কলকাতা: কেউ তাকে বলে ‘পলিটিকাল স্ট্রাটেজিষ্ট’ কেউবা ‘ভোটগুরু৷’ প্রশান্ত কিশোর বাংলার রাজনীতিতে প্রবেশ করার পর অন্তহীন জল্পনা চলেছে৷ জনশ্রুতি, মুখমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘পিকে’র সঙ্গে পরামর্শ করেই আজকাল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেন৷ সেদিক থেকে তৃণমূলের পরামর্শদাতা হওয়ার পর ‘পিকে’ এখনও পর্যন্ত সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জটি নিয়েছেন৷
তৃণমূল সূত্রে যা খবর, মঙ্গলবার দলীয় বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আগামী ১০৭টি পুরসভা নির্বাচনের সমস্ত পরিকল্পনার দায়িত্বে থাকবে ‘পিকে’র টিম৷ সেক্ষেত্রে বলা যেতে পারে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের অনেক আগেই পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ‘পিকে’র অগ্নিপরীক্ষা হয়ে যাবে৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ‘পিকে’ অপরীক্ষিত। সেদিক থেকে ব্যাখ্যা করলে ‘পিকে’র ও জবাব দেওয়ার জায়গা তৈরি হয়েছে।
নির্বাচন বিশ্লেষক হিসাবে ‘পি কে’ সারা ভারতে নাম করেছেন। নরেন্দ্র মোদী থেকে রাহুল গান্ধী, যোগী আদিত্যনাথ, অনেক শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে ‘পি কে’র। আগামী কয়েক মাসে পৌর এলাকার প্রত্যেক জনপ্রতিনিধিদের কাজকর্ম খতিয়ে দেখবে ‘পি কে’র টিম। তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মানুষের অসন্তোষ কোথায় লুকিয়ে রয়েছে তা-ই খতিয়ে দেখার পালা।
মনে রাখা প্রয়োজন, তৃণমূলস্তর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অসন্তোষের দাবানল দাউদাউ করে জ্বলতে শুরু করে। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল তা চোখে আঙুল দিয়ে রাজ্যের শাসক দলকে দেখিয়ে দিয়েছে। ‘কাটমানি’ ফেরতের কাহিনী সারা ভারতে জনপ্রিয় হয়েছে। সাধারণ মানুষ এলাকার তৃণমূল নেতাদের থেকে কাটমানি ফেরত নিচ্ছেন, সেই ছবি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ‘পি কে’ এর মস্তিস্কপ্রসূত ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি যথেষ্ট সারা ফেলেছে। এম জনতা সাহস পেয়ে শুরু করেছে। অনেকে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। মঙ্গলবার দিদিকে বলো কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্বের সূচনা করলো তৃণমূল।
রাজনীতি বোঝেন এমন অনেকেই বলছেন, এ যেন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের সমালোচনা করা। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিকে এই ভাবেই ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। দ্বিতীয় পর্যায়েও প্রথম পর্যায়ের ব্যাতিক্রম নয়। এলাকার পৌর প্রতিনিধিদের জনপ্রিয়তা কি পর্যায়ে তা রীতিমত তদন্ত করে দেখবে ‘পি কে’র টিম। কারণটা খুব স্বাভাবিক, পৌর প্রশাসনের অন্দরের রয়েছে দুর্নীতির বীজ এবং সাধারণ মানুষের অসন্তোষের ঠিকানা। ২০২০ সালে পুরনির্বাচনে মানুষের অসন্তোষের আগুনে জল ঢেলে দেওয়ার সুবর্ন সুযোগ পাবেন ‘পি কে।’ তৃণমূল মনে করছে, ২০২১-এ যা শাসকদলকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যাবে। এক ঢিলে দুই পাখি।