চুঁচুরা: একদিকে কর্মসংস্থান নিয়ে খোঁচা, অন্যদিকে সপ্তম বেতন কমিশন চালুর টোপ৷ সোমবার চার-চারটি সভা করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ কলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ৷ বাংলায় দাঁড়িয়ে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বাংলার সরকারি বাবুদের থেকে বেশি বেতন পান উত্তর প্রদেশের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা৷’’
এদিন বাঁশবেড়িয়ায় হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় সমর্থনে এক জনসভায় আদিত্যনাথ রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন বঞ্চনার ক্ষতকে ফের খুঁচিয়ে তোলেন৷ বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারিরা বঞ্চিত৷ এখানে সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুসারে বেতন দেওয়া হয় না৷ যার ফলে এরাজ্যে বহু পদস্থ আধিকারিকের থেকে বেশি বেতন পান উত্তর প্রদেশের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা।’’ একই সঙ্গে এদিন রাজ্যের শিল্পনীতি ও সপ্তম বেতন কমিশনের প্রসঙ্গ তুলে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদেরও মন জয়ের চেষ্টা করেন তিনি৷
তবে, সরকারি কর্মীদের মনজয়ের চেষ্টা একা যোগি করেননি৷ এবার আগেও একই অভিযোগ তুলেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী৷ বুনিয়াদপুরের সভা থেকে ফের রাজ্য সরকারি কর্মীদের ষষ্ঠ বেতন কমিশন কার্যকর না হওয়ার ক্ষতকে খুঁচিয়ে তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ একই সঙ্গে এসএসসি’র অনশন প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মোদি৷ বলেন, ‘‘গুণ্ডাদের জন্য টাকা দেয় সরকার৷ কিন্তু সরকারি কর্মীদের ডিএ দেওয়ার সময় টাকা থাকে না সরাকের৷’’
এদিন রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ ক্ষোভে আগুন জ্বালিয়ে মোদি বলেন, ‘‘বিজেপি যা প্রতিশ্রুতি দেয় তা করে দেখায়৷’’ ডিএর প্রসঙ্গে ত্রিপুরার কথাও তুলে ধরেন তিনি৷ বিজেপি শাসিত রাজ্যে সরকারি কর্মীদের সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকর হয়ে গিয়েছে৷ কিন্তু, সপ্তম বেতন কমিশন দূর, ষষ্ঠ বেতন কমিশন ঝুলে৷ তাঁদের ন্যায্য ডিএ দিতে গড়িমশি করছে সরকার৷
সূত্রের দাবি, এভাবে লোকসভা ভোটের আগে প্রায় তিন লাখের বেশি সরকারি কর্মী ও তার পরিবারের সদস্য ধরলে প্রায় ১৫ লক্ষের বেশি মানুষের অসন্তোষকে উস্কে দিতে চেয়েছেন মোদি। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, প্রধানমন্ত্রী বলতে চেয়েছেন বিজেপি সরকার বাংলায় ক্ষমতায় এলে সরকারি কর্মীদের যাবতীয় দাবি-দাওয়া পূরণ করবে। যদিও এই মুহূর্তে রাজ্য কর্মীদের ষষ্ঠ বেতন কমিশন ঝুলে রয়েছে। যা গত ১ জানুয়ারি ২০১৬ সাল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল৷ এই নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারী মহলে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে৷
এদিন সরকারি কর্মীদের পাশাপাশি বেকারত্ব ইস্যুতেও হাতিয়ার করেন যোগী৷ সোমবার সকালে বনগাঁ লোকসভায় নির্বাচনী প্রচার মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাংলার গণতন্ত্র, কর্মসংস্থান ও শিল্পের প্রসঙ্গের তুলে তৃণমূলের সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন যোগী৷ বাংলায় গণতন্ত্র বিপন্ন বলেও কটাক্ষ করেন৷ হাতিয়ার করেন বেকারত্ব ইস্যু৷ বলেন, ‘‘তৃণমূলের গুন্ডামির কারণে আজ বাংলার গণতন্ত্র ভেঙে পড়েছে৷ এখানে যুবক-যুতীদের চাকরি নেই৷ এই রাজ্য বিনিয়োগ আসছে না৷ শিল্পপতিরা বাংলা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে৷ টিএমসি গুন্ডারা তাঁদের হয়রানি করছে।’’