নয়াদিল্লি: বিজেপির পক্ষ নিচ্ছে ফেসবুক। এবার এই ইস্যুতে সরব হল তৃণমূল। অভিযোগ জানিয়ে সরাসরি ফেসবুক প্রধান মার্ক জুকারবার্গকে চিঠি লিখলেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়ান। পাবলিক ডোমেইনে এবিষয়ে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিনি।
সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, ৩১ আগস্ট লেখা ওই চিঠিতে ডেরেক লিখেছেন, ২০১৫ ও ২০১৯ সালের ভারতের সাধারণ নির্বাচনের সময় ফেসবুকের ভূমিকা নিয়ে গুরুতর উদ্বিগ্ন ছিল ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস৷
মাত্র কয়েকমাস পর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। সম্প্রতি বাংলার একের পর এক ফেসবুক পেজ এবং অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়া নিয়ে সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে তৃণমূল সাংসদ লিখেছেন, এই পদক্ষেপ ফেসবুক ও বিজেপির মধ্যে যোগসূত্রের দিকটিকেই ইঙ্গিত করে। এক্ষেত্রে সংস্থার শীর্ষ আধিকারিকদের যুক্ত থাকার অভিযোগও এনেছেন। চিঠিতে তৃণমূল সাংসদের দাবি, দলের পক্ষ থেকে গত বছর জুন মাসে সংসদে ফেসবুকের এই পক্ষপাতিত্বের বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছিল যা বর্তমানে এই পক্ষপাতিত্বের অভিযোগকে অন্যান্য দলের কাছে এবং সামাজিক মাধ্যমেও জোরদার সমর্থন পাচ্ছে৷
এছাড়াও সাম্প্রতি বিবিসি, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, রয়টার্স, টাইম ম্যাগাজিন এবং অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এই সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলিও তাদের অবস্থানকে সত্যি বলেই প্রমাণ করে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিনি। ডেরেকের লেখা চিঠিতে ফেসবুক কর্তাকে এও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, কয়েক বছর আগেই(২০১৫) তিনি জুকারবার্গের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন এবং এমনই কয়েকটি বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন পাশাপাশি এই জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যমের স্বচ্ছতার স্বার্থে ভারতে ফেসবুকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনা এই গুরুতর অভিযোগগুলি তদন্ত করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তাই ভারতীয় নির্বাচনী প্রক্রিয়াতে তাঁর প্ল্যাটফর্মের অখণ্ডতা বজায় রাখাতে যা যা করনীয়, জরুরিভিত্তিতে সেই পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, কিছুদিন আগেই দেশের নির্বাচনী গণতন্ত্রে ভারতের শাসক দলের প্রতি পক্ষপাতীত্বের অভিযোগ এনে ফেসবুক ইন্ডিয়া'র বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে সোচ্চার কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও জুকারবার্গকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যদিও দেশের শাসক দলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদও সম্প্রতি ফেসবুক কর্তাকে একটি চিঠিতে অভিযোগ জানিয়ে লিখেছেন, ভারতে সামাজিক বৈষম্য ও অভ্যন্তরীণ বিভাজন ঘটাতে ফেসবুকের মত প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকি চিঠিতে তিনিও উল্লেখ করেছেন যে, ২০১৯ সালে ভোটের আগে ডানপন্থী দলের বেশকিছু ফেসবুক পেজ থেকে মুছে ফেলা হয়েছে। এই নিয়ে ফেসবুকের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মতে, ফেসবুকের উচিত প্রতি দেশের জন্য পৃথক গাইডলাইন দেওয়া ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করা।