Aajbikel

তিনি কী বিজেপি-মুখী? ফের সৌরভের রাজনীতিতে আসা নিয়ে চর্চা শুরু! যথারীতি সম্ভাবনা উড়িয়েছেন 'মহারাজ'

 | 
সৌরভ

নিজস্ব প্রতিনিধি: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কী বিজেপিতে যোগদান করবেন? তাঁকে দেখা যাবে সক্রিয় রাজনীতিতে? ফের একবার এই জল্পনা শুরু হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ককে নিয়ে। কারণ একটাই, বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হওয়ার প্রস্তাবে রাজি হয়ে গিয়েছেন তিনি। ঠিক তখন থেকে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। আর যথারীতি বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলকে নিশানা করতে শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। বাংলার অন্যতম সেরা 'আইকন' সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রাপ্য সম্মান দেয়নি তৃণমূল সরকার, এমনটাই অভিযোগ বিজেপির। রাজ্য সরকার সৌরভকে অসম্মান করেছে, এমনটাই অভিযোগ করছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এ প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, ''তৃণমূল সরকার সৌরভকে ধরে রাখতে পারেনি। বাংলার সরকারের উচিত ছিল তাঁকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর বানানো। বাংলার সরকার তা করেনি, তাই তিনি ত্রিপুরায়। আর সেখানেও তো বহু বাঙালি থাকে। তাই উনি বাঙালির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হয়েছেন।''

 

ত্রিপুরার পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী ত্রিপুরা সরকারের প্রস্তাব নিয়ে কলকাতায় এসে সৌরভের সঙ্গে দেখা করেন। এমনকী ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন সৌরভ। এরপরই তিনি ত্রিপুরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান বলেই খবর। এ বিষয়ে ত্রিপুরার পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেছেন জুন মাস থেকেই সৌরভকে নিয়ে তাঁরা কাজ শুরু করে দেবেন। তাই সৌরভের আগরতলা যাওয়া এখন খালি সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করা হচ্ছে।

 

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সৌরভকে প্রধান মুখ করে ঝাঁপাতে চেয়েছিল বিজেপি।  যা নিয়ে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের তৎপরতা ছিল চোখে  পড়ার মতো। যে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক জল্পনা তৈরি হয়। যদিও তাতে জল ঢেলে দিয়েছিলেন সৌরভ। তিনি রাজনীতিতে আসেননি। কিন্তু বিজেপির সরাসরি সাহায্য নিয়েই তিনি ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন বলেই সবাই মনে করে। আর একুশের নির্বাচনের পর সৌরভের সঙ্গে বিজেপি এবং তৃণমূল দু'পক্ষের সঙ্গেই নিবিড় যোগাযোগের বিষয়টি সামনে এসেছে। বিভিন্ন সময়ে দেখা গিয়েছে সৌরভ নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

 

শহরে একটি কর্মসূচিতে মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের পাশে বসে রাজ্যের প্রশংসা করতেও শোনা গিয়েছিল তাঁকে। তেমনই আবার  দেখা গিয়েছিল যে সৌরভের বাড়িতে নৈশভোজের আমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু এরপরেও সৌরভ রাজনীতি থেকে বিস্তর দূরত্ব বজায় রেখেই চলেছেন। তবে এবার সৌরভ ত্রিপুরার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডরের দায়িত্ব নেওয়ায় যথারীতি রাজনৈতিক মহলে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। ঘটনা হল পশ্চিমবঙ্গের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হয়েছেন বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। বেশ কয়েক বছর আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সম্মান দিয়েছেন শাহরুখকে। আর তাতেই আপত্তি দেখছে বিজেপি। তাদের প্রশ্ন, সৌরভের মতো আইকন বাংলায় থাকতে কেন শাহরুখকে বেছে নেওয়া হয়েছে? ঘটনাচক্রে শাহরুখের সঙ্গে সৌরভের সম্পর্ক একেবারেই মসৃণ নয়। আইপিএল শুরুর কয়েক বছর পর থেকে দু'জনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে।

 

এই পরিস্থিতিতে বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় সৌরভকে নতুন ভূমিকায় দেখা যাবে। যা নিয়ে জোর জল্পনা চলবে এতে আর আশ্চর্য হওয়ার কি আছে! যদিও এই ধরনের সম্ভাবনায় যথারীতি জল ঢেলে দিয়েছেন সৌরভ। রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, বারবার কেন তাঁকে নিয়ে এই ধরনের আলোচনা হবে? শচীন তেন্ডুলকর, মহেন্দ্র সিং ধোনি, অমিতাভ বচ্চন, তাঁরাও তো বিভিন্ন রাজ্যের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। কিন্তু তাঁদের নিয়ে তো এমন আলোচনা হয় না! তাহলে শুধু তাঁকে নিয়ে কেন এটা বারবার হবে? এই প্রশ্ন তুলছেন সৌরভ। যদিও রাজনৈতিক মহল মনে করে শচীনদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সৌরভের তুলনাই হয় না। সৌরভ বিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন, যার পিছনে প্রত্যক্ষ সাহায্য ছিল কেন্দ্রীয় শাসক দলের, এই দাবি কেউই উড়িয়ে দিতে পারেন না। তাই বিজেপি আজ হোক বা কাল, সৌরভকে দলে টেনে রাজনীতিতে নামাবে এই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। শুধুমাত্র এই কারণেই সৌরভ ত্রিপুরার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে নতুন করে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তাই সৌরভের 'সৌরভ' আগামী দিনে রাজনীতির ময়দানে ছড়ায় কিনা এখন সেটাই দেখার।

Around The Web

Trending News

You May like