নিজস্ব প্রতিনিধি: বারবার খবরের শিরোনামে উঠে আসছে জোট প্রসঙ্গ। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারাতে বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধভাবে জোট করার প্রয়াস বহুদিন ধরেই চালিয়ে যাচ্ছে। গঠিত হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের মঞ্চ। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে জোট হবে কিনা তা নিয়ে এখনও সুস্পষ্ট উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। তবে সম্প্রতিক প্রেক্ষাপট বলছে জোট হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের শেষ পর্যন্ত জোট হলেও সিপিএমের সঙ্গে তৃণমূলের আসন সমঝোতার কোনও প্রশ্নই নেই।
এই পরিস্থিতিতে রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন যদি পশ্চিমবঙ্গে জোট হয় তাহলে তৃণমূলের ক্ষতি হবে। সেক্ষেত্রে তাদের একলা চললে লাভ বেশি। কিন্তু কেন? কংগ্রেসের সঙ্গে যদি তৃণমূলের জোট হয় তাহলে তাদের ক্ষতি হতে পারে কেন? ঘটনা হল তৃণমূলের এক শ্রেণির নেতাদের বিরুদ্ধে যে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তার দায় কংগ্রেস নিতে চায় না। তাই জোট হলে যেখানে কংগ্রেসের প্রার্থী থাকবে না সেখানকার তৃণমূল বিরোধী ভোট তখন নিশ্চিতভাবে বিজেপির দিকে চলে যাবে। গত ১২ বছর ধরে কংগ্রেসকে যেভাবে রাজ্যে তৃণমূল ক্রমাগত ভেঙেছে, তাতে নীচুতলার কর্মীরা কোনও ভাবেই যে তৃণমূলকে ভোট দেবেন না তা জলের মতো পরিষ্কার।
তাই জোট হলে যে যে আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী থাকবে না সেখানে কংগ্রেস ও বাম কর্মীদের ভোট কোনও ভাবেই তৃণমূলের দিকে যাবে না। মূলত কংগ্রেস ও তৃণমূলের যে বাঁধা হিন্দু ভোট রয়েছে তার প্রায় পুরোটাই তখন বিজেপির দিকে চলে যাবে। আর বাম-কংগ্রেসের প্রতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এখনও যেটুকু সমর্থন রয়েছে সেটাও পুরোপুরি তৃণমূলের দিকে যাবে না। সেই ভোটের একটা বড় অংশ আইএসএফের দিকে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই তৃণমূল যদি একলা লড়ে সেক্ষেত্রে তাদের বিরোধী ভোট বাম-কংগ্রেস জোট ও বিজেপির মধ্যে ভাগ হলে নিশ্চিত ভাবে তৃণমূলের সুবিধা হবে। স্বাভাবিকভাবেই এই বিষয়টি মাথায় রয়েছে তৃণমূলেরও। তাই জোট নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব জল মাপতে চাইছেন। তাই পশ্চিমবঙ্গে শেষ পর্যন্ত জোট হয় কিনা সেটাই এখন দেখার।
