বেলাগাম আক্রমণ করে শুভেন্দুর প্রচার আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে তৃণমূল? বেশি হাইলাইটেড কেন হচ্ছেন শুভেন্দু?

বেলাগাম আক্রমণ করে শুভেন্দুর প্রচার আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে তৃণমূল? বেশি হাইলাইটেড কেন হচ্ছেন শুভেন্দু?

 

নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়ার ঢল নামে। বিজেপি জিতে ক্ষমতায় আসবে, এই ধারণা থেকে ধারাবাহিকভাবে দলবদল প্রক্রিয়া চলেছিল। যদিও নির্বাচনী ফল প্রকাশের পরই বিজেপি সম্পর্কে অনেকের মোহভঙ্গ হয় এবং তৃণমূলে আবার ফিরতে শুরু করেন দলবদলুরা‌। যা রাজ্য রাজনীতিতে অন্যতম চর্চিত বিষয় হয়ে ওঠে। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই দেখা যাচ্ছে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়ে চলেছে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে। বিজেপির পরাজয়ের পর শুভেন্দু বিরোধী দলনেতার পদ পান। এরপর রাজ্য রাজনীতিতে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। বিজেপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে সামিল হয়ে শুভেন্দু তখন থেকেই রাজ্যের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু বিভিন্ন ইস্যুতে তৃণমূল যেভাবে প্রতিনিয়ত শুভেন্দুকে আক্রমণ করে চলেছে, মূলত সেই কারণেই রাজ্য রাজনীতিতে বিরোধী দলনেতা আজ সবচেয়ে বেশি চর্চিত নাম হয়ে উঠেছেন। নেগেটিভ পাবলিসিটি অনেক সময় পজিটিভ হয়ে যায়, এমনটাই বলে থাকেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। নিঃসন্দেহে শুভেন্দুর ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে।

রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বা সদ্য সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদ হারানো দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে তৃণমূলকে সেভাবে কিছু বলতে শোনা যায় না। তাঁদের যতটুকু আক্রমণ না করলেই নয় ঠিক ততটুকুই শোনা যায় তৃণমূল নেতাদের মুখ থেকে। ব্যস ওই পর্যন্তই, এর বেশি আর কিছু নয়। সেখানে শুভেন্দুকে নিয়মিত নিশানা করে চলেছেন  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতৃত্ব। এতে ক্ষতি হওয়া তো দূরের কথা, শুভেন্দুর অনেকটাই রাজনৈতিক লাভ হয়েছে। প্রতিদিন প্রবল ভাবে প্রচারের আলোয় থেকে যাচ্ছেন তিনি। সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেলের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেন্দুর বক্তব্য ও নানা কর্মসূচি উঠে আসছে। আসলে নন্দীগ্রামে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে হারানোর পর থেকেই শুভেন্দুর রাজনৈতিক উচ্চতা রাতারাতি অনেকটাই বেড়ে যায়।

এরপর থেকেই তৃণমূলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠেন তিনি। তাতে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের কাছে শুভেন্দুর গ্রহণযোগ্যতা আরও বেড়ে যায়। এই আবহের মধ্যে নতুন করে জল্পনা ছড়িয়েছে যে সুকান্ত মজুমদারের জায়গায় রাজ্য বিজেপি সভাপতি করা হবে শুভেন্দু অধিকারীকে। যদিও এ বিষয়ে কেউই মুখ খোলেননি। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করে শুভেন্দুকে অত্যধিক গুরুত্ব দিতে গিয়ে তাঁকে আরও বেশি করে প্রচারের আলোয় নিয়ে আসছে তৃণমূল। পরিবর্তে একটু গুরুত্ব কম দিলে শুভেন্দুর প্রচার কম হতো বলেই অনেকের ধারণা। তাই সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট বলছে তৃণমূলের ধারাবাহিক আক্রমণ শুভেন্দুর ক্ষেত্রে পজিটিভ অনুঘটকের কাজ করছে। দিন দিন তাঁর প্রচার আরও বাড়ছে। তাই একুশের নির্বাচনের আগে থেকে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে যে দলবদল শুরু হয়েছিল তার মধ্যে একমাত্র শুভেন্দুই সবচেয়ে বেশি প্রচারের আলোয় থেকে গিয়েছেন। যার জন্য তৃণমূলের অনেকটাই কৃতিত্ব রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − six =