রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যসচিব কে? ভোটের আগে স্বরাষ্ট্রসচিব পদটিও সরকারের কাছে গুরুতবপূর্ণ!

রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যসচিব কে? ভোটের আগে স্বরাষ্ট্রসচিব পদটিও সরকারের কাছে গুরুতবপূর্ণ!

তপন মল্লিক চৌধুরী :  সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিন অবসর নেবেন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। তাঁর জায়গায় মুখ্যসচিব কে হচ্ছেন, পরবর্তী মুখ্যসচিব হিসেবে সরকার কাকে নির্বাচন করবেন, এই নিয়ে প্রশাসনিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে বেশ কয়েক দিন ধরে। নানা মহলের জল্পনায় যার নাম প্রথমে উঠে আসছে তিনি রাজ্যের বর্তমান স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। অবস্থার বিরাট কোনও পরিবর্তন না ঘটলে তিনিই যে ওই পদে বসবেন সে ব্যাপারে নিশ্চিত সরকারি মহল। তবে জল্পনা যে রকমই হোক এব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্যকাল মেয়াদ অবশ্য ২০২১-এর মে মাস পর্যন্ত। ২০২১-এর গুরুত্বপূর্ণ লড়াই তৃণমূল সরকারের কাছে। এই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ দফতর হল স্বরাষ্ট্র দফতর। ফলে সেই দফতরের দায়িত্বে কে থাকছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ বর্তমান সরকারের কাছে। প্রসঙ্গত, সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী বছর মে মাসের মধ্যে বিধানসভা ভোটও মিটে যাওয়ার কথা।

১৯৮৭ ব্যাচের আইএএস অফিসার আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর চাকরি জীবনে একাধিক জেলাশাসকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বর্তমান সরকার তাঁকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বেও বসিয়েছিল। এক সময়ে তিনি কলকাতা পুরসভার কমিশনারও ছিলেন। এছাড়া তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের সচিব হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।

নবান্নের গুঞ্জনে শোনা যাচ্ছে বর্তমান কৃষি সচিব সুনীল গুপ্তর নামও। কারণ তিনিও ১৯৮৭ ব্যাচের আইএএস। দীর্ঘদিন তিনি রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়াও উঠে আসছে ভূমি ও ভূমি সংস্কার সচিব মনোজ পন্থের নাম। উঠে আসছে ১৯৮৮ ব্যাচের আইএএস রাজ্যের অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নামও। তবে রাজ্যে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব পদে কর্মরত আমলাদের মধ্যে আলাপন সবচেয়ে সিনিয়র। প্রশাসনের অন্দরের ব্যাখ্যা, দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং সরকারকে বহু বার নানা সমস্যা থেকে বার করে আনার সুবাদে পরবর্তী মুখ্যসচিব পদের অন্যতম দাবিদার তিনিই।

সরকারকে মুখ্যসচিব পদের সঙ্গে আরও কয়েকটি পদে বদল ঘটাতে হবে। তার মধ্যে অন্যতম স্বরাষ্ট্র দফতর। অভিজ্ঞ আমলাদের অনেকের ধারণা, পরবর্তী স্বরাষ্ট্রসচিব হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন রাজ্যের বর্তমান কৃষিসচিব সুনীল গুপ্ত। কারণ, ১৯৮৭-র ব্যাচের আইএএস অফিসার সুনীল গুপ্ত দীর্ঘদিন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) হিসেবে কাজ করেছেন। ফলে কমিশনের কাজকর্ম এবং সরকারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সমন্বয়ের বিষয়টি তাঁর নখদর্পণে।

সরকার যে নির্বাচনের আগে তাঁর সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাইবে সে কথা বলাই বাহুল্য। উল্লেখ্য, ২০১৯-এর লোকসভা ভোট চলাকালীনই স্বরাষ্ট্রসচিব পদ থেকে অত্রি ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দেয় কমিশন। ফলে অফিসার নির্বাচনের ব্যাপারে এ বার বাড়তি সতর্ক থাকতে হচ্ছে রাজ্য প্রশাসনকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − 5 =