Aajbikel

কৌস্তভের ক্ষেত্রে যা ঘটেছে, সেভাবেই কী পুলিশ অভিযোগ পেলেই তৎপরতা দেখায়? কতটা অস্বস্তিতে পুলিশ?

 | 
কৌস্তভ

নিজস্ব প্রতিনিধি: কংগ্রেস নেতা তথা বিশিষ্ট আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীকে গ্রেফতারের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের যে কতটা মুখ পুড়ল সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবু এই কাজটা করতে হয়েছে কলকাতা পুলিশকে। আর তাতেই কলকাতা তথা রাজ্য জুড়ে পুলিশের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। রাজ্য তৃণমূলের সম্পাদক তথা দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ পর্যন্ত এই গ্রেফতারির সমালোচনা করেছেন। কুণাল মনে করছেন এই ঘটনায় কৌস্তভ তথা কংগ্রেস অহেতুক প্রচার পেয়ে গেল। যদিও রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বিষয়টি নিয়ে কুণালের উল্টো কথাই বলেছেন।

কৌস্তভ সাংবাদিক সম্মেলনে এবং একটি বৈদ্যুতিন মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ। তার ভিত্তিতে উত্তর কলকাতার জনৈক তৃণমূল নেতা কলকাতার বড়তলা থানায় কৌস্তভের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। ওই নেতা জানিয়েছেন তিনি রাত সাড়ে দশটায় অভিযোগ করেছেন। এরপর রাত আড়াইটেয় ব্যারাকপুরে কংগ্রেস নেতার বাড়িতে পৌঁছে যায় পুলিশ। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার সকাল আটটা নাগাদ গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তবে এদিনই বিকেল সাড়ে চারটের সময় আদালতে জামিন পেয়ে যান কৌস্তভ। কিন্তু প্রশ্ন হল কলকাতা পুলিশ হঠাৎ এত সক্রিয়তা দেখাল কেন? যেখানে  বহু সময় পুলিশের বিরুদ্ধে এফআইআর না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকী রাতে থানায় গিয়ে কেউ অভিযোগ করতে গেলে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ অনেক সময় উঠতে দেখা গিয়েছে পুলিশকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। সেখানে কৌস্তভের ক্ষেত্রে পুলিশ কেন এতটা সক্রিয়তা দেখাল সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই। কিছুদিন আগের কথা। কলকাতা হাইকোর্টের একজন বিচারপতির আবাসনের বাইরে যেভাবে আপত্তিকর পোস্টার পড়েছিল তার কিনারা কলকাতা পুলিশ এখনও কেন করতে পারেনি, সেই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। বিষয়টি নিয়ে আদালতের প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে পুলিশকে। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার ঠিক পরেই দুর্বৃত্তদের সামলাতে গিয়ে থানার টেবিলের নীচে পুলিশকে কেন লুকোতে হয়েছিল সেই উত্তরও জানতে চান সাধারণ মানুষ।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের একটি ঘটনার দিকে তাকানো যাক। পশ্চিম মেদিনীপুরে একটি গণধর্ষণের অভিযোগ থানা নিতে চায়নি বলে অভিযোগ ওঠে। পরবর্তীকালে ঘটনাটি গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। তার ভিত্তিতে বিচারপতি জেলার পুলিশ সুপার-সহ অন্যান্য আধিকারিকদের কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। থানার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আকছার উঠতে দেখা যায়। তাই রাজনৈতিক মহল নিশ্চিত শাসক দলের নির্দেশেই কৌস্তভের ক্ষেত্রে কলকাতা পুলিশ এত দ্রুত পদক্ষেপ করেছে। আর তাতেই মুখ পুড়েছে তাদের। কলকাতা পুলিশকে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সঙ্গে তুলনা করা হয়। এতটাই সুনাম রয়েছে তাদের। কিন্তু কৌস্তভের ক্ষেত্রে যে ঘটনা তারা ঘটিয়েছে তাতে  তাদের সুনাম নষ্ট হয়েছে। এমনটা বারবার হলে কলকাতা পুলিশের গৌরব যে আরও নষ্ট হবে তা স্পষ্ট। তাই গোটা বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় কিনা এখন সেটাই দেখার।
 

Around The Web

Trending News

You May like