গতবারের ফল শেষ দফায়, নাকি ঘটবে অঘটন! ঘটলে সেটা কোথায়?

নিজস্ব প্রতিনিধি:  নির্বাচনের সঙ্গে অঘটন শব্দটি ওৎপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। অতীতে নির্বাচনী ফলাফলে এমন বহু ঘটনা ঘটতে দেখা গিয়েছে যা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। রাজ্য বা…

unexpected election results

নিজস্ব প্রতিনিধি:  নির্বাচনের সঙ্গে অঘটন শব্দটি ওৎপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। অতীতে নির্বাচনী ফলাফলে এমন বহু ঘটনা ঘটতে দেখা গিয়েছে যা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। রাজ্য বা দেশ জুড়ে এমন অজস্র উদাহরণ রয়েছে।

১৯৮৪ সালে যাদবপুর লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের হেভিওয়েট প্রার্থী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে দিয়েছিলেন তৎকালীন কংগ্রেসের নবীন প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৭৭ সালে রায়বেরিলিতে হেরে গিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। ১৯৮৪ সালে হেভিওয়েট নেতা হেমবতী নন্দন বহুগুণাকে এলাহাবাদ কেন্দ্রে হারিয়ে দিয়েছিলেন বিগ বি অমিতাভ বচ্চন। ২০১১ সালে যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রে পরাজিত হয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এই তালিকা অনেক লম্বা। সেই জায়গায় পশ্চিমবঙ্গে সপ্তম তথা শেষ দফায় যে যে কেন্দ্রে নির্বাচন হচ্ছে তার সবকটিতেই গতবার জিতেছিল তৃণমূল। এই কেন্দ্রগুলি হল বসিরহাট, বারাসত, দমদম, কলকাতা উত্তর, কলকাতা দক্ষিণ, যাদবপুর, জয়নগর, মথুরাপুর এবং ডায়মন্ড হারবার।

গত লোকসভা নির্বাচনে এই ৯-টি কেন্দ্রেই তৃণমূল বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছিল। এবারেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে বলে জোড়াফুল শিবিরের দাবি। যদিও বিজেপির দাবি এর মধ্যে বেশ কয়েকটিতে এবার হেরে যাবে তৃণমূল। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এর মধ্যে কোন আসনগুলিতে তাহলে এবার কিছুটা হলেও অঘটন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে? তৃণমূলের অন্দরের খবর অনুযায়ী এগুলির মধ্যে জোর লড়াই হচ্ছে কলকাতা উত্তর কেন্দ্রে। এখানে বিজেপি প্রার্থী তাপস রায় প্রবল ভাবে লড়াইয়ের জায়গায় রয়েছেন। এই কেন্দ্রে তৃণমূলের মধ্যে অন্তর্ঘাত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করে। সেই সূত্রে তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা উত্তরে এবার হেরে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

অর্থাৎ অঘটনের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে কলকাতা উত্তর কেন্দ্র। দ্বিতীয় কেন্দ্রটি হল মথুরাপুর। এই কেন্দ্রে এবার প্রবল ভাবে হিন্দুত্ব আবেগ কাজ করছে। এই লোকসভার অন্তর্গত কাকদ্বীপে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভায় জনপ্লাবন হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরেই মথুরাপুরে বিজেপির উত্থান চোখে পড়ার মতো। তাই এই কেন্দ্রে অঘটন ঘটতেই পারে। তালিকায় তিন নম্বরে থাকবে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র।

সবকিছু ঠিকঠাক চললে এখানে তৃণমূলের জয় কেবলমাত্র সময়ের অপেক্ষা বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু বসিরহাটের বিপুল সংখ্যক সংখ্যালঘু ভোটের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ যদি সিপিএম কাটতে পারে, তাহলে এখানে বিজেপি জিতে যেতে পারে। সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে এটা বলতেই হবে এই লোকসভায় তৃণমূলই ফেভারিট হিসেবে নামছে। কিন্তু সামান্য হলেও অঘটনের সম্ভাবনা একটা থেকে যাচ্ছে। চার নম্বরে থাকবে বারাসত। এখানে তৃণমূল প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদারের সঙ্গে যথেষ্ট টক্কর দিচ্ছেন বিজেপির স্বপন মজুমদার। ধারে ভারে কাকলি অনেক এগিয়ে থাকলেও অঘটনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

আর পাঁচ নম্বরে থাকবে যাদবপুর লোকসভা। এখানে সিপিএমের অভাবনীয় উত্থান ঘটলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ঘটনা হল এই কেন্দ্রে বিজেপি ও সিপিএমের থেকে অনেকটাই এগিয়ে শুরু করেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ। কিন্তু প্রচার যত এগিয়েছে ততই প্রবল ভাবে ভোট ময়দানে থেকেছেন সিপিএমের সৃজন ভট্টাচার্য। বিজেপির অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় সেই জায়গায় প্রচারে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছেন। সবমিলিয়ে শেষ দফার নির্বাচনে এই পাঁচটি কেন্দ্রে কিন্তু তুল্যমূল্য লড়াই হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আসনগুলি তৃণমূল এবার ধরে রাখতে পারবে কিনা সেটা বোঝা যাবে ৪ জুন ফল প্রকাশের দিনেই।

লোকসভা ভোটের সব খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন  📰

Politics:  Explore the potential surprises in the last phase of West Bengal elections. Will constituencies like Kolkata North, Mathurapur, Basirhat, Barasat, and Jadavpur see unexpected outcomes? Detailed analysis of possible upsets and key candidates.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *