেই রেখে দেওয়া হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। তাই ২০২৭ সালের পর বিষয়টি কোন দিকে গড়ায় সেদিকেই চোখ থাকবে রাজনীতি সচেতন মানুষজনের।