আজ বিকেল: নরেন্দ্র মোদি সুযোগ পেলেই দেশের দুই প্রধানমন্ত্রী নেহরু ও ইন্দিরা গান্ধীকে গালমন্দ করেন। আবার প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসে ফের জনসমর্থন ধরে রাখতে ওই দুজনই তাঁর একমাত্র ভরসা। ওঁদের অনুকরণ না করলে টিকে থাকা যে অসম্ভব তা ভালমতোই জানেন। লোকসভা ভোটে অংশ না নিয়েও মোদি তথা বিজেপির বিরুদ্ধে লাগাতার তোপ দাগতে কার্পণ্য করছেন না মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার প্রধান রাজ ঠাকরে। তাই ফের জনমানসে প্রভাব ফেলতে মোদিকে একহাত নিলেন তিনি।
বক্তব্যের শুরুতেই রাজ বলেন, সম্প্রতি একটি প্রচার সমাবেশে গিয়ে ফের গালগল্প দিতে শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে বলছেন, মানুষ আমাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, প্রথম সেবক হিসেবে চিনুক। বলা বাহুল্য, এই কথাটি মৌলিক নয়। ইতিহাসে চোখ বোলালে দেখা যাবে, জওহরলাল নেহরু এই একই কথাই দেশবাসির উদ্দেশে বলেছিলেন। কেউ যদি দিল্লির তিনমূর্তি ভবনে যানতাহলে সেখানকার নেহরু ন্যাশনাল মিউজিয়াম দেখতে পাবেন। ওই মিউজিয়ামে নেহরুর মূর্তির নিচেই তাঁর বক্তব্য খোদাই করা আছে। সেখানে লেখা আছে তিনি ভারতবাসীর প্রধান সেবক। মোদি একটু উল্টে পাল্টে নিজেকে প্রথম সেবক বলেছেন। নকল না করে তাঁর আর কিইবা উপায় আছে।
বলা বাহুল্য, যখনই বিরোধিদের জবাব দিতে মাঠে নামেন মোদি তখনই নেহরু ইন্দিরাকে খোঁচা না দিয়ে তাঁর কটাক্ষ শেষ হয় না। কংগ্রেসকে বিঁধতে গিয়ে বার বার গান্ধী পরিবারকে কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। বলতে থাকেন, কংগ্রেস শুধু পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাসী। দেশের উন্নয়ন নয় পরিবারের উন্নয়নকেই কংগ্রেস পাখির চোখ করেছে। গান্ধী পরিবারের বাইরে কংগ্রেসের কোনও অস্তিত্ব নেই। কিছুদিন আগে গোয়ার এক সমাবেশ থেকে রাহুলের রাফাল মন্তব্যের পাল্টা দিতে গিয়ে মোদি বলেন, রাজীব গান্ধী বফর্স নিয়ে যে কারচুপি করেছিলেন তা রাহুল ভালমতোই জানতেন। তাই বিষয়টি তাঁর মাথায় গেঁথে গিয়েছে, বাবার পাপ খণ্ডাতে সকলকেই দূর্নীতি গ্রস্ত বলছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, উদ্ভব ঠাকরে মোদির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেও রাজ কিন্তু গোঁড়া বিজেপি বিরোধী। োকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে বেগ দিতে তিনি কংগ্রেস ও এনসিপির সঙ্গে জোটও গড়তে চেয়েছিলেন। তবে শরদ পাওয়ার তাতে সায় না দেওয়ায় সেপথ বন্ধই থেকেছে। এদিকে জোটে ঢুকতে না পেরে নির্বাচনে না লড়ার সিদ্ধান্ত নেন রাজ। তিনি বলেন, ভোটে লড়ছি না। তবে এরমধ্যে বেশকিছু জনসভা করব। একটাই লক্ষ্য, মোদি ও শাহর হাত থেকে দেশ বাঁচানো। এই দুজনই দেশ ও দেশবাসীর জন্য খুব ক্ষতিকর।