শেখ শাহজাহানকে কি তৃণমূল ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করে দিল?

শেখ শাহজাহানকে কি তৃণমূল ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করে দিল?

নিজস্ব প্রতিনিধি: সন্দেশখালি তথা বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে দীর্ঘদিন ধরে ‘বেতাজ বাদশা’ হিসেবে পরিচিত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠে এসেছে। জোর করে জমি দখলের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গা থেকে তোলাবাজি ও একাধিক পাচার-কাণ্ডে এই তৃণমূল নেতা যুক্ত বলে এলাকায় কান পাতলেই শোনা যায়। আর সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার পরেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা।

 

এই পরিস্থিতিতে শেখ শাহজাহানকে দল থেকে ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া তৃণমূল শুরু করে দিয়েছে কিনা সেই প্রশ্ন উঠে গেল প্রাক্তন সাংসদ হাজি নুরুল ইসলামের বক্তব্যে। বসিরহাট তৃণমূলের সভাপতি হাজি নুরুল তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন যে তাঁরা সন্দেশখালিতে নতুন নেতা খুঁজছেন। শুধু তাই নয়, শেখ শাহজাহানকে যখন দলে নেওয়া হয় তখন তিনি ও বহু দলীয় নেতৃত্ব তার বিরোধিতা করেছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া হাজি নুরুল পরিষ্কার বলে দিয়েছেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাত ধরেই শেখ শাহজাহান তৃণমূলে প্রবেশ করেছিলেন। অর্থাৎ যেভাবে সিপিএম থেকে তৃণমূলে ঢুকেছিলেন সন্দেশখালির ওই তৃণমূল নেতা, তাতে জেলার বহু নেতার আপত্তি ছিল। তাই প্রশ্ন উঠছে দেরিতে হলেও পরিস্থিতি বুঝতে পেরে এবার কি দল থেকে শেখ শাহাজাহানকে ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে চাইছে তৃণমূল?

 

সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে শেখ শাহজাহান যে দলের অস্বস্তি বহু গুনে বাড়িয়ে দিয়েছেন সেটা ভাল করে বুঝতে পারছেন রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব। এর ফল ভোটবাক্সে পড়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। তাই বৃহত্তর স্বার্থে দলের কথা চিন্তা করেই শেখ শাহজাহানকে দল থেকে পুরোপুরি ছেঁটে ফেলা হবে বলে তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর। স্বাভাবিকভাবেই এ খবর সামনে আসতেই উদ্বেগ বেড়েছে শাহজাহানের অনুগামীদের মধ্যে। স্থানীয় মানুষের একাংশে অভিযোগ, শাহজাহানের অনুগামীরা এলাকায় প্রভাব বাড়িয়ে তোলাবাজিতে যুক্ত হয়ে সবার আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। দিনের পর দিন ধরে সেই অত্যাচার সবাইকে সহ্য করতে হয়েছে।

 

কিন্তু এতকিছুর পরেও প্রশ্ন থেকে যায়, তবে কি এসব তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব জানতেন না? সন্দেশখালির ঘটনার পরেই সবাই বিষয়টি জানতে পারলেন? তবে দেরিতে হলেও তৃণমূল শেখ শাহজাহানকে নিয়ে গুরুতর পদক্ষেপ করতে চলেছে বলেই খবর। ইতিমধ্যেই শাহজাহানের হাতে থাকা জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষের পদের দায়িত্ব নিয়েছেন জেলা সধাধিপতি। অর্থাৎ ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া কার্যত শুরু হয়ে গিয়েছে বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করছে। তাই আগামী দিনে শাহজাহানকে পদ থেকে সরানো হয় কিনা সেটাই দেখার।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *