Aajbikel

ত্রিপুরায় অর্ধেক আসনেও প্রার্থী দিতে পারেনি তৃণমূল! তবুও তৃণমূল জিতলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন কে?

 | 
তৃণমূল

আগরতলা: এগোতে পারা যাচ্ছে না, আবার পিছিয়েও আসা যাচ্ছে না! এক কথায় ত্রিপুরায় এমনটাই অবস্থা হয়েছে তৃণমূলের। বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী সংখ্যাই সেকথা প্রমাণ করে। গত দেড় বছর ধরে ত্রিপুরা নিয়ে প্রচুর লম্ফঝম্প করেছে তৃণমূল। একমাত্র তারাই নাকি বিজেপিকে হারাতে পারে, এই দাবি বহুবার করেছে তারা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ত্রিপুরা নিয়ে তৃণমূল যতটা গর্জেছে তার ছিটেফোঁটাও যে বর্ষণ হয়নি সেটা স্পষ্ট। যে রাজ্যে তারা ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছিল সেখানে অর্ধেক আসনেও প্রার্থী দিতে পারেনি তৃণমূল। সবচাইতে বড় কথা ত্রিপুরায় তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ কে হতে পারেন সেটা নিয়েও স্পষ্ট ধারণা দিতে পারেনি জোড়াফুল শিবির। তাই নির্বাচনের আগেই বহু পিছিয়ে পড়েছে তারা।  


প্রথমে তৃণমূল ত্রিপুরায় সংগঠনের গুরুদায়িত্ব দেয় কংগ্রেস ছেড়ে আসা সুবল ভৌমিককে। কিন্তু তার কিছুদিন পরেই সুবলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে তৃণমূলের। পরবর্তীকালে তিনি  বিজেপিতে যোগদান করেন। এরপর গত ডিসেম্বরে ত্রিপুরা তৃণমূলের সভাপতি নির্বাচিত হন পীযূষকান্তি বিশ্বাস। ধরে নেওয়া হয় তিনিই ত্রিপুরায় তৃণমূলের প্রধান মুখ হয়ে উঠবেন। তবে কি মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁকেই তুলে ধরা হবে? এই জল্পনাও তখন শুরু হয়।


কিন্তু তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা বলছে সেখানে ঠাঁই হয়নি পীযূষের। পীযূষ একটা সময় ত্রিপুরা কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। কিন্তু পরে তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে দলের। সেই কারণেই তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তবে পীযূষের পুত্রকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। অন্যদিকে পীযূষের পাশাপাশি ত্রিপুরা কংগ্রেসের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক তেজেন দাস, অনন্ত বন্দোপাধ্যায়, কংগ্রেসের প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি পূর্তিনা চাকমা, সমরেন্দ্র ঘোষ- সহ অনেকেই তৃণমূলে যোগদান করেছেন। তাঁদের কেউ কেউ প্রার্থীও হয়েছেন। কিন্তু এই নেতাদের এমন কোনও রাজনৈতিক উচ্চতা নেই যাতে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁদের কাউকে তুলে ধরা যেতে পারে।


ত্রিপুরায় প্রচারের মূল দায়িত্বে রয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব, ত্রিপুরার দায়িত্বপ্রাপ্ত পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়রা। অর্থাৎ বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরার কোনও ভূমিপুত্রকে প্রচারের আলোক বৃত্তে প্রধান মুখ হিসেবে দেখা যাচ্ছে না। অথচ কয়েক মাস আগেও তৃণমূল দাবি করেছে  তারা বিজেপিকে সে রাজ্য থেকে হটাতে একাই যথেষ্ট। কিন্তু নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে এসেছে ততই ময়দান থেকে দূরে সরে যেতে হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে। তাই যেভাবে নির্বাচনের আগেই তৃণমূল কার্যত লড়াই থেকে সরে গিয়েছে তা সকলকেই অবাক করেছে।


গত বছর ত্রিপুরায় চারটি বিধানসভার উপ-নির্বাচনে তৃণমূলের ভোট তিন শতাংশের নীচে নেমে এসেছিল। এবার তাদের ফলাফল আরও খারাপ হবে বলে বিজেপি ও বাম-কংগ্রেস জোট দাবি করছে। সম্ভবত সেই কারণেই তৃণমূলকে ত্রিপুরায় কোনও দলই জোটে নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। তাই পরিস্থিতি বুঝে ত্রিপুরায় তাঁরা ক্ষমতায় আসতে পারবেন এমন কথা তৃণমূল নেতৃত্বকেও এখন বলতে শোনা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় ত্রিপুরা নির্বাচনে তৃণমূল কতটা প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখতে পারে সেটাই শুধু দেখার।

Around The Web

Trending News

You May like