বাংলায় থেকে ইস্ট বেঙ্গলকে সমর্থন কেন? জবাব দিলেন মমতা

কলকাতা: ইস্ট বেঙ্গলকে সমর্থন করার প্রসঙ্গে মেঘালয় রাজ্যপালের বিতর্কিত মন্তব্যের জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইস্ট বেঙ্গলের শতবর্ষ উদযাপন মঞ্চ থেকে নাম না করে তথাগত রায়কে আক্রমণ করেন মমতা৷ সাফ জানিয়ে দেন, পশ্চিবঙ্গ থেকে ইস্ট বেঙ্গলকে সমর্থন নিয়ে কোনও বিতর্ক ওঠা মানে লজ্জার বিষয়৷ এই নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠতেই পারেন না৷ এই

বাংলায় থেকে ইস্ট বেঙ্গলকে সমর্থন কেন? জবাব দিলেন মমতা

কলকাতা: ইস্ট বেঙ্গলকে সমর্থন করার প্রসঙ্গে মেঘালয় রাজ্যপালের বিতর্কিত মন্তব্যের জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইস্ট বেঙ্গলের শতবর্ষ উদযাপন মঞ্চ থেকে নাম না করে তথাগত রায়কে আক্রমণ করেন মমতা৷

সাফ জানিয়ে দেন, পশ্চিবঙ্গ থেকে ইস্ট বেঙ্গলকে সমর্থন নিয়ে কোনও বিতর্ক ওঠা মানে লজ্জার বিষয়৷ এই নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠতেই পারেন না৷ এই ক্লাবের ঐতিহ্য আছে৷  পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে ইস্ট বেঙ্গলেক কোনও ফাকার নেই৷ আমরা এক পরিবারের সদস্য৷ আমরা এক সঙ্গেই থাকব৷

এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চে ওঠার আগে টুইটারে শুভেচ্ছা জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ লেখেন, ‘‘আজ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের শতবর্ষ উদযাপন।ফুটবল এবং তার প্রচারের সাথে ক্লাবটির একটি গৌরবপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবের সকল প্রাক্তনী ও বর্তমান খেলোয়াড়, আধিকারিক এবং সমর্থকদের আন্তরিক শুভেচ্ছা৷’’

ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসেন মেঘালয় রাজ্যপালের তথাগত রায়ইস্ট বেঙ্গল সমর্থকদের কাঠগড়ায় তুলে প্রশ্ন মেঘালয় রাজ্যপালের৷ পশ্চিমবঙ্গ থেকে ইস্ট বেঙ্গলকে সমর্থন কেন? ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের উদ্দেশ্যে রাজ্যপালের প্রশ্নে তুঙ্গে বিতর্ক৷

এখানে থেকে কী করে ইস্ট বেঙ্গলকে সমর্থন? টুইটে প্রশ্ন মেঘালয় রাজ্য পালের তথাগত রায়ের৷ পোস্ট নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই পাল্টা টুইট তথাগতের৷ প্রশ্নের স্বপক্ষে সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করেন তথাগত রায়৷ নিজেকে ইস্টবেঙ্গল সমর্থক বলে দাবি পাল্টা দাবি করেন৷ ধর্মের জন্য পূর্ববঙ্গ থেকে বিতাড়িত সেই যন্ত্রণা ভোলার নয় বলেও দাবি করেন তিনি৷ রাজ্যপালের এই মন্তব্য ঘিরে গোটা বাংলাজুড়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷

বাংলায় থেকে ইস্ট বেঙ্গলকে সমর্থন কেন? জবাব দিলেন মমতা‘এখন বাঙালি ছেলেরা হরিয়ানা থেকে কেরালা পর্যন্ত সব জায়গায় ঘর ঝাঁট দেয়, বাঙালি মেয়েরা মুম্বাইতে বার-ডান্স করে, যা আগে অকল্পনীয় ছিল৷’ গত ৪ জুন এই মন্তব্য ঘিরে বিকর্ত দানা বাধতেই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে ৬ জুন নয়া ব্যাখ্যা দেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়৷ টুইট করে জানান, ‘‘নির্মম সত্যে কিছু লোকের জ্বলুনি হয়েছে দেখছি৷ আমার কিছু করার নেই, burnol লাগিয়ে দেখতে পারেন৷ তবে অশালীন কথা বললেই ব্লক৷’’

