নিজস্ব প্রতিনিধি: ফের তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, আর তাতে ঝরে গেল দুটি তাজা প্রাণ। শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দল কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। রাজ্য জুড়ে এটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনও ঘোষিত হয়নি। কিন্তু তার আগেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রক্ত ঝরল বাংলায়। প্রাণ হারালেন দুই তৃণমূল কর্মী। বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার দিঘাবানায় এই ঘটনা ঘটেছে। যে ঘটনায় প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যের শাসক দল। নিহত দুই তৃণমূল কর্মীর নাম ফইজুল মহম্মদ ওরফে চৈতু এবং হাসু মহম্মদ। পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলের বুথ কমিটির সভা ঘিরে বৃহস্পতিবার দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায় চোপড়ার দিঘাবানা গ্রামে। দু’পক্ষের মধ্যে চলে গুলির লড়াই। ঘটনায় দুপক্ষের পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। তাতে মৃত্যু হয় দুই তৃণমূল কর্মীর। এই ঘটনায় ফের স্পষ্ট হল যে নীচু তলার নেতাকর্মীদের কন্ট্রোল করতে পারছেন না শীর্ষ নেতৃত্ব। তাঁরা নিজেদের মতো করে দল পরিচালনা করছেন। কারণ শীর্ষ নেতৃত্ব বারবার বলেছেন পঞ্চায়েতে প্রার্থী তালিকা উপর তলা থেকে ঠিক করে দেওয়া হবে। তারপরেও বিভিন্ন জেলা থেকে এরকম বিবাদের খবর কেন আসছে? কেন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে।
বহু দিন ধরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করছেন এবার সুষ্ঠুভাবে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। বিরোধীরা প্রত্যেকটি আসনে যাতে মনোনয়নপত্র পেশ করতে পারেন সেটিও নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন অভিষেক। যদিও বিরোধীদের দাবি রাজ্য পুলিশ দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করলে তা শান্তিপূর্ণ হবে না। পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে বহু দিন ধরেই সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এমনকী এ বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থও হয়েছেন তিনি। যদিও তৃণমূলের দাবি সুষ্ঠুভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে রাজ্য পুলিশই যথেষ্ট। এই চাপানউতোরের মধ্যেই বৃহস্পতিবার চোপড়ায় মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এই ঘটনায় যথেষ্ট ভীত হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অতীতে বাংলার মানুষ পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে বহু রক্ত ঝরতে দেখেছে। তাই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই যেভাবে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দু’জন নিহত হয়েছেন, তাতে উদ্বেগ বেড়েছে পুলিশ প্রশাসনের। সেই সঙ্গে অস্বস্তি বেড়েছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বেরও।
আসলে স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্বের রাশ কার হাতে থাকবে সেটা নিয়েই চলছে বিবাদ। বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েতে জেতার পর শাসকদলের নেতা-নেত্রীরা নানা ভাবে অর্থ উপার্জন করার সুযোগ পেয়ে যান। তাই সেই মধুভাণ্ডের লোভে এখন থেকেই শুরু হয়েছে টিকিট পাওয়ার লড়াই। আর চোপড়ার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। প্রকাশ্যে গুলি চলল, তাতে শাসকদলের দুই কর্মী খুন হয়ে গেলেন, আহত হলেন একাধিক ব্যক্তি। তারপরেও পুলিশ হাত গুটিয়ে বসে থাকল! এমন একটা অশান্তি হতে পারে সেই আন্দাজ কি পুলিশ করতে পারেনি? তাহলে কীভাবে সুষ্ঠু ভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্ব সামলাবে পুলিশ? এই প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ। তাই গোটা ঘটনাটি নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব কী পদক্ষেপ করেন এখন সেটাই দেখার।
ঘোষণা
এই প্রতিবেদন আজ বিকেল ডট কমের নিজস্ব। প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে এই প্রতিবেদন আজ বিকেল ডট কমের পাতায় নাও দেখা যেতে পারে৷ ফলে, সব খবরের জন্য অবশ্যই নজর রাখুন https://aajbikel.com/ -এই লিঙ্কে৷
আমাদের ফেসবুক পেজ – https://www.facebook.com/Aajbikal
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল- https://www.youtube.com/@AajBikelNews
নজর রাখতে পারেন