নয়াদিল্লি: কোভিড'কে পালটা চ্যালেঞ্জ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে, সারা দেশ এবং দেশের সীমা ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে কোভিডের বিরুদ্ধে মোদির আগ্রাসী ছবিটি'কে প্রতিনিয়ত '১২ বাজাচ্ছেন' বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীরা। গুজরাট থেকে মধ্যপ্রদেশ, বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের খারাপ পারফরম্যান্স 'মোদিজি'র ইমেজ দফারফা করেছে। পার্টির হাইকমান্ড যে বুঝতে পারছে না, তা নয়। কিন্তু, কিছু করে উঠতে পারছে না।
শেষ বছর দশেক, ভারতের রাজনীতিতে একটিই স্থায়ী চিত্র। জনপ্রিয়তার শিখরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বিজেপি চালাচ্ছেন অমিত শাহ। এবং, খুব স্বাভাবিক ভাবেই, বিরোধীরা বিপর্যস্ত, দিশাহীন, উদ্দেশ্যহীন। ভেবে দেখুন, আজকের পরিস্থিতিও এমন কিছু আলাদা নয়। এই মহামারিতেও জনপ্রিয়তার শিখরে রয়েছেন মোদি। জে পি নাড্ডাকে সামনে রেখে আড়াল থেকে বিজেপি চালাচ্ছেন অমিত শাহ। বিরোধীদের জন্য পুরোনো বিশেষণই প্রযোজ্য। দিশাহীন, উদ্দেশ্যহীন।
যারা ব্যাপারটা লক্ষ্য করেছেন, তাঁরা জানেন, লকডাউনের তৃতীয় পর্যায় ঘোষণা করতে আসেননি প্রধানমন্ত্রী। ছিল না কোনও জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ। বদলে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেই কাজ সেরেছে। জনতা কারফিউ, বিকেল পাঁচটায় পাঁচ মিনিট বা রাত ন'টার ন'মিনিট শেষ। ব্যাপক জনসংখ্যার এই বিশাল দেশে কোভিড আটকাতে প্রধানমন্ত্রীকে লকডাউন ঘোষণা করতেই হত। বিকল্প পথ ছিল না। এই কঠোর সিদ্ধান্তটি দেশের সামনে ঘোষণা করার মধ্যেই নায়ক হওয়ার সুযোগ রয়েছে। সে সুযোগ তিনি ছাড়েননি। তবে, দীর্ঘায়িত লকডাউনের 'পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া'ও যে তীব্রতর, তা বোঝার রাজনৈতিক বিচক্ষণতা মোদি-শাহ'র রয়েছে। সেক্ষেত্রে সুচারু পরিকল্পনায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ এড়িয়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কারণ, তাতে পলিটিকাল ডিভিডেন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। বরং, ধেয়ে আসত সমালোচনা।
গেরুয়া শিবিরের অন্দরমহলে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন, জনতা প্রশ্ন করতে শুরু করেছে। দীর্ঘ লকডাউনের প্রকোপ কী হতে চলেছে। সারা দেশেই চাকরি-বাকরির বাজার বহু আগে থেকেই 'রেড জোনে' পরিণত হয়েছে। ধুঁকতে থাকা দেশীয় অর্থনীতি কোভিডের প্রভাবে কোন পর্যায়ে যেতে চলেছে? যেখনে দেশের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ 'স্টে-হোমে'র বিলাসিতা দেখাতেই পারে না। কারণ, তাঁরা 'হোমলেস'। বিজেপি অবশ্য বিশ্বাস করে, মোদিজি কোনও ম্যাজিক দেখবেই।