গত ৪ জুন তথাগত রায় নিজের টুইটারে লেখেন, ‘‘হিন্দি শেখার বিরোধিতা করতে গিয়ে বেশ কিছু বাঙালি দুটি যুক্তি দেবার চেষ্টা করছেন৷ কেউ কেউ অশিষ্ট, বা ইতর ভাষাও প্রয়োগ করেছেন৷ প্রথম, দক্ষিণী রাজ্যগুলো হিন্দির বিরোধিতা করছে৷ তাঁদের জ্ঞাতার্থে জানাই, এক তামিল নাড়ু ছাড়া বাকি দক্ষিণী রাজ্যগুলোর হিন্দির প্রতি কোনো serious, বিশাল বিরোধিতা নেই৷ তারা রাজনৈতিক কারণে কিছু ফাঁকা আওয়াজ করে মাত্র৷ অসম, ওডিশা, মহারাষ্ট্রও অ-হিন্দিভাষী রাজ্য, তারাও হিন্দির বিশেষ বিরোধ করে না৷ দ্বিতীয়, বাংলা বিদ্যাসাগর-বিবেকানন্দ-রবীন্দ্রনাথ-নেতাজির দেশ, তাহলে বাঙালি কেন হিন্দি শিখবে ? প্রথমত,এই চারজন মনীষীর সঙ্গে হিন্দি শেখার কি বিরোধ তা আমার বোধগম্য হল না৷ দ্বিতীয়ত, হায়, এঁদের কে বোঝাবে এই মনীষীদের কাল বহুদিন গত, তারপর বাংলার বৃহদংশও গত, এখন বাঙালি ছেলেরা হরিয়ানা থেকে কেরালা পর্যন্ত সব জায়গায় ঘর ঝাঁট দেয়, বাঙালি মেয়েরা মুম্বাইতে বার-ডান্স করে, যা আগে অকল্পনীয় ছিল৷ তামিল নাড়ু বাদে ভারতের সব জায়গার লোক মোটামুটি হিন্দি বোঝে৷ অপরপক্ষে শহুরে বুদ্ধিজীবী শ্রেণী ছাড়া ইংরিজি কেউ বুঝবে না৷ যাঁরা ঠিক করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বাইরে এক পাও বেরুবেন না, তাঁরা ছাড়া বাকিদের বর্তমানকে, বাস্তবকে মেনে নিতে হলে হিন্দি শিখতে হবে৷ না হলে পস্তাতে হবে৷

এই মন্তব্যের পর রাজ্যজুড়ে বিতর্ক তৈরি হতেই ব্যাখ্যা দেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল৷ লেখেন, ‘‘ বাঙালি ছেলেরা ঘর ঝাঁট দেয়, বাঙালি মেয়েরা মুম্বাইতে বার ডান্সার, এই সব আমি টুইট করেছিলাম বলে অনেকে ব্যথিত হয়েছেন৷ অথবা ব্যথিত হবার ভান করেছেন, “আমাদের মা-বোনেদের অপমান” বলে খুব রাগ দেখাচ্ছেন, ইতর ভাষাও প্রয়োগ করেছেন৷ আমি ইচ্ছে করে এগুলো বাংলায় টুইট করেছি যাতেএই আলোচনা বাঙালিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে৷ এই সব ‘ব্যথিত’দের জন্য জানাচ্ছি, Human Trafficking (প্রায় পুরোপুরি নারী ও শিশু পাচার) বাবদে পশ্চিমবঙ্গ ভারতে সর্বপ্রথম৷  সূত্র 2016 Crime in India Report published by National Crime Records Bureau (NCRB), Government of India. এই সারণি অনুযায়ী ভারতের চুয়াল্লিশ শতাংশ পাচার পশ্চিমবঙ্গ থেকেই হয়৷ অবশ্য এর মধ্যে বাংলাদেশী নারী ও শিশুও আছে, কিন্তু তারাও এই রাজ্যের মাধ্যমেই পাচার হয়৷  এ ছাড়া YouTube থেকে NDTV-র একটি video উদ্ধার করা গেলো, তাতে একজন প্রতিবেদক ছয়জন মুম্বাই বার ডান্সার-এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন৷ ছয়জনের মধ্যে দুজন বাঙালি৷ এঁরা বলছেন এঁরা পাচার হননি, চাকরিবাকরি না পেয়ে এই কাজ নিয়েছেন৷ তাঁরা নাচই করেন, যৌনকর্মী নন৷ অতএব অকারণে আমার উপর টেম্পার না দেখিয়ে মা-বোনেদের সমস্যাটা বুঝবার চেষ্টা করুন৷ ঘা চাপা নিয়ে রাখলে ঘা সারবে না, পচন ধরবে৷ আর যাঁরা ভাবছেন কেন পশ্চিমবঙ্গে চাকরিবাকরি নেই, কেন বাঙালিদের লোকে চাকরি দেয় না (কিন্তু বাংলার বাইরে বাঙালিরা স্বাগত) তাঁরা তাঁদেরই জিজ্ঞাসা করুন যারা কারখানায় কারখানায় ঘেরাও, ধর্মঘট, go-slow, tool-down ইত্যাদি করে বাঙালিদের এই ‘সুনাম’ দিয়েছেন, কারখানাগুলোকেও বন্ধ করেছেন৷ নির্মম সত্যে কিছু লোকের জ্বলুনি হয়েছে দেখছি৷ আমার কিছু করার নেই, burnol লাগিয়ে দেখতে পারেন৷ তবে অশালীন কথা বললেই ব্লক৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty + 7 =