Aajbikel

‘বাম আমলে নিয়োগেও দুর্নীতি’, নয়া দাবি তৃণমূলের! চাপমুক্ত হওয়ার চেষ্টা ‘জোড়া ফুলে’র?

 | 
তৃণমূল

কলকাতা:  অফেন্স ইজ দ্যা বেস্ট ডিফেন্স। এবার এই নীতিতেই বিরোধীদের নিশানা করতে শুরু করল তৃণমূল। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি ভট্টাচার্য গড়িয়ার দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে চিরকুট দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন। তিনি চাকরি পেতে আদৌ পরীক্ষা দিয়েছিলেন কিনা, কোন প্রক্রিয়ায় নিয়োগ হয়েছিল, এই সমস্ত বিষয়ে জানতে চেয়েছেন কুণাল। মোট কথা সেই চাকরি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে তৃণমূল। সেই সঙ্গে তৃণমূলের অভিযোগ বাম আমলে সিপিএমের ঘনিষ্ঠরা চিরকুট দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন। যে বিষয়টি রাজ্য রাজনীতিতে অন্যতম চর্চার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে।


কিন্তু প্রশ্নটা অন্য জায়গায়। ১২ বছর হয়ে গেল রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। বাম আমলে যে সমস্ত অনিয়মের অভিযোগ তারা করছে তা নিয়ে এতদিন তদন্ত করা হয়নি কেন? বেশ কিছু কমিশন গঠন করেছে তৃণমূল সরকার। কিন্তু একটি কমিশনও চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করতে পারেনি। সাধারণ মানুষের দাবি যদি সত্যিই বাম আমলে দুর্নীতি হয়ে থাকে তাহলে তা প্রকাশ্যে আসুক। কিন্তু গত ১২ বছরে সেটা কিন্তু হয়নি। বিরোধীদের অভিযোগ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূল যখন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে তখন সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য পাল্টা অভিযোগ করতে হচ্ছে তাদের। আক্রমণই আত্মরক্ষার শ্রেষ্ঠ উপায়, অর্থাৎ সেই 'অফেন্স ইজ দ্যা বেস্ট ডিফেন্স' নীতিতে ভর করেই তৃণমূল দুর্নীতির দায় থেকে ভারমুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে।


তবে শুধু বাম নয়, বিজেপির একাধিক নেতার নাম জড়িয়েও তৃণমূল এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে। অথচ কয়েক মাস আগেও এ বিষয়ে কিছুই বলেনি তারা। তবে গত কয়েক মাসের মধ্যে এমন কী ঘটল যাতে তৃণমূল এত কিছু তথ্য হাতে পেয়ে গেল? এই পরিস্থিতিতে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ তৃণমূলকে ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। তাঁদের নাম জড়িয়ে দুর্নীতি বা অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত থাকার যে অভিযোগ তৃণমূল করছে তা প্রমাণ করতে হবে, এই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন তাঁরা।


আসলে পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে তৃণমূল ততই বুঝতে পারছে দুর্নীতির অভিযোগে তারা যেভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে তার বড় প্রভাব অবশ্যই পড়বে ভোটবাক্সে। স্বাভাবিকভাবেই সেই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে রাজ্যের শাসক দল। সেই লক্ষ্যে বাম আমলে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে তৃণমূল কিছুটা হাল্কা হতে চাইছে বলেই রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন। কিন্তু এতে কি আদৌ কোনও কাজ হবে? নাকি নিজেদের জালে আরও বেশি করে জড়িয়ে পড়বে তৃণমূল?


সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, যদি তর্কের খাতিরেও ধরে নেওয়া যায় যে বাম আমলেও চাকরি দেওয়া নিয়ে প্রচুর দুর্নীতি হয়েছে, তাতে কী তৃণমূল আমলে ওঠা পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগ রাতারাতি মুছে যাবে? এতে কি তৃণমূলের পাপস্খলন হয়ে যাবে? অন্যজনের দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে কী নিজেদের দুর্নীতি থেকে মুক্ত হওয়া যাবে? এই সমস্ত প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠতে শুরু করেছে। আপাতত এর উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত থাকতে হবে তৃণমূলকে।

Around The Web

Trending News

You May like