জাতপাত, ধর্ম, দেশ-ভক্তিই কি বিজেপিকে ডোবাবে? কী ভাবছে দিল্লির জনতা?

জাতপাত, ধর্ম, দেশ-ভক্তিই কি বিজেপিকে ডোবাবে? কী ভাবছে দিল্লির জনতা?

নয়াদিল্লি: ভোট পূর্ববর্তী সমস্ত সমীক্ষা বলেছিল দিল্লিতে ভরাডুবি হতে চলেছে বিজেপি৷ এবার ভোটের পর বুথ ফেরত সমীক্ষায় সেই একই ইঙ্গিত মিলছে৷ রাজধানী নির্বাচন-পরবর্তী সমীক্ষা ইতিমধ্যেই প্রকাশ হতে শুরু করেছে৷ একের পর এক বুথ ফেরত সমীক্ষার ফলাফল মিলছে বিজেপির ভরাডুবির ইঙ্গিত৷ কিন্তু, জানেন কি, কেন রাজধানীতে ভরাডুবির মুখোমুখি হতে চলেছে মোদি-শাহের দল?
রিপাবলিক টিভি ও জন কি বাত সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, আগামী পাঁচ বছরে ফের একবার আম আদমি পার্টির দিল্লির মসনদে বসতে চলেছে৷ তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরতে চলেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি৷ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের পথে এগোচ্ছে আম আদমি পার্টি৷

অন্যদিকে দিল্লির নির্বাচনে আম আদমি পার্টির জয়জয়কার হতে চলেছে বলে বুথ ফেরত সমীক্ষায় আভাস মিলেছে৷ বিজেপির আগের থেকে ফল খারাপ হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে টাইমস নাউয়ের বুথ ফেরত সমীক্ষা৷এই সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী আম আদমি পার্টির একাধিপত্য না থাকার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে৷ এবিপি নিউজ ও সি ভোটার বুথ ফেরত সমীক্ষা রিপোর্টে জানানো হয়েছে, দিল্লির বিধানসভায় ফের ফিরতে চলেছে আম আদমি পার্টি৷ ২০১৫ সালের তুলনায় ভালো ফল করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে৷ সেই রিপোর্ট আপের হ্যাটট্রিক স্রেফ সময়ের অপেক্ষা৷

ভোটের আগে বিভিন্ন সমীক্ষা রিপোর্ট জানিয়েছিল রাজধানীতে মোদী-শাহ’র মুখ লুকানোর জায়গা থাকবে না৷ দিল্লি বিধানসভার ৭০টি আসনের মধ্যে ৫৪-৬০টি আসন পাবে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি বা আপ৷ অন্য দিকে, ১০-১৬টি আসনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে বিজেপি৷ যদিও গেরুয়া শিবিরের তরফ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, ওই সব সমীক্ষাই বিভ্রান্তিকর৷ এবার ভোটের পরও একই সমীক্ষা রিপোর্ট ঘিরে তৈরি অস্বস্তি বিজেপি শিবিরে৷

রাজধানীতে কেন ভরাডুবির আশঙ্কা গেরুয়া শিবিরের?  রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এবার দিল্লিতে মোদী-শাহ’র কাজ সহজ হয়নি৷ সারা দেশ সিএএ এবং এনআরসি’র বিরোধিতায় লেগে রয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে দিল্লির ভোটে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য৷ শুরু থেকেই উন্নয়নের প্রশ্নেই দিল্লিতে ভোটের প্রচার শুরু হয়েছিল৷ মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল রাস্তা, পানীয় জল, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য পরিষেবার কথা বলেই ভোট চাইছিলেন৷ প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপিও উন্নয়নের ইস্যুতে কেজরিওয়ালকে বিদ্ধ করার চেষ্টা করছিলেন৷

কিন্তু, হঠাৎই সব বদলে গেল৷ সিএএ বিরোধীরা শাহীনবাগে জমায়েত করতে লাগলেন৷ উন্নয়ন ছেড়ে বিজেপি ধর্মীয় তাস খেলতে লাগল৷ দিল্লির আকাশে-বাতাসে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও পাকিস্তান-বিরোধী গরম বক্তব্যের বিষবাষ্প ভরে যেতে লাগল৷ বিজেপি প্রমান করতে সচেষ্ট হল, শাহীনবাগের পক্ষে দাঁড়িয়ে কেজরিওয়াল নিজেকে সন্ত্রাসবাদী হিসাবে চিহ্নিত করেছে৷ এক বিজেপি এমএলএ বলেই ফেললেন, নির্বাচনের দিন ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ৷ বিজেপির পক্ষ নিলে ভারত জিতবে৷ আপের পক্ষ নিলে জিতবে পাকিস্তান৷ সাধারণ দিল্লির জনতা বিষয়টিকে ভালো ভাবে নেয়নি৷ যারা বিজেপিকে সমর্থন করেন না, তাঁরা এত সহজে পাকিস্তানি হয়ে যাবেন, এই আশা করেননি অনেকেই৷ সেই কারণেই দিল্লির দরবারে, জনতার থেকে কড়া জবাব পেতে চলেছে গেরুয়া শিবির৷ মনে করছে পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 + sixteen =