কলকাতা: প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার সিবিআইয়ের সঙ্গে রীতিমতো লুকোচুরি খেলছেন। এর আগেও যখন সিবিআই তাঁকে জেরা করতে চেয়েছিল, নানা অজুহাত দেখিয়ে তিনি সেই জেরা এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে যায় সিবিআই। সুপ্রিম কোর্ট বলে, সিবিআই রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।
সর্বোচ্চ আদালত জিজ্ঞাসাবাদের স্থানও বলে দেয়। জানানো হয়, শিলংয়ে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে রাজীবকে। তবে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না। সিবিআই শিলংয়ে তাঁকে এবং কুণাল ঘোষকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করে। কিন্তু রাজীবের জবাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সন্তুষ্ট হয়নি। তাদের অভিযোগ ছিল, ওই আইপিএস অফিসার তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। তাই তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা দরকার। রাজীব সিবিআই হেফাজত আটকাতে মরিয়া হয়ে উঠে ফের সুপ্রিম কোর্টে যান। আদালত জানায়, একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। সাত দিনের মধ্যে রাজীবকে জামিনের আবেদন করতে হবে। পরে আদালত সেই রক্ষাকবচ তুলে নেয়। তাতে আরও বিপাকে পড়েন মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ওই পুলিশ অফিসার।
রবিবার সন্ধ্যায় সিবিআই তাঁর খোঁজে লাউডন স্ট্রিট, পার্ক স্ট্রিটে আইপিএসদের আবাসন এবং ভবানী ভবনে হানা দেয়। কিন্তু কোথাও তাঁকে না পেয়ে আবাসনে নোটিশ লাগিয়ে দেয়। তাতে বলা হয়, সোমবার সকাল দশটায় তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হতে হবে। কিন্তু তিনি হাজির তো হননি, উল্টে আরও দিন দশেক সময় চেয়েছেন।
রাজীবের বারবার এত সময় চাওয়া নিয়েই নানা কথা উঠছে। প্রশ্ন উঠেছে, তিনি যদি নির্দোষীই হন, তা হলে এত ভয় কেন তাঁর? বারবার কেন সিবিআইকে এড়িয়ে যাচ্ছেন? তা হলে কি সারদা কাণ্ডে তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য লোপাটের যে অভিযোগ উঠেছে, তার সারবত্তা আছে?
রবিবার থেকে সিবিআই তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, তিনি নাকি উত্তরপ্রদেশে চলে গিয়েছেন। সিবিআই সেখানে তাঁর পৈতৃক বাড়িতেও হানা দিয়েছে। আরও শোনা যাচ্ছে, তিনি ছুটিতে আছেন বলে সিবিআইয়ের কাছে দশদিন সময় চেয়েছেন। এত বার সময় না চেয়ে, লুকোচুরি না খেলে সিবিআইয়ের সব সন্দেহের নিরসন করুন না